ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision – SIR) শুরু করার আগে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (NRC) চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন করা জরুরি বলে জানাল CPIM এনআরসি ইস্যুতে সিপিআইএমের অবস্থান স্পষ্ট করে জানায়, এনআরসি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয়। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি প্রক্রিয়ার সমর্থন করেছে সিপিআইএম অসম রাজ্য কমিটি।
সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সুপ্রকাশ তালুকদার এক বিবৃতিতে বলেন, অসমে নাগরিকত্ব একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল বিষয় এবং চূড়ান্ত ও হালনাগাদ NRC ছাড়া ভোটার তালিকার যে কোনও সংশোধন প্রকৃত ভোটারদের ব্যাপকভাবে বাদ পড়ার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। বিহারের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সেখানে নির্বাচন কমিশন প্রায় ৮ কোটি ভোটারের খসড়া তালিকা থেকে প্রায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ দিয়েছিল। তিনি সতর্ক করে দেন যে, অসমে সংখ্যালঘু, অভিবাসী শ্রমিক, দলিত, পিছিয়ে পড়া শ্রেণি এবং নারীরা একই ধরনের বৈষম্যের শিকার হতে পারেন।
তিনি ২০১৯ সালের ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশের পরও NRC হালনাগাদ না হওয়াকে সমালোচনা করে বলেন, এটি সম্পন্ন না হলে অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করার নির্ভরযোগ্য ভিত্তি তৈরি হবে না বরং বিজেপি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) এনে বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে, যা সাম্প্রদায়িক ও সংবিধানবিরোধী। সুপ্রকাশ তালুকদার বলেন, NRC চূড়ান্ত না করেই SIR শুরু করলে নিখুঁত ভোটার তালিকা তৈরি অসম্ভব হবে।
তবে মন্ত্রিসভার বয়স্কদের জন্য আধার নাম নিবন্ধন অক্টোবর থেকে স্থগিত করার সিদ্ধান্তেরও বিরোধিতা করেছে এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যাকে “ভিত্তিহীন” বলে আখ্যা দিয়েছে সিপিআইএম।
আধার নাম নিবন্ধন স্থগিত করার বিষয়ে সিপিআইএম জানায়, আধার নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়, এবং এটি ভোটাধিকার সঙ্গেও সংযুক্ত নয়—এ বিষয়ে UIDAI, কেন্দ্র ও সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য যে আধার নাম নিবন্ধন বন্ধ রাখলে বিদেশিরা নাগরিকত্ব পাবে না, তা “ভ্রান্ত” বলেও দাবি করে দলটি। তারা আরও জানায়, মুখ্যমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী অসমে ১০৩ শতাংশ আধার কভারেজ হয়েছে—এটি ভুল; ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই UIDAI-এর তথ্য অনুযায়ী কভারেজ প্রায় ৯৫ শতাংশ।
তাদের মতে, অসমে এখনো ১০-১২ লাখ প্রাপ্তবয়স্কের আধার কার্ড নেই, যাদের অধিকাংশই দরিদ্র, অশিক্ষিত এবং সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষ। তাদের আবেদন করার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা ‘চরম অবিচার’। তাই তারা দাবি জানিয়েছে, রাজ্য সরকার যেন অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে।