তিন দশক সমুদ্র গবেষণায় মত্ত ছিল এই যুদ্ধ জাহাজটি! আড়ালে কি ‘প্ল্যান’ ভারতের?

সমুদ্রে গবেষণা চালাতে বিশেষ ‘নজরদারি জাহাজ’ বানাল কলকাতার গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স। সাগরধ্বনি’ নামের জাহাজটি নিঃশব্দে গত ৩০ বছর ধরে আরব সাগরে গভীরতা, তাপমাত্রা সংক্রান্ত নানান বিষয়ে অনুষন্ধান চালায় ভারতীয় নৌসেনার বিশেষ জাহাজটি। এবার সেই জাহাজকেই আধুনিক প্রযুক্তিতে উন্নীত করল কলকাতার গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স। উদ্দেশ্য গবেষণার আড়ালে সমুদ্রে নজরদারি না শত্রুর ওপর খবরদারি?  প্রতিরক্ষা দফতর থেকে এই বিষয়ে ‘গোপনীয়তা’ বজায় রাখলেও জাহাজের অভিসন্ধি কি?  তা নিয়ে সন্দিহান কূটনৈতিক মহল। 

Advertisements

১৯৯৪ সালে ওই সংস্থাতেই নির্মিত হয়েছিল ‘সাগরধ্বনি’। পাশাপাশি, নৌবাহিনীর জন্য একই কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ‘নির্দেশক’ নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি সমীক্ষক জাহাজও তৈরি করছে গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স। এবার জাহাজের নাম হবে আইএনএস নির্দেশক। ওই জাহাজ নির্মান সংস্থার দাবি, আধিকারিকদের দাবি, গত ৩০ বছরের পুরনো জাহাজের প্রযুক্তি বদলের পাশাপাশি নতুন পর্যবেক্ষক জাহাজে আধুনিক প্রযুক্তি স্থাপনের এমন কাজ একসঙ্গে চলা বিরল। শব্দতরঙ্গের পরিমাপ মেনে আরও নিঁখুত পর্যবেক্ষণ চালানোর পাশাপাশি জাহাজের রাডার সিস্টেমকেও আরও উন্নত করা হয়েছে। জলের ওপর ‘অটোমেটেড’ ডুবযানকেও আরও উন্নত করা হয়েছে। জাহাজে বসানো হয়েছে ‘স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম’। যার মাধ্যমে সমুদ্রের যে কোনও জায়গার অবস্থান সহজেই নির্ধারণ করা সহজ হবে।

গত কয়েক বছর ধরেই ভারত মহাসাগর ও আরব সাগরে নৌ গতিবিধি বাড়িয়েছে চিন। পাকিস্তানের গওদর, শ্রীলঙ্কার হাম্বানতোতা ও মায়ানমারে নিজেদের নৌঘাঁটি তৈরি করেছে বেজিং। যা ভারতের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলেই মনে করে কূটনৈতিক মহল। এই বছরের শুরুতে শ্রীলঙ্কার বন্দরে চিনের সমুদ্র গবেষণার একটি জাহাজ নোঙর করে। তখন সেই ঘটনাটিকে ঘিরে যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। চিনের জাহাজটির ওপর নজর দারি চালাতে পাল্টা কোস্টগার্ডের জাহাজ পাঠায় নয়াদিল্লি। আসলে গবেষণামূলক জাহাজ হলেও ভারতের ওপর নজরদারি করাই চিনের ওই জাহাজটির মূল উদ্দেশ্য ছিল বলেই মনে করেন কূটনৈতিক মহল।

সুতরাং মনে করা হচ্ছে, সমু্দ্র গবেষণাকে সামনে রেখেই  এই জাহাজের মাধ্যমে  আরব সাগরে কৌশলগত স্বার্থে নজরদারি বাড়াতে চলেছে নয়াদিল্লি। গতবছর শেষে আরব-ইয়েমেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ব্যস্ততম সমুদ্র-রুট লোহিত সাগর ও হর্মুজ প্রনালীতে হুথি ও হামাস জঙ্গিদের কার্যকলাপে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। তখন আরব সাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের ‘সামরিক সক্ষমতা’ বাড়াতে সক্রিয় হবে ভারত, এমনটাই জানানো হয়েছিল নৌসেনার তরফে।

Advertisements