দিল্লির লালকেল্লার কাছে গত সোমবার ঘটেছে একটি প্রাণঘাতী গাড়ি বিস্ফোরণ, যেখানে ১৩ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের পরপরই দেশের নিরাপত্তা ও তদন্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন সংস্থা সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করে। ঘটনাস্থলে পৌঁছান ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (FSL) বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের প্রধান কাজ ছিল বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ নির্ণয় করা এবং প্রাথমিক নমুনা সংগ্রহ করা।
ঘটনাস্থলে গিয়ে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা বিস্ফোরণের চিহ্ন এবং গাড়ির ভেতর থেকে বিস্ফোরক পদার্থের নমুনা সংগ্রহ শুরু করেন। প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিস্ফোরণ স্থল থেকে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের নমুনা উদ্ধার করা হয়েছে। এটি একটি প্রচলিত বিস্ফোরক পদার্থ, যা সাধারণত কৃষিতে সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু সঠিক রাসায়নিক মিশ্রণ ও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এটি অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক বিস্ফোরকে পরিণত করা যায়।
তদন্তে আরও তথ্য সামনে আসে, যখন ফরিদাবাদে এক অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনী একটি বিস্ফোরক জব্দ করে। ওই বিস্ফোরকে ফরেন্সিকভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এতে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের সঙ্গে মিশ্রিত ছিল ট্রায়াসিটোন ট্রাইপারক্সাইড (TATP) নামের একটি উচ্চ-প্রবণ রাসায়নিক পদার্থ। এই পদার্থ অত্যন্ত সংবেদনশীল, এবং সামান্য আঘাত, তাপ বা ঘর্ষণেই বিস্ফোরিত হতে পারে।
পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, আই২০ গাড়িতে ব্যবহৃত বিস্ফোরকেও একই রাসায়নিক মিশ্রণ পাওয়া গেছে। ফরেন্সিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বিস্ফোরণের ধরন ও রাসায়নিক পদার্থের প্রকৃতি স্পষ্ট করে যে এটি পরিকল্পিত হামলা। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরকটি গাড়ির ভেতরে সুচারুভাবে লুকানো হয়েছিল, যাতে সর্বাধিক ধ্বংস ঘটানো যায়।


