স্বাধীনতা দিবসে সন্দেহজনক বিস্ফোরণে বেঙ্গালুরুতে মৃত্যু শিশুর

বেঙ্গালুরুর আদুগোদি এলাকার উইলসন গার্ডেনের চিন্নাইয়ানপালয়ায় (Bangalore Blast)একটি সন্দেহজনক বিস্ফোরণে এক ১০ বছরের বালকের মৃত্যু হয়েছে এবং নয়জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনাটি শুক্রবার সকাল ৮:২০…

Bangalore Blast

বেঙ্গালুরুর আদুগোদি এলাকার উইলসন গার্ডেনের চিন্নাইয়ানপালয়ায় (Bangalore Blast)একটি সন্দেহজনক বিস্ফোরণে এক ১০ বছরের বালকের মৃত্যু হয়েছে এবং নয়জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনাটি শুক্রবার সকাল ৮:২০ নাগাদ ঘটেছে।

পুলিশ ও দমকল বিভাগের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে এটি একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে পারে, যদিও তদন্ত এখনও চলছে। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বেশ কয়েকটি ঘর ধ্বংস হয়েছে এবং আশপাশের বাড়ির জানালা ও দরজার কাচ ভেঙে গেছে।

   

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণটি চিন্নাইয়ানপালয়ার একটি ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় একটি ছোট বাড়িতে ঘটে। এই এলাকায় বাড়িগুলি একে অপরের সঙ্গে সংলগ্ন, যার ফলে বিস্ফোরণের তীব্রতায় তিন থেকে চারটি অস্থায়ী বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং ছয় থেকে সাতটি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিস্ফোরণের খবর পাওয়ার পর পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সকাল ৮:২৩ নাগাদ ফোন আসে, এবং দমকল বিভাগকে ৮:২৫ নাগাদ সতর্ক করা হয়। দুটি দমকল গাড়ি তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের কাজ শুরু করে।

আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে নিকটবর্তী সঞ্জয় গান্ধী হাসপাতাল এবং জয়নগর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং জানিয়েছেন, “যে বাড়িতে বিস্ফোরণটি ঘটেছে, সেটি একটি তিন সদস্যের পরিবার ভাড়া নিয়েছিল। পরিবারের পুরুষ সদস্য, যিনি একজন শ্রমিক, সকালে কাজে চলে যান। বাড়িতে থাকা মা ও শিশু আহত হয়েছেন। তবে মৃত বালকটি পাশের বাড়ির বাসিন্দা ছিল।”

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এবং দমকল বিভাগের ধারণা, এটি একটি সিলিন্ডার গ্যাস লিকের কারণে বিস্ফোরণ হতে পারে। তবে, বিস্ফোরণের সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য ফরেনসিক দল তদন্ত শুরু করেছে। বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল, সন্ত্রাসবিরোধী দল এবং রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। পুলিশ কমিশনার সিং বলেন, “এটি ঠিক কী কারণে ঘটেছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের কাজ চলছে, এবং তদন্তের পর বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।”

Advertisements

কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধরামাইয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৫ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, “এই দুঃখজনক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে রাজ্য সরকার রয়েছে।” তিনি তদন্তে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

আদুগোদি একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, যেখানে বেশিরভাগ বাসিন্দা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির। বিস্ফোরণের ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ এলাকাটি ঘিরে ফেলেছে এবং নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। দমকল বিভাগ ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দ এতটাই তীব্র ছিল যে আশপাশের বাড়িগুলো কেঁপে উঠেছিল।

এই ঘটনা বেঙ্গালুরুর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এর আগেও আদুগোদিতে রাসায়নিক পদার্থের কারণে ছোটখাটো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল, যা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। ২০২০ সালে একটি পরিত্যক্ত রাসায়নিক পাত্রের বিস্ফোরণে একজন র‍্যাগ পিকার গুরুতর আহত হয়েছিলেন। এই ঘটনাগুলি নিরাপদ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারে আরও কঠোর নিয়মের প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে।

পাহাড়ি বর্ষণে বাড়ছে চা পাতার উৎপাদন, স্বস্তি চা বাগান মালিকদের

এই দুঃখজনক ঘটনায় একটি প্রাণহানি এবং বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার ঘটনা বেঙ্গালুরুর বাসিন্দাদের মধ্যে শোকের ছায়া ফেলেছে। পুলিশ ও ফরেনসিক দলের তদন্তে বিস্ফোরণের সঠিক কারণ প্রকাশ পেলে এই ঘটনার পেছনের সত্য উদঘাটিত হবে। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের উপর এখন দায়িত্ব রয়েছে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।