HomeBharatছত্তিশগড়ে ফের ২৮ নকশাল ক্যাডারের আত্মসমর্পণ

ছত্তিশগড়ে ফের ২৮ নকশাল ক্যাডারের আত্মসমর্পণ

- Advertisement -

নারায়ণপুর, ২৭ নভেম্বর ২০২৫: ছত্তিশগড়ের নকশাল-প্রধান অঞ্চলে শান্তির এক নতুন আলো জ্বলে উঠেছে। নারায়ণপুর জেলায় ২৮ জন সক্রিয় নকশালী, যাদের মধ্যে ১৯ জন নারী ক্যাডার, পুলিশের সামনে আত্মসমর্পণ করেছে। এদের মধ্যে ২২ জনের মাথায় মিলিয়ে ছিল ৮৯ লক্ষ টাকার পুরস্কার। বিশেষ করে, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)-এর কুটুল এরিয়া কমিটির ডিভিশনাল কমিটি সদস্য এবং শীর্ষ নকশাল নেতা দীনেশ পান্ডে তাঁর অস্ত্র নামিয়ে মূলধারায় ফিরে এসেছেন।

এই ঘটনা নকশাল আতঙ্কের অবসানের দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা রাজ্য সরকারের পুনর্বাসন নীতি এবং উন্নয়নমূলক উদ্যোগের সাফল্যের প্রমাণ বহন করে। ২৫ নভেম্বর সকালে নারায়ণপুরের পুলিশ অফিসে এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত সাক্ষী হয়েছে। দীনেশ পান্ডে সেল্ফ লোডিং রাইফেল (এসএলআর) জমা দিয়েছেন, যখন লখমু উসেন্দি একটি আইএনএসএএস রাইফেল এবং সুকমাত্রি একটি .৩০৩ রাইফেল সমর্পণ করেছেন।

   

এদের মধ্যে ছিলেন অভুঝমাড় ডিভিশনের সদস্য, পিপলস লিবারেশন গেরিলা আর্মির মিলিটারি সদস্য, টেকনিক্যাল টিম এবং মিলিটারি প্ল্যাটুনের লোকেরা। চারজন হার্ডকোর সদস্য—পান্ডি ধ্রুব আলিয়াস দীনেশ (৩৩), ডুলে মান্ডাভি আলিয়াস মুন্নি (২৬), ছত্তিশ পয়াম (১৮) এবং পদ্নি ওয়াম (৩০)—এর মধ্যে তিনজন ইস্ট বাস্তর ডিভিশনের মিলিটারি কোম্পানি নম্বর ৬-এর সদস্য ছিলেন।নারায়ণপুরের জেলা কালেক্টর প্রতিষ্ঠা মামগাইন, যিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বলেছেন, “২৮ জন মাওবাদী মূলধারায় যোগ দিয়েছে।

আমরা তাদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু করব। পুলিশের ক্যাম্প এবং নকশালীদের আত্মসমর্পণের ফলে এমন এলাকায় পৌঁছাতে পারছি, যা আগে অসম্ভব ছিল।” কালেক্টর আরও জানিয়েছেন, ‘নিয়দ নেল্লানার যোজনা’-র অধীনে ৬৭টি গ্রামে সরকারি সুবিধা এবং মৌলিক সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এই যোজনা নকশালীদের মনে আস্থা জাগিয়েছে, যার ফলে তারা হিংসা ত্যাগ করে ফিরে আসছে।

আত্মসমর্পণকারী নকশালীরা বলেছেন, রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক উদ্যোগ এবং পুনর্বাসন নীতি তাদের মুগ্ধ করেছে। ‘পুনা মার্ঘম’ (আবার পথে ফেরা) উদ্যোগের অধীনে তারা বিশ্বাস করেছে যে, মূলধারায় ফিরে নতুন জীবন শুরু করা সম্ভব। প্রত্যেক আত্মসমর্পণকারীকে তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার টাকার সাহায্য দেওয়া হয়েছে। পুলিশের মতে, এই নকশালীরা দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে সহিংসতার জীবন যাপন করছিলেন।

কিন্তু সরকারি স্কিম যেমন রাস্তা, বিদ্যুৎ, জলসরবরাহ এবং শিক্ষা-স্বাস্থ্য সুবিধা দেখে তারা বুঝেছে, শান্তিপূর্ণ জীবনই সত্যিকারের মুক্তি।দীনেশ পান্ডে, যিনি দীর্ঘকাল ধরে নকশাল সংগঠনের একজন কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন, বলেছেন, “আমরা ক্লান্ত। হিংসা কোনো সমাধান নয়। সরকারের প্রচেষ্টা দেখে আমরা ফিরে এসেছি।” এই কথা শুনে স্থানীয়রা আশাবাদী হয়ে উঠেছে।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular