মন্থা ঘূর্ণিঝড়ে রেলের সতর্কতা জারি, ঘোষণা ট্রেনের নতুন সময়সূচি

IRCTC Website Down

ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’-র প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব ভারতের উপকূলে তৈরি হয়েছে তীব্র উদ্বেগের পরিস্থিতি। অন্ধ্র উপকূলে মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেনের সময়সূচি বদল করল রেল কর্তৃপক্ষ (Indian Railways)। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে হাওড়া ও শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ার নির্ধারিত সময়ে বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়েছে।

Advertisements

রেল সূত্রে খবর, ১৮০৪৫ শালিমার-চাড়লাপল্লি ইস্ট কোস্ট এক্সপ্রেস-এর নির্ধারিত ছাড়ার সময় ছিল ২৮ অক্টোবর সকাল ১১টা ১৫ মিনিট। পরিবর্তিত সূচি অনুযায়ী, এখন ট্রেনটি ছাড়বে রাত ৯টা ১৫ মিনিটে। ২২৮২৫ শালিমার–MGR চেন্নাই এক্সপ্রেস ছাড়ার কথা ছিল ২৮ অক্টোবর রাত ১২টা ১০ মিনিটে, সেটি এখন ছাড়বে রাত ১০টা ১০ মিনিটে।

   

তদ্রূপ, ২২৮৮৭ হাওড়া–SMVT বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেস ট্রেনটিরও নতুন সময় নির্ধারিত হয়েছে। আগে ছাড়ার কথা ছিল রাত ১২টা ৩০ মিনিটে, বর্তমানে সেটি ছাড়বে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে। অন্যদিকে, হাওড়া–MGR চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস (১২৪৮১) ২৮ অক্টোবর দুপুর ৩টা ১০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও, সেটি এখন ২৯ অক্টোবর ভোর ১টা ১০ মিনিটে যাত্রা শুরু করবে।

তালিকায় রয়েছে শালিমার–বিশাখাপত্তনম এক্সপ্রেস-ও। নির্ধারিত ২৮ তারিখের পরিবর্তে এখন তা ছাড়বে ২৯ অক্টোবর ভোর ৪টা ১৫ মিনিটে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে আরও কয়েকটি ট্রেনের সময়সূচিতেও সাময়িক পরিবর্তন আনা হতে পারে।

পূর্ব রেলের এক মুখপাত্র জানান, “মন্থা ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ ও তীব্রতা বিচার করে যাত্রীদের নিরাপত্তাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য। প্রয়োজনে আরও ট্রেন পরিষেবা বন্ধ বা পুনঃনির্ধারণ করা হবে।”

আবহাওয়া দপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে ‘মন্থা’ অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়বে এবং এর পরোক্ষ প্রভাব পড়বে দক্ষিণবঙ্গেও। নতুনভাবে গঠিত পশ্চিমী ঝঞ্ঝার সঙ্গে মিলিত হয়ে এটি বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া আনতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে বৃষ্টি, যা অন্তত শুক্রবার পর্যন্ত চলতে পারে।

Advertisements

আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, শনিবার থেকে বৃষ্টি কমলেও পুজোর কয়েক দিন ভিজে আবহাওয়াতেই কাটবে। জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতিতে বাধা পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।

উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও ২৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি ও ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বইবে বলে হাওয়া অফিস জানিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মন্থা ঘূর্ণিঝড় এবং পশ্চিমী ঝঞ্ঝার যুগল প্রভাবের ফলে আর্দ্রতার পরিমাণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় বাতাসে অস্বস্তি তৈরি হবে। কৃষিক্ষেত্র ও পরিবহন ব্যবস্থাতেও এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা।

রেলওয়ে যাত্রীদের উদ্দেশে ঘোষণা করেছে যাত্রার আগে অনলাইনে বা রেলওয়ের অফিসিয়াল অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেনের সর্বশেষ আপডেট দেখে নিন। অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।