ঘূর্ণিঝড় মন্থার দাপটে মৃত মহিলা, আহত ২

অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে প্রবল বেগে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ (Cyclone Montha)। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (IMD) জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে ঘূর্ণিঝড়ের স্থলভাগে প্রবেশ বা ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া, যা মাচিলিপটনম ও কাকিনাডার মাঝামাঝি উপকূলে চলছে। প্রবল বৃষ্টিপাত, ঝোড়ো হাওয়া এবং উত্তাল সমুদ্রের কারণে রাজ্যের একাধিক উপকূলবর্তী জেলায় দেখা দিয়েছে ব্যাপক দুর্যোগ।

Advertisements

প্রাথমিকভাবে যে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গিয়েছে, তাতে এখন পর্যন্ত ১ জনের মৃত্যু ও ২ জন আহত হয়েছেন। কোনাসীমা জেলার এক মহিলার বাড়ির উপর গাছ পড়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। আলাদা দুটি ঘটনায় গাছ পড়ে আহত হয়েছে এক কিশোর ও এক অটোচালক। আহতদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।

   

IMD জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির সর্বোচ্চ বেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার, দমকা হাওয়া পৌঁছাচ্ছে ১১০ কিমি পর্যন্ত। এই প্রবল ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিতে ইস্ট গোদাবরী, কোনাসীমা, কাকিনাডা ও কৃষ্ণা জেলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বহু জায়গায় গাছ পড়ে রাস্তা বন্ধ, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, নৌ ও সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটেছে।

কাকিনাডা ও কৃষ্ণপট্টনম বন্দরে সব ধরনের বন্দর কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমুদ্রের ঢেউ অত্যন্ত উত্তাল হয়ে উঠেছে, তাই উপকূলবর্তী এলাকায় জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট।

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সাংসদ ও বিধায়কদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছে তাৎক্ষণিক ত্রাণ ও উদ্ধার কার্য শুরু করার নির্দেশ দেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ৩৯টি বিধানসভা এলাকাকে সম্ভাব্য বিপদাপন্ন জোন হিসেবে চিহ্নিত করে দুর্যোগ মোকাবিলা কেন্দ্র গঠন করা হয়েছে।

Advertisements

রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF ও SDRF)-এর একাধিক দল মোতায়েন করা হয়েছে উপকূলবর্তী অঞ্চল জুড়ে। হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে, পাশাপাশি ত্রাণ শিবিরে খাদ্য, জল ও চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বিপজ্জনক এলাকাগুলিতে স্কুল, কলেজ, সরকারি অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে আরও কয়েক ঘণ্টা লাগবে। এরপর ঘূর্ণিঝড়টি ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় তেলেঙ্গানা, ওড়িশা ও ছত্তিশগড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাগরিকদের ঘরে থাকার ও অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপকূলবর্তী গ্রাম ও শহরাঞ্চলে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকরা সক্রিয় রয়েছেন।