গণবিক্ষোভে অগ্নিগর্ভ মণিপুর, বিজেপিকে একলা ফেলে সরছে শরিকরা

Manipur Violence: ক্রমশ সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার দিকে যাচ্ছে মণিপুরের বিজেপি জোট সরকার। এনডিএ ছাড়ছে শরিকরা। রাজ্যের অন্যতম জনগোষ্ঠী মেইতেই,যারা বিজেপির ঘনিষ্ঠ ছিল তাদেরই ক্ষোভে পুড়ছে পদ্ম…

Manipur Violence: ক্রমশ সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার দিকে যাচ্ছে মণিপুরের বিজেপি জোট সরকার। এনডিএ ছাড়ছে শরিকরা। রাজ্যের অন্যতম জনগোষ্ঠী মেইতেই,যারা বিজেপির ঘনিষ্ঠ ছিল তাদেরই ক্ষোভে পুড়ছে পদ্ম পতাকা। প্রাণ বাঁচাতে বিজেপি কর্মকর্তারা গণহারে পদত্যাগ শুরু করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে না সরালে এই জনগোষ্ঠীর বিধায়করাও পদত্যাগের হুমকি দিয়েছেন। মেইতেই ও কুকি দুই প্রধান জনগোষ্ঠীর জাতি সংঘর্ষের রেশ ধরে মণিপুরে রাজনৈতিক প্রবল সংকট।

মণিপুরে রাজনৈতিক সংকট:

   

BJP
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং বিজেপির শীর্ষ নেতা। তবে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ক্রমশ তলানিতে। বিক্ষোভকারীদের রোষ থেকে বাঁচতে খোদ সরকারপক্ষের বিজেপি বিধায়করা পদত্যাগের হুমকি দিচ্ছেন।

NPP
রাজ্যে এনডিএ সরকারের শরিক এনপিপি। এই দলটির নেতা কনরাড সাংমা মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী। তিনিও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে চিঠি লিখে মণিপুরের সরকার থেকে নিজের দলের সমর্থন প্রত্যাহার করেছেন।

NPF
সরকারের আরও এক শরিক এনপিএফ। এটি নাগা সংগঠন। এই দলটিও সমর্থন প্রত্যাহার করছে। এনপিএফ দলটির শীর্ষ নেতা তথা নাগাল্যান্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নেইফিও রিও।

JDU
মণিপুরে এনডিএ শরিক জনতা দল ইউনাইটেড। তাদের শীর্ষ নেতা নীতীশ কুমার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। মণিপুরের জেডিইউ বিধায়করা দলত্যাগ করতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে।

নির্দল বিধায়করাও সরকার ছাড়তে পারেন বলেই গুঞ্জন।

বিরোধী কংগ্রেসের অবস্থান
মণিপুরে বিরোধী দল কংগ্রেস।প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইবোবি সিংয়ের হুঁশিয়ারি, যদি প্রধানমন্ত্রী মোদী মণিপুর নিয়ে নীরব থাকেন তবে বিধানসভা থেকে কংগ্রেস বিধায়করাও পদত্যাগ করবেন। তিনি রাজ্যে সরকার ভেঙে দ্রুত নির্বাচনের দাবি করেন। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর দাবি, মণিপুরের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে সে রাজ্যে যান প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেসের কটাক্ষ, মণিপুরে শান্তি ফিরছে দাবি করেছিলেন মোদী।

NE News জানাচ্ছে, দফায় দফায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী ঢুকছে মণিপুরে। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিশেষ বৈঠক করেছেন। তার নির্দেশে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন মণিপুর সফরে। রাজ্যে এসেছেন সিআরপিএফের মহানির্দেশক।

গত ১১ নভেম্বর সিআরপিএফ দাবি করেছিল তাদের গুলিতে জিরিবাম জেলায় ১১ জন কুকি জঙ্গি নিহত হয়েছে। তবে কুকি সংগঠন দাবি করে এটি ভুয়ো সংঘর্ষ। নিহতরা গ্রামরক্ষী। তাদের অভিযোগ, জিরিবামের মেইতেই জাতির পুলিশ কর্তার পরিকল্পনায় ভুয়ো সংঘর্ষ ঘটানো হয়। ওই দিনই জিরিবাম থেকে শিশু-মহিলাসহ মোট ৬ জন অপহৃত হন। এরা সবাই মেইতেই গোষ্ঠীর। তাদের মৃতদেহ মিলেছে। ফলে মেইতেইরাও ক্ষুব্ধ। দুই প্রধান জনগোষ্ঠীর ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে মণিপুর। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং আত্মগোপনে আছেন বলে জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।

জিরিবাম জেলা বাঙালি অধ্যুষিত। সেখানকার বাঙালিরা পড়শি রাজ্য অসমের বাংলাভাষী জেলা কাছাড় জেলায় ঢুকছেন। জিরিবামের অবস্থা এমনই যে এখানকার বিজেপি নেতারা পালিয়ে নিকটবর্তী অসমের কাছাড় জেলায় শেল্টার নিয়েছেন। রবিবার বাংলাভাষী অ়ধ্যুষিত জিরিবাম জেলায় পুলিশের সামনেই বিজেপি দফতরে আগুন ধরান উত্তেজিত জনতা। হামলাকারীরা পুড়িয়ে দেন মোদী, শাহ ও বীরেন সিংয়ের ছবি। এই বিক্ষোভ চলাকালীন গুলিতে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু সংবাদে ফের উত্তেজনা চড়ল। জিরিবামসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ ছড়াচ্ছে।