আহমেদাবাদ বিপর্যয়ে পাইলটদের পাশে কমার্শিয়াল পাইলট অ্যাসোসিয়েশন

গত মাসে আহমেদাবাদে (Ahmedabad) এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই-১৭১-এর মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ক্রু সদস্যরা তাদের প্রশিক্ষণ এবং দায়িত্বের সঙ্গে কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করেছিলেন বলে দাবি করেছে ইন্ডিয়ান…

Ahmedabad air india accedent

গত মাসে আহমেদাবাদে (Ahmedabad) এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই-১৭১-এর মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ক্রু সদস্যরা তাদের প্রশিক্ষণ এবং দায়িত্বের সঙ্গে কঠিন পরিস্থিতিতে কাজ করেছিলেন বলে দাবি করেছে ইন্ডিয়ান কমার্শিয়াল পাইলটস অ্যাসোসিয়েশন (আইসিপিএ)। রবিবার, প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আইসিপিএ জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় ২৬০ জনের প্রাণহানি ঘটলেও পাইলটদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার ইঙ্গিতপূর্ণ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

তারা জোর দিয়ে বলেছে, বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (এএআইবি)-এর চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত এই ধরনের জল্পনা অগ্রহণযোগ্য। এই ঘটনা ভারতের বিমান চলাচলের ইতিহাসে একটি গুরুতর ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, এবং তদন্তের মাধ্যমে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।

   

দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট

এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই-১৭১ আহমেদাবাদ (Ahmedabad)থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরোর প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, উড্ডয়নের পরপরই বিমানটির দুটি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়, যা দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তদন্তে মানুষের ভুল, সিস্টেমের ত্রুটি, বা বিমানের নকশা-সংক্রান্ত সমস্যা—এই তিনটি দিক বিশেষভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনা বিমান চলাচলের নিরাপত্তা এবং পাইলটদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

আইসিপিএ-র অবস্থান

ইন্ডিয়ান কমার্শিয়াল পাইলটস অ্যাসোসিয়েশন তাদের বিবৃতিতে বলেছে, এআই-১৭১-এর ক্রু সদস্যরা তাদের প্রশিক্ষণ অনুযায়ী অত্যন্ত দায়িত্বশীলভাবে কাজ করেছেন। তারা জরুরি পরিস্থিতিতে প্রোটোকল মেনে বিমানটি নিয়ন্ত্রণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলেন।

আইসিপিএ-র এক মুখপাত্র বলেন,(Ahmedabad) “পাইলটরা তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার মতো অভিযোগ সম্পূর্ণ অমূলক এবং অসম্মানজনক।” তারা আরও জানিয়েছে, তদন্তের চূড়ান্ত ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত এই ধরনের জল্পনা থেকে বিরত থাকা উচিত।

তদন্তের অগ্রগতি

বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (এএআইবি) এই ঘটনার তদন্তে নিযুক্ত রয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্টে ইঞ্জিন বন্ধ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হলেও, এর পেছনের সঠিক কারণ এখনও নির্ধারিত হয়নি। তদন্তকারীরা বিমানের ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (ব্ল্যাক বক্স) এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার বিশ্লেষণ করছে।

এছাড়া, বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের রেকর্ড এবং পাইলটদের প্রশিক্ষণের বিবরণও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তদন্তে এয়ার ইন্ডিয়ার অপারেশনাল প্রোটোকল এবং বিমান প্রস্তুতকারকের নকশা-সংক্রান্ত বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এএআইবি (Ahmedabad)জানিয়েছে, চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশের জন্য আরও কিছু সময় প্রয়োজন।

Advertisements

সামাজিক ও শিল্পের প্রতিক্রিয়া

এই দুর্ঘটনা ভারতের বিমান চলাচল শিল্পে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে এক্স-এ, অনেকে পাইলটদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, আবার কেউ কেউ বিমান সংস্থা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন।

বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ঘটনা ভবিষ্যতে নিরাপত্তা প্রোটোকল আরও কঠোর করার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে। এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, (Ahmedabad)তারা তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছে এবং দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য ক্ষতিপূরণ এবং সহায়তার ঘোষণা করেছে।

দ্রুত আয়ের সুযোগ! ৪০ দিনের মধ্যে দ্রুত বেড়ে ওঠা ৫টি সবজি

বিমান নিরাপত্তার প্রশ্ন

এই দুর্ঘটনা ভারতের বিমান চলাচলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। অতীতে ২০২০ সালে কোঝিকোড়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা এবং ২০১০ সালে ম্যাঙ্গালোরে অনুরূপ ঘটনা বিমান চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, (Ahmedabad)ইঞ্জিন ব্যর্থতার মতো ঘটনা রোধে আরও উন্নত প্রযুক্তি এবং কঠোর রক্ষণাবেক্ষণ প্রোটোকল প্রয়োজন। এছাড়া, পাইলটদের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

এআই-১৭১ দুর্ঘটনা ভারতের বিমান চলাচলের ইতিহাসে একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়। আইসিপিএ-র বিবৃতি পাইলটদের দায়িত্বশীলতার উপর আলোকপাত করলেও, চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্টই এই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ প্রকাশ করবে।

এই ঘটনা ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিচ্ছে। দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের সাফল্যের মতো, এই দুর্ঘটনার তদন্তও জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাইলটদের প্রতি সমর্থন এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার সত্য উদঘাটনই এখন সবচেয়ে জরুরি।