মহাকুম্ভে পদদলিতের জন্য মোদী, আদিত্যনাথের ‘দায়িত্ব নেওয়া উচিত’, দাবি কংগ্রেসের

মহারাষ্ট্র কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোল বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে মহাকুম্ভে পদদলিতের ঘটনার জন্য নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করতে…

মহারাষ্ট্র কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটোল বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে মহাকুম্ভে পদদলিতের ঘটনার জন্য নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে। তাঁর মতে কুম্ভ মেলায় সারা দেশে শুধু মোদী এবং আদিত্যনাথের ছবি আর ব্যানার দেখা যাচ্ছে। যা এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের প্রকৃত উদ্দেশ্য থেকে মনোযোগ সরিয়ে দেয়।

বুধবার, মহাকুম্ভে ‘মৌনি অমাবস্যা’ উপলক্ষে পবিত্র স্নানের জন্য জড়ো হওয়া লাখ লাখ তীর্থযাত্রীর মধ্যে পদদলিতের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৬০ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনাটি ঘটে যখন ভক্তরা স্নান করতে নামার আগে  হুড়োহুড়ি করে। 

   

মহাকুম্ভ মেলা ১৩ ই জানুয়ারি শুরু হয়েছিল এবং ২৬ শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। পাটোলের অভিযোগ, কুম্ভকে একটি বড় ‘ইভেন্ট’ হিসেবে পরিণত করা হয়েছে। যেখানে প্রধানত মোদী ও আদিত্যনাথের পোস্টার আর ব্যানার শোভা পাচ্ছে। তিনি দাবি করেছেন “যেখানে কুম্ভের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় আচার, সেখানে শুধু ইভেন্টের মতো প্রচার চলছে, আর সেই কারণে মানুষের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।”

এছাড়াও পাটোলের মন্তব্য করেছেন যে পদদলিতের ঘটনার প্রকৃত মৃতের সংখ্যা সরকারী হিসাবের চেয়েও অনেক বেশি। তিনি বলেন, “এই ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও মোদী এবং আদিত্যনাথ নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে চলেছেন। কিন্তু তাদের অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। কুম্ভ মেলাকে তারা একটি রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত করেছেন, যা ধর্মীয় উদ্দেশ্য থেকে অনেক দূরে সরে গেছে।”

মহাকুম্ভের দুর্ঘটনার একদিন পরে উত্তরপ্রদেশ সরকার মহাকুম্ভে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভ নগরী এখন একটি যানবাহন নিষিদ্ধ অঞ্চল হয়ে যাবে, যতক্ষণ না ভিড় সম্পূর্ণভাবে কমে না যায়।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট অংশুমান মিশ্র জানিয়েছেন, “এই অঞ্চলে জরুরি পরিষেবাগুলি যেমন পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা যানবাহনগুলো প্রবেশ করতে পারবে, কারণ এগুলি মহাকুম্ভের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য অপরিহার্য।”

এদিকে উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসন পদদলিতের ঘটনার পর থেকে সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করার চেষ্টা করছে। তারা নিশ্চিত করতে চাচ্ছে যে ভবিষ্যতে এমন কোনও অঘটন না ঘটে। তাছাড়া তীর্থযাত্রীদের জন্য নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যও বজায় রাখা হবে।

এই ঘটনাটি রাজনৈতিক এবং সামাজিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। যেখানে কংগ্রেসের দাবি মহাকুম্ভের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক প্রচারের প্রভাবই এ ধরনের অঘটনের মূল কারণ।