গাজিয়াবাদের বসুন্ধরা এলাকায় কেএফসির দোকানে (UttarPradesh) ঘটে একটি উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনা, যা এখন দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। হিন্দু রক্ষা দলের এক দল যুবক গেরুয়া পতাকা হাতে নিয়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে দিতে কেএফসির দোকানে হামলা চালায়। তারা দাবী করে, শ্রাবণ মাসে শিবভক্তদের কানওয়ার যাত্রার জন্য মাংস বিক্রি বন্ধ রাখা উচিত। এই হামলায় তারা দোকানের কিছু ভাংচুরও করে। এরপর শনিবার, দোকান কর্তৃপক্ষ একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় যে, তারা এখন থেকে শুধু নিরামিষ খাবারই বিক্রি করবে এবং সমস্ত মাংসপদ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে(UttarPradesh)
এই হামলার ঘটনাটি দ্রুতই আলোচনায় আসে, এবং কেএফসি কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি সামলাতে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি। তবে, ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের যোগী রাজ্যের অধীনে ঘটলেও, এর প্রভাব দেশজুড়ে অনুভূত হতে শুরু করেছে। বিশেষত, তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনায় সরব হয়েছে এবং দেশের অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যেও এই ধরনের হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।(UttarPradesh)
হিন্দু রক্ষা দলের দাবি ও হামলার কারণ
হিন্দু রক্ষা দল তাদের দাবিতে স্পষ্ট জানায় যে,(UttarPradesh) শ্রাবণ মাসে শিবভক্তদের পবিত্র কানওয়ার যাত্রা শুরু হওয়ায় মাংস বিক্রি বন্ধ করা উচিত। দলটির দাবি, মাংস খাওয়া শাস্ত্রবিরুদ্ধ এবং এই মাসে ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষার্থে মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। গাজিয়াবাদের কেএফসির দোকানে হামলা চালিয়ে তারা তাদের এই দাবির প্রতি সমর্থন জানায়। দলটির সদস্যরা দোকানে প্রবেশ করে ভাংচুর করে এবং দোকানটির একাধিক বস্তু নষ্ট করে।(UttarPradesh)
কেএফসি কর্তৃপক্ষ, এই চাপের মুখে, জানিয়ে দেয় যে, তারা সব ধরনের মাংস বিক্রি বন্ধ করে শুধুমাত্র নিরামিষ খাবার বিক্রি শুরু করেছে। তবে, ঘটনার পর কেএফসির কোনো প্রকাশ্য বিবৃতি না দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। কিছু রাজনৈতিক দল, বিশেষত তৃণমূল কংগ্রেস, এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে যে, এটি মানুষের খাদ্যাভাসের উপর বিজেপির আক্রমণ।(UttarPradesh)
পুলিশের ভূমিকা ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় পুলিশ কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। যদিও পুলিশ ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে, তবে এটি খুবই সীমিত। পুলিশ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে গাজিয়াবাদের পুলিশ কর্মকর্তা অভিষেক শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন যে, বিস্তারিত তদন্তের পরই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু, পুলিশ প্রশাসনের এই দৃষ্টিভঙ্গি অনেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বিশেষ করে যখন দেখা যাচ্ছে, একটি রাজনৈতিক সংগঠন ধর্মীয় অনুভূতির নামে এমন একটি ভয়াবহ হামলা চালাতে পারে এবং পুলিশের তরফে কোনো শক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এই হামলার ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস কঠোর ভাষায় প্রতিবাদ করেছে। তাদের মতে, বিজেপি সরকার মানুষের খাদ্যাভ্যাসের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। তৃণমূলের দাবি, কেএফসি বা অন্য কোনো খাবারের দোকানে এই ধরনের হামলা এবং মাংস বিক্রি বন্ধ করার ঘটনা ভারতীয় গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর। তারা সতর্ক করেছে যে, এই ধরনের ঘটনা শুধু উত্তরপ্রদেশে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং দেশের অন্যান্য বিজেপি শাসিত রাজ্যেও এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ভবিষ্যতে কি হতে পারে?
এই ঘটনার পর, কেএফসি কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষত, তারা চিন্তা করছে যে, শ্রাবণ মাসে কিংবা অন্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দেশে বিভিন্ন স্থানীয় দোকান বা রেস্তোরাঁগুলিতেও হামলা হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোও এই ঘটনা নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে এবং মনে করছে যে, এটি একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক সমস্যায় পরিণত হতে পারে।
তবে, অনেক নাগরিক এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ধর্মীয় অনুভূতির কারণে খাদ্যাভাসের উপর আক্রমণ গ্রহণযোগ্য নয়। প্রত্যেকের স্বাধীনভাবে খাবার খাওয়ার অধিকার থাকা উচিত এবং সেই অধিকার কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় দলকে বাধা দেওয়ার অধিকার দেওয়া উচিত নয়।