ছত্তীসগঢ়ের (Chattishgarh) বস্তার অঞ্চলের অবুঝমাঢ়ে আবার মাওবাদীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যা চলেছে প্রায় সাত ঘণ্টা। ১২ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে যে, সংঘর্ষটি তখনও অব্যাহত ছিল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই সাংবাদিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে অবুঝমাঢ়ে মাওবাদীদের সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং জানিয়েছিলেন, এই এনকাউন্টারে নিহত হয়েছেন সাত জন মাওবাদী।
নদী সাঁতরে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা বাংলাদেশি যুবকের, আটক সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে যে, গোয়েন্দাদের মাধ্যমে খবর পাওয়া গিয়েছিল যে, মাওবাদীরা অবুঝমাঢ়ের জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছেন। এর পরেই বৃহস্পতিবার ভোরে এই এলাকা ঘিরে অভিযান শুরু করে পুলিশ বাহিনী। অভিযানে অংশগ্রহণকারী বাহিনীগুলির মধ্যে ছিল জেলা রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি), বিশেষ কার্যকলাপ দল (এসটিএফ), এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী (সিআরপিএফ)। অভিযান শুরু হয় ভোর ৩টা থেকে এবং তা চলতে থাকে দীর্ঘ সাত ঘণ্টা ধরে।
এনকাউন্টারের সময় পুলিশ বাহিনী এবং মাওবাদীদের মধ্যে প্রবল গোলাগুলি চলেছে, যার ফলে মাওবাদীদের বেশ কিছু সদস্য নিহত হয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, অভিযানটি সাফল্যের সঙ্গে পরিচালিত হয়েছে এবং তারা মাওবাদীদের বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। মাওবাদী সংগঠনগুলি এই অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং সরকার বিরোধী আন্দোলনের জন্য পরিচিত। পুলিশের এই অভিযান তাদের শক্তিশালী অবস্থানকে ভাঙতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিক্রম মিশ্রির দাবি ভারত শেখ হাসিনার মন্তব্য সমর্থন করে না, অবস্থান পাল্টাল মোদী সরকার?
এছাড়া, পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে যে, তাদের বাহিনী নিরাপদে অবস্থান করছে এবং অভিযানের সময় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পুলিশ তাদের উপস্থিতি বাড়ানোর পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। যদিও মাওবাদীরা অত্যন্ত স্বশস্ত্র এবং প্রশিক্ষিত, পুলিশও এই ধরনের পরিস্থিতিতে তাদের মোকাবিলা করার জন্য অভিজ্ঞ এবং প্রস্তুত।
এনকাউন্টার চলাকালীন বেশ কিছু মাওবাদী নিজেদের এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে, তবে পুলিশ তাদের ধরতে সক্ষম হয়েছে। অবুঝমাঢ়ে এই ধরনের সংঘর্ষ নতুন নয়। এখানকার জঙ্গলে বহু বছর ধরেই মাওবাদীরা তাদের কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে। এই এলাকায় মাওবাদীদের অস্তিত্ব দীর্ঘ সময় ধরে থাকলেও, পুলিশ বিভিন্ন সময়ে অভিযানের মাধ্যমে তাদের মোকাবিলা করেছে এবং অনেক জঙ্গি নেতা নিহত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই এই এনকাউন্টার সম্পর্কে সাংবাদিকদের জানান যে, পুলিশ বাহিনী খুবই দক্ষভাবে অভিযান পরিচালনা করছে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি এই অভিযানকে মাওবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে বড় ধরনের পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেন।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, ছত্তীসগঢ়ের বস্তার এবং অন্যান্য মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় এই ধরনের সংঘর্ষ খুবই সাধারণ ঘটনা। পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে একাধিকবার মাওবাদী দমনে অভিযান পরিচালিত হয়েছে, তবে এই সংঘর্ষগুলি দেশের নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বস্তার অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে সরকার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আগেও একাধিক বার সতর্কতা প্রকাশ করেছে এবং সেখানে চলমান অভিযানগুলির মধ্যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
Bangladesh: প্রবল হুমকিতে মাথানত নয়, চট্টগ্রাম আদালতে পিটিশন ফাইল করলেন চিন্ময় দাসের আইনজীবী
এই এনকাউন্টার এবং পুলিশ বাহিনীর পদক্ষেপের ফলে ছত্তীসগঢ়ের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি হতে পারে, তবে মাওবাদী সংগঠনগুলি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, এবং তাদের মোকাবিলায় সরকার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধারাবাহিকভাবে উদ্যোগী হতে হবে।