মাওবাদী অস্ত্র তৈরির কারখানা ধ্বংস, উদ্ধার বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার

Maoist Leader Ipil Murmu Killed

ছত্তিসগড়ের সুকমা জেলার ঘন অরণ্যে মাওবাদীদের (Maoist) একটি অস্ত্র তৈরির কারখানা ধ্বংস করল নিরাপত্তা বাহিনী। জেলা রিজার্ভ গার্ড (DRG)-এর একটি বিশেষ অভিযান চালিয়ে এই সাফল্য আসে। অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ১৭টি আগ্নেয়াস্ত্র সহ অস্ত্র তৈরির নানা উপকরণ। মঙ্গলবার পুলিশ সূত্রে এই খবর জানানো হয়েছে।

Advertisements

DRG-এর একটি দল স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে গোমগুডা বনাঞ্চলে প্রবেশ করে। সেখানে একটি অস্থায়ী কারখানায় মাওবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র তৈরি করছিল বলে জানা গেছে। অভিযান চলাকালীন এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ব্যারেল গ্রেনেড রকেট লঞ্চার, ছয়টি ব্যারেল গ্রেনেড লঞ্চার (BGL), ছয়টি 12-বোর রাইফেল, তিনটি সিঙ্গল-শট রাইফেল, এবং একটি দেশি পিস্তল।

   

এছাড়াও, দুটি 12-বোর রাইফেলের ব্যারেল, দুটি সিঙ্গল-শট রাইফেল ব্যারেল, একটি বড় হ্যান্ড-ড্রিল মেশিন, ১৭টি বেঞ্চ ভাইস, তিনটি BGL ব্যারেল, দুটি বডি কাভার, বৈদ্যুতিক তার, লোহা পাইপ এবং আরও বহু সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে যা দিয়ে অস্ত্র তৈরি করা হতো।

সুকমার পুলিশ সুপার কিরণ চাভান জানান, “নিরাপত্তা বাহিনীর লক্ষ্য শুধুমাত্র মাওবাদীদের ঘাঁটি ধ্বংস করা নয়, বরং এই অঞ্চলে স্থায়ী শান্তি ও উন্নয়নের পরিবেশ তৈরি করা। যারা অস্ত্র ছেড়ে সমাজে ফিরে আসতে চান, তাঁদের জন্য সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্পে মর্যাদাপূর্ণ জীবনের সুযোগ রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “মাওবাদী কার্যকলাপ নির্মূল করতে ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ-এর মধ্যে রাজ্যজুড়ে ব্যাপক অভিযান চলছে। সম্প্রতি বহু মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে এবং সরকারের শান্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে।”

Advertisements

গোমগুডা বনাঞ্চল বহুদিন ধরেই মাওবাদীদের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। পুলিশের মতে, উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও সরঞ্জামের পরিমাণ দেখে বোঝা যাচ্ছে, এখানে বড় আকারে অস্ত্র উৎপাদন চলছিল। তবে অভিযানকালে কোনও মাওবাদীকে আটক করা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, অভিযানের খবর পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

ছত্তীসগড়ের দক্ষিণাংশ বিশেষ করে সুকমা, দান্তেওয়াড়া ও বিজাপুর জেলা এখনও মাওবাদী প্রভাবিত এলাকা হিসেবে পরিচিত। তবে প্রশাসনের দাবি, নিরাপত্তা বাহিনীর নিরবচ্ছিন্ন অভিযান এবং সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির ফলে পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছে। গত এক বছরে প্রায় ৫০০-রও বেশি মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছে এবং ডজনখানেক অস্ত্র কারখানা ধ্বংস হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এখন গ্রামাঞ্চলে আগের মতো ভয় নেই। উন্নয়ন প্রকল্প ও রাস্তা নির্মাণের ফলে জনজীবনে পরিবর্তন আসছে। প্রশাসনের মতে, এই অভিযানের মাধ্যমে মাওবাদীদের অস্ত্র জোগানের একটি বড় উৎস ধ্বংস হয়েছে, যা তাদের শক্তি ভাঙতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

সুকমার জঙ্গলে এই সাফল্য প্রমাণ করছে, রাজ্য সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী মাওবাদী সন্ত্রাস নির্মূলের লক্ষ্যে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।