দিল্লির রেড ফোর্টের সামনে সোমবার এক ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে, আর ১২ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় পুরো দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৎপর অবস্থানে এই মুহূর্তে। বিস্ফোরণের পর দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর, বিশেষ করে মুম্বাই, কলকাতা ও উত্তর প্রদেশে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
মুম্বাই পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। শহরের সমস্ত থানাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং জনসমাগমের স্থানে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষভাবে ট্রেন স্টেশন, বাজার, ধর্মীয় স্থান ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে পুলিশকর্মীদের আরও সক্রিয় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে জনসাধারণকে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি কোনও সন্দেহজনক কার্যকলাপে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
উত্তর প্রদেশ পুলিশও এই ঘটনায় হাই অ্যালার্টে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্য পুলিশের কাছে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। রাজ্যের সব বড় শহর, বাজার, ধর্মীয় স্থান ও সংবেদনশীল জেলা–এ পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, স্থানীয় প্রশাসনকে সন্দেহজনক কার্যকলাপ বা নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বিস্ফোরণের পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরে সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।মুম্বাই ও কলকাতার মতো বড় শহরগুলোতেও জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার রাতে হাওড়া স্টেশনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জিআরপির পক্ষ থেকে স্টেশনের ঢোকা প্রত্যেকটি গাড়িকে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। স্নিফার ডগ দিয়ে যাত্রীদের লাগেজ এবং ট্রেনের কোচগুলিতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। গোটা স্টেশন চত্বরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ধর্মতলা, হেস্টিংস-সহ কলকাতা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নাকা চেকিং করা হচ্ছে। বাজার, মেলাঘর, ধর্মীয় স্থান ও বড় স্টেশনগুলোতে প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং সন্দেহজনক প্যাকেজ বা ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের হামলা শুধুমাত্র ক্ষয়ক্ষতি ঘটায় না, বরং সাধারণ মানুষে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া নিরাপত্তা সংক্রান্ত সতর্কতা সাধারণ মানুষের সচেতনতা ও সহযোগিতার ওপরও নির্ভর করে।
দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিস্ফোরণের স্থল থেকে উদ্ধারকৃত বস্তু ও ধ্বংসস্তূপ নিয়ে বিস্তারিত পরীক্ষা চলছে। শহরের রেড জোন, ব্লু জোন এবং পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত নজরদারি রাখা হয়েছে। পুলিশি আধিকারিকরা সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে এবং সাধারণ মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে রাতদিন কাজ করছেন।এই ভয়াবহ ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্যুইট করে লিখেছেন, “নয়াদিল্লিতে মর্মান্তিক বিস্ফোরণের খবর শুনে গভীরভাবে মর্মাহত। প্রিয়জনদের হারিয়ে যাওয়া পরিবারগুলির প্রতি আমার হৃদয় বেদনার্ত এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য এবং শক্তি কামনা করছি।”


