ত্রিপুরায় চাঁদাবাজির জেরে রক্তাক্ত দুর্গাপূজা, চলছে সেনা টহল

রক্তাক্ত দুর্গাপূজা-শারদোৎসব। বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় (Tripura) রবিবার গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে মৃত্যুর সংবাদ এসেছে উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলা থেকে। সোমবার চলছে আধা সেনা অসম রাইফেলসের টহল।…

Communal clashes during Durga Puja in BJP-ruled Tripura

রক্তাক্ত দুর্গাপূজা-শারদোৎসব। বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় (Tripura) রবিবার গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে মৃত্যুর সংবাদ এসেছে উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলা থেকে। সোমবার চলছে আধা সেনা অসম রাইফেলসের টহল। রাতভর জ্বলতে থাকা এলাকায় ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। উত্তপ্ত কদমতলা নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনিক উচ্চ পর্যায়ে বৈঠকের পর গোটা এলাকা নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে নেওয়া হয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমে কেউ যাতে বিভ্রান্তিকর বা উস্কানিমূলক লেখা বা ভিডিও পোস্ট না করে তার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার। আইন লঙ্ঘন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, কদমতলা এলাকার মুসলিম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের একটি পরিবার চিকিৎসার জন্য পড়শি রাজ্য অসমের শিলচরে যাচ্ছিল।

   

তদন্তে উঠে এসেছে, অসমে যাওয়ার সময় দুর্গাপূজার এক সংগঠক তাদের গাড়ি থামিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদাবাজি নিয়ে শুরু হয় বচসা। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার পর স্থানীয় মুসলিমদের একটি দল মন্দিরের সামনে বিক্ষোভ করে। শুরু হয় সংঘর্ষ। কিছু দুর্বৃত্ত কদমতলার পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়। দোকান ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয় যা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে।

রবিবার রাতে কদমতলার সমস্ত দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস) নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ 163 জারি করে প্রশাসন। জোর করে দুর্গাপূজার চাঁদা সংগ্রহের জন্য দুটি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষ হয় বলে জানা গেছে। ঘটনার জেরে পড়শি রাজ্য অসমের করিমগঞ্জের সঙ্গে আন্ত:রাজ্য সড়কপথ আপাতত বন্ধ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সড়ক পুনরায় চালু হবে।

রাজ্যের বিরোধীদল সিপিআইএমের অভিযোগ, বিজেপি শাসনে নিরাপত্তা নেই। সিপিআইএম জানিয়েছে ,’গন্ডাছড়া, রানিরবাজারের পর এবার জ্বলছে কদমতলা! কোথায় সরকার, কোথায় প্রশাসন। শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় জনগন এগিয়ে আসুন।’ বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা রাজ্যে দুর্গাপূজা ঘিরে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সরব ছিলেন।

দেখা গেছে, চাঁদাবাজি রুখতে ব্যর্থ প্রশাসন। বিরোধী দলনেতা ও সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, চাঁদাবাজিতে জড়িত বিজেপির একাধিক নেতা। তবে বিজেপি অভিযোগ উড়িয়ে দেয়। দুর্গাপূজা ঘিরে সংঘর্ষের জেরে রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী ও কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ।

তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ,”কদমতলা বাজারে যখন উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং পুলিশের গুলিতে দুজন নিহত হয় তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আগরতলা শহরে রাত পর্যন্ত দুর্গা পূজার প্যান্ডেল উদ্বোধনে ব্যস্ত থাকেন।সকলের কাছে আবেদন সৌভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রাখুন।”