দিল্লির নির্বাচনেও (Delhi Election 2025) মমতা বনাম শুভেন্দু। গতকাল কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দিল্লিতে বিজেপি প্রার্থী দুষ্মন্ত গৌতমের প্রচারে গিয়েছিলেন। এবার ‘দিল্লি চলো’ র ডাক শুভেন্দুর মুখেও। আজ রাজধানীতে দলের হয়ে প্রচারে (Delhi Election 2025) যেতে চলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি। তবে থেমে নেই তৃণমূল সরকার। পরের মাসেই রাজধানীতে যেতে চলেছেন তৃণমূলের লোকসভা সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা। আপের দুই তারকা প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামবেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে রাজনৈতিক লড়াইটা এখন রাজ্যের বাইরে, দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছেছে। আর এবার, তৃণমূলেরও পাল্টা প্রচার শুরু হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারি, যিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, আজ দিল্লির রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে চলেছেন।
তবে শুধু বিজেপি ও তৃণমূলই নয়, রাজধানীর রাজনৈতিক পিচে এবার ব্যাট ধরতে মরিয়া হয়েছে সমাজবাদী পার্টিও। জানা গেছে, অখিলেশ যাদব খুব শীঘ্রই দিল্লিতে এসে আপের সমর্থনে প্রচারে যোগ দিতে পারেন। অর্থাৎ, দিল্লির নির্বাচনী জল্পনায় একেবারে তৃণমূল এবং বিজেপির পাশাপাশি সমাজবাদী পার্টির আলোচনা শুরু হয়েছে।
দিল্লির নির্বাচনে (Delhi Election 2025) এবার অন্যরকম এক রাজনৈতিক দৃশ্যপট দেখা যাচ্ছে। রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী একে অপরকে চ্যালেঞ্জ করছেন। এর আগে, দিল্লিতে বিজেপি এবং কংগ্রেসের শক্তি ছিল সবচেয়ে বড়। বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন এক শক্তিশালী উপস্থিতি সেখানে ধরা পড়ছে। শুভেন্দুর দিল্লি সফরে যাওয়ার ঘোষণার পর, তৃণমূল শিবিরও বুঝে গেছে যে এই নির্বাচনে তাদের ভূমিকা বড় হতে চলেছে।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতা শত্রুঘ্ন সিনহা আগামী মাসের ১-২ তারিখের মধ্যে দিল্লি সফরে যাবেন। শত্রুঘ্ন সিনহার ভূমিকা এখানে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাইরে এক পরিচিত রাজনৈতিক চরিত্র। তার উপস্থিতি দিল্লির ভোটারদের জন্য এক নতুন আকর্ষণ হতে পারে। শত্রুঘ্ন সিনহা বিহারের একজন বিশিষ্ট নেতা। তার পরিচিতি তৃণমূলকে দিল্লির পূর্বাঞ্চলীয় ভোটারদের মধ্যে আরও শক্তিশালী করে তুলতে সাহায্য করতে পারে।
একটা বিষয় স্পষ্ট যে, কংগ্রেসের অবস্থান দিল্লি নির্বাচনে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছে। ইন্ডিয়া জোটের সদস্য হিসেবে কংগ্রেস, সমঝোতার ভিত্তিতে বিভিন্ন রাজ্যে অংশ নিচ্ছিল। শীতকালীন অধিবেশন থেকে কংগ্রেসের প্রতি আঞ্চলিক দলগুলির সমীহ কমে গেছে। তৃণমূল তাদের জায়গা দখল করে নিয়েছে। এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে, যখন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কোনো নির্বাচনী সমঝোতা করতে রাজি হয়নি, যা এখন দিল্লির অলিগলিতে একটি বড় রাজনৈতিক আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইন্ডিয়া জোটে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে কোনো সমঝোতা না থাকাটা কার্যত একটি বড় রাজনৈতিক সংকেত দিচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাবরই কংগ্রেস বিরোধী সুর চড়িয়েছেন। এখন সেই সুর দিল্লিতেও শোনা যাচ্ছে। এটি নিশ্চিত যে, এই মুহূর্তে কংগ্রেস আর তৃণমূলের মধ্যে কোনো ঐক্য বা সমঝোতা নেই। বরং তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে প্রতিযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
দিল্লির রাজনীতি এখন সত্যিই উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিজেপি, তৃণমূল এবং সমাজবাদী পার্টি—এই তিনটি দল একে অপরকে টেক্কা দিতে প্রস্তুত। তৃণমূলের শত্রুঘ্ন সিনহা এবং বিজেপির সুকান্ত মজুমদারের মতো বড় নেতাদের উপস্থিতি এই নির্বাচনে বিশেষ গুরুত্ব রাখছে। অন্যদিকে দিল্লির রাজনৈতিক পিচে কংগ্রেস পিছিয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে, দিল্লির নির্বাচনে মমতা বনাম শুভেন্দু প্রতিদ্বন্দ্বিতার লড়াই শুধু রাজ্য রাজনীতিতেই নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্যও একটি বড় ইঙ্গিত বহন করছে।