পুলওয়ামা: দিল্লির লালকেল্লা মেট্রোর কাছে সেই রক্তাক্ত সন্ধ্যা থেকে মাত্র ৪৮ ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই তদন্তের জাল আরও ছড়িয়ে পড়েছে। ১১ নভেম্বর দুপুর নাগাদ পুলওয়ামা পুলিশ গ্রেফতার করেছে আরেকজন চিকিৎসককে ডা. সাজাদ আহমদ মাল্লা, নজির আহমদ মাল্লার ছেলে, বান্দজু গ্রামের বাসিন্দা। ৩০ বছর বয়সী সাজাদ এমবিবিএস এবং এমডি ডিগ্রিধারী। তাঁর গ্রেফতার এখন চতুর্থটি—এই ‘হোয়াইট কলার’ জঙ্গি নেটওয়ার্কে শিক্ষিত চিকিৎসকদের জড়িত থাকা যেন একটা ভয়াবহ ছবি আঁকছে।
সাজাদ আগে ফরিদাবাদের আল-ফালাহ হাসপাতালে কাজ করতেন, যেখানে প্রধান সন্দেহভাজন ডা. উমর উল নাবি দারও চাকরি করতেন। এই যোগসূত্র পুলিশের কাছে নতুন ক্লু কোনো গোপন মিটিং, বিস্ফোরক সরবরাহ, না রিক্রুটমেন্ট? জিজ্ঞাসাবাদে সাজাদ বলছেন, ‘জানি না কিছু’। কিন্তু তাঁর ফোনের কল রেকর্ড আর মেসেজগুলো অন্য গল্প বলছে।এই নেটওয়ার্ক যেন একটা অন্ধকার জাল কেন্দ্রে ফরিদাবাদের আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটি। সেখান থেকে শুরু হয়েছে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা।
বাইকপ্রেমীদের জন্য সুখবর! পাঁচ বছর পর নতুন অবতারে ফিরছে ইতালির এই ব্র্যান্ড
প্রধান সন্দেহভাজন ডা. উমর, পুলওয়ামার কয়ল গ্রামের ছেলে, যিনি গাড়িটি চালিয়ে সেলফ-ডিটোনেট করেছিলেন বলে ধারণা। তাঁর মা শাহীমা বানো এবং দুই ভাই আশিক ও জহুরকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজই তাঁদের ডিএনএ স্যাম্পল নেওয়া হয়েছে—বিস্ফোরণস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া হাতের অংশের সঙ্গে মিলছে কি না। উমরের বাবা গোলাম নাবি ভাটকেও লাজুরা গ্রাম থেকে আটক করা হয়েছে।
আর ফরিদাবাদে? ৩০ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে ডা. মুজাম্মিল শাকিল (পুলওয়ামার, আল-ফালাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষক), ডা. আদিল আহমদ রাথার (ফরিদাবাদে চাকরি), ডা. শাহিন সাইদ এবং ডা. মুজাম্মিল গানাই। তাদের বাড়ি থেকে ৩৬০ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, আইইডি তৈরির সরঞ্জাম, ডেটোনেটর উদ্ধার হয়েছে। আর আজ সেক্টর ৫৬-এ ক্রাইম ব্রাঞ্চ ৬০ কেজি বিস্ফোরক পেয়েছে, দুই সন্দেহভাজন গ্রেফতার।
নেটওয়ার্কের তালিকা যেন লম্বা হচ্ছে। সন্দেহের তালে রয়েছেন ডা. আদনান আলি, ডা. আব্দুর রহমান, ইশতিয়াক আহমদ, ডা. আহমদ মহিউদ্দিন সৈয়দ। এদের মধ্যে কেউ লক্ষ্ণৌতে, কেউ মিরাটে, কেউ রামপুরে। এনআইএ-র স্পেশাল টিম (যারা আজই মামলা হাতে নিয়েছে) বলছে, এটা একটা ‘মেডিকেল টেরর নেটওয়ার্ক’—রিক্রুটমেন্ট, লজিস্টিকস, ফান্ডিং সবকিছু চিকিৎসকদের মাধ্যমে।
জৈশ-ই-মোহাম্মদের লিঙ্ক সন্দেহ করা হচ্ছে—পুলওয়ামায় প্রো-জৈশ পোস্টার দেখা গেছে। সাজাদের ফোনে পাওয়া গেছে লাহোরের একটা নম্বরে কল, যা দুবাইয়ের আইপি-তে লিঙ্কড। ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। গাড়িটির মালিকানা চেইনও সন্দেহজনক—ওখলা থেকে আম্বালা, তারপর পুলওয়ামা। রয়্যাল কার জোনের মালিক মণিশ প্যাটেলকে আটক করা হয়েছে।


