যেকোন ভারতীয় রান্নাতে তেলের ভূমিকা অপরিসীম। তেল ছাড়া রান্না করার কথা প্রায় কেউই ভাবতে পারেননা। কিন্তু পুজোর আগে এবার এই নিত্যপ্রয়োনীয় সামগ্রীর দাম বাড়তে চলেছে। এই সময় সাধারণ মানুষের পকেটে টান পড়তে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। সম্প্রতি শুক্রবার কেন্দ্র ভোজ্য তেলের (Cooking Oil Price) আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয়েছে, ক্রুড এবং রিফাইন দু’ধরনের ভোজ্য তেলের জন্য আমদানি শুল্ক ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির জন্য ক্রুড ভোজ্য তেলের উপর আমদানি শুল্ক ৫.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করেছে ২৭.৫ শতাংশ। অন্যদিকে রিফাইন ভোজ্য তেলের আমদানি শুল্ক ১৩.৭৫ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫.৭৫ শতাংশে।
এর ফলে স্থানীয় বাজারে পাম তেল, সয়াবিন তেল এবং সানফ্লাওয়ার তেলের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভোজ্য তেলের দিক থেকে ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ আমদানিকারী দেশ। ভারতের মোট ভোজ্য তেলের চাহিদার ৭০ শতাংশ আমদানি করা হয় বিভিন্ন দেশ থেকে। পাম তেলের অধিকাংশই আমদানি করা হয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ড থেকে।
অন্যদিকে সয়াবিন এবং সানফ্লাওয়ার তেল আসে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে। ভোজ্য তেলের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এক সুনভিন গ্রুপের সিইও সন্দীপ বাজোরিয়া এনিয়ে বলেছেন, অনেকদিন পর সরকার গ্রাহক এবং কৃষকদের স্বার্থের ব্যালেন্স করার চেষ্টা করেছে। এই সিদ্ধান্তের জেরে দেশের কৃষকরা ভালো দাম পাবেন বলেও মনে করেন তিনি।
এ বিষয়ে দিল্লির এক ডিলার জানিয়েছেন, “ভারতে ব্যবহৃত ভোজ্য তেলের অর্ধেকই হল পাম তেল। এই সিদ্ধান্তের জেরে পরের সপ্তাহ থেকে পাম তেল দাম নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।” কিন্তু কেন হঠাৎ আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি হল ভোজ্য তেলের? সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় কৃষকদের দাম পেতে সহায়তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
চলতি বছর মহারাষ্ট্রের নির্বাচনকে মাথায় রেখে ভোজ্য তেলের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অগস্ট মাসের শেষ থেকে এ নিয়ে আলোচনা করছিল সরকার। তবে এভাবে ভোজ্য তেলের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির জন্য বাইরে থেকে এই তেলের আমদানি কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেটা হলে ভারতের বাজারে ভোজ্য তেলের দাম যে ভালোই বৃদ্ধি পাবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
