ছত্তীসগড়ের নারায়ণপুর জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে (Chhattisgarh Encounter) নিহত হয়েছে দুই শীর্ষ মাওবাদী নেতা। নিহতদের নাম রাজু দাদা ওরফে কট্টা রামচন্দ্র রেড্ডি (৬৩) এবং কোসা দাদা ওরফে কাদারি সত্যনারায়ণ রেড্ডি (৬৭)। উভয়েই নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং তাঁদের মাথার উপর মোট ৮০ লক্ষ টাকার পুরস্কার ঘোষিত ছিল।
অভুজমাড়ের ঘন জঙ্গলে সোমবার সকাল থেকে শুরু হয় গুলির লড়াই। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালাতে গিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী মাওবাদীদের মুখোমুখি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গুলি চলার পর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই শীর্ষ নেতার। পরে উদ্ধার করা হয় তাঁদের দেহ, একে-৪৭ রাইফেল, ইনসাস রাইফেল, গ্রেনেড লঞ্চার, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এবং মাওবাদী প্রচারসামগ্রী।
দু’জনই দীর্ঘ তিন দশক ধরে দণ্ডকারণ্য বিশেষ জোনাল কমিটিতে সক্রিয় ছিলেন। বস্তার অঞ্চলে তাঁদের নেতৃত্বে বহু হামলায় অসংখ্য নিরাপত্তাকর্মী ও সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। রাজু দাদা ‘গুদসা উসেন্দি’, ‘বিজয়’ ও ‘বিকল্প’ নামেও পরিচিত ছিলেন। কোসা দাদার পরিচিত নাম ছিল ‘গোপন্না’ ও ‘বুচান্না’।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “ছত্তীসগড়ে নিরাপত্তা বাহিনী আবারও ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করেছে। দুই কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্যের মৃত্যু মাওবাদী সংগঠনের জন্য বড় ধাক্কা। আগামী বছরের মার্চের মধ্যেই মাওবাদকে সম্পূর্ণ উৎখাত করা হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেব সাই বলেন, “এটি কেবল মাওবাদ বিরোধী লড়াইয়ের বড় পদক্ষেপ নয়, শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের দিকেও একটি অগ্রগতি। নিরাপত্তা বাহিনীর সাহস ও আত্মত্যাগের ফলেই আজ রাজ্য দ্রুত এগোচ্ছে শান্তির পথে।”
বছরের শুরু থেকে ছত্তীসগড়ে মোট ২৪৯ জন মাওবাদী সংঘর্ষে নিহত হয়েছে, যার মধ্যে বস্তার অঞ্চলে নিহত হয়েছে ২২০ জন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যেই মাওবাদী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির বহু নেতা নিহত হয়েছে, বর্তমানে বেঁচে আছে মাত্র নয়জন, যার মধ্যে কুখ্যাত নেতা মাদবি হিদমা অন্যতম।
বস্তারের পুলিশ আইজি সুন্দররাজ পি বলেন, “অভিযানগুলির ফলে মাওবাদী সংগঠনের ভাঙন স্পষ্ট। আমরা মাওবাদীদের অনুরোধ করছি, তারা যেন হিংসার পথ ছেড়ে আত্মসমর্পণ করে এবং পুনর্বাসন নীতির সুবিধা গ্রহণ করে।” এই সাফল্যকে বিশেষজ্ঞরা ছত্তীসগড় সরকারের মাওবাদ দমনের যাত্রাপথে একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে দেখছেন।