নয়াদিল্লি: দীর্ঘ চার বছরের টানাপোড়েনের পর ভারত ও চিনের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় দেখা দিয়েছে। সোমবার চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বৈঠকে ইতিবাচক ফল সামনে এসেছে। এই আলোচনার পর চিন ভারতের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ সার, দুর্লভ খনিজ (rare earth minerals) এবং টানেল বোরিং মেশিন (TBM) এর সরবরাহ পুনরায় চালু করতে সম্মত হয়েছে। বেইজিং প্রায় এক বছর ধরে এই সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল, যা ভারতের কৃষি ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল।
জানা গিয়েছে, গত মাসে জয়শঙ্করের চিন সফরের সময়ই তিনি ইউরিয়া, এনপিকে এবং ডিএপি সার, দুর্লভ খনিজ এবং টিবিএম সরবরাহের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। চিনের এই সম্মতি একটি বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ ভারত তার মোট সারের চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশের জন্য চিনের ওপর নির্ভরশীল।
সীমান্ত আলোচনার দায়িত্বে ডোভাল
জয়শঙ্কর-ওয়াং বৈঠকে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এই স্পর্শকাতর বিষয়টি আজ (মঙ্গলবার) বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল তাঁর চিনা প্রতিপক্ষের কাছে উত্থাপন করবেন। আলোচনার মূল লক্ষ্য হল ৩,৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর মোতায়েন করা উভয় দেশের বিপুল সংখ্যক সেনা প্রত্যাহার করে উত্তেজনা প্রশমিত করা। যদিও লাদাখে কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে, তবুও উভয় পক্ষের বিপুল সংখ্যক সেনা এখনো সীমান্তে অবস্থান করছে, যা উত্তেজনা কমিয়ে আনতে জরুরি।
বৈঠকে ট্রাম্পের নীতি ও ঐক্যের বার্তা china india relations normalize
এই বৈঠকের একটি অপ্রত্যাশিত দিক ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্তমান নীতির প্রভাব। উভয় পক্ষই একমত হয়েছে যে, ওয়াশিংটনের বর্তমান নীতি ভারত এবং চিন উভয় দেশকেই লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে। এই অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত কূটনৈতিক আলোচনা ও পারস্পরিক বোঝাপড়া বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন উভয় বিদেশমন্ত্রী। জয়শঙ্কর তাঁর চিনা প্রতিপক্ষকে স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তাইওয়ান প্রশ্নে ভারতের অবস্থানে কোনও পরিবর্তন হয়নি; অন্যান্য দেশের মতোই ভারতও তাইওয়ানের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
ওয়াং ই’র এই সফর এবং এর ইতিবাচক ফল দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ককে নতুন করে সাজাতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই সফরের অংশ হিসেবে চিনের বিদেশমন্ত্রী সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
Bharat: After a four-year stalemate, India and China are moving toward normal relations. Beijing has agreed to resume the supply of essential fertilizers, rare-earth minerals, and tunnel boring machines, a major diplomatic win for India. This development follows talks between External Affairs Minister S. Jaishankar and his Chinese counterpart.