পহেলগাঁও হামলার (Pahalgam Terror) পর দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে যে প্রশ্নগুলো উঠেছে, সেগুলির জবাব খোঁজার জন্য অবশেষে তদন্তে নামল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)। পাঁচদিন আগে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে (Pahalgam Terror) ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে রবিবার সরকারিভাবে তদন্তভার গ্রহণ করল এনআইএ। যদিও তার আগেই সংস্থার আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন এবং প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু করে দেন।
এনআইএ-এর তদন্তে মূল লক্ষ্য থাকবে—কীভাবে এই হামলার ছক কষা হয়েছিল, কারা ছিল এই হামলার নেপথ্যে, এবং এর পেছনে শুধুই কি পাকিস্তানের লস্কর-এর টিআরএফ (The Resistance Front) শাখা যুক্ত, নাকি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন হামাস-এর মতো গোষ্ঠীরও কোনও ভূমিকা ছিল?
হামলার বিবরণ ও প্রাথমিক তথ্য
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার (Pahalgam Terror) দুপুরে বৈসরণ ভ্যালি রিসর্টে চারজন জঙ্গি হামলা চালায়। তাদের মধ্যে দুইজন পাকিস্তানি এবং বাকি দুইজন কাশ্মীরের বাসিন্দা। এই চারজনের স্কেচ ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এখন প্রশ্ন, এই হামলাকারীরা সীমান্ত পেরিয়ে কীভাবে ভারতে প্রবেশ করল, এবং হামলার পর কোন পথে পালিয়ে গেল?
সন্দেহজনক অ্যাপ ও স্থানীয় যোগসূত্র
তদন্তকারীরা (Pahalgam Terror) মনে করছেন, হামলার পরিকল্পনা ও চালানোর সময় জঙ্গিরা কোনও গোপন এনক্রিপ্টেড অ্যাপ ব্যবহার করেছিল। সেই অ্যাপের মাধ্যমে সংকেত আদান-প্রদান হয়। গোয়েন্দা সূত্রে আরও আশঙ্কা করা হচ্ছে, স্থানীয় কেউ এই হামলায় সহায়তা করেছে কি না, সেই দিকটিও খতিয়ে দেখা হবে।
হামাস যোগ?
এই হামলার ধরন, সময় ও পরিকল্পনার প্রক্রিয়া দেখে গোয়েন্দারা প্রাথমিকভাবে মনে করছেন, এই হামলার ধাঁচ হামাস-এর পদ্ধতির সঙ্গে মিলে যায়। তাই শুধুই টিআরএফ নয়, আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে কি না, সেটাও এখন এনআইএ-এর তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে উঠেছে।
সীমান্তে উত্তেজনা
এদিকে এই হামলার পর থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC) বরাবর পাক সেনার উসকানিমূলক কার্যকলাপ বেড়েই চলেছে। গত তিনদিন ধরে পাকিস্তান লাগাতার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করছে। রবিবার সকালেও টুটমারি গলি এবং রামপুর সেক্টর এলাকায় বিনা প্ররোচনায় গুলি চালানো হয় পাক ঘাঁটি থেকে। ভারতের সেনাবাহিনী এই হামলার যোগ্য জবাব দিয়েছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।
শিমলা চুক্তি (Pahalgam Terror) অমান্যের হুমকি
পাকিস্তানের তরফে এখন প্রকাশ্যেই শিমলা চুক্তি (Pahalgam Terror) অমান্য করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে। সীমান্তে একাধিক জায়গায় নতুন করে সেনা মোতায়েন, নজরদারি বৃদ্ধি ও রাত্রিকালীন টহলদারির মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনী এখন পুরোপুরি সতর্ক।
পহেলগাঁও হামলা (Pahalgam Terror) ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ। এই ঘটনার তদন্ত শুধু দোষীদের চিহ্নিত করাই নয়, ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পথও দেখাবে। এনআইএ-এর তদন্তে যদি সত্যিই হামাস বা আন্তর্জাতিক কোনও জঙ্গি সংস্থার যোগসূত্র পাওয়া যায়, তাহলে তা কেবল কাশ্মীর নয়, গোটা দেশের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হতে পারে। আর সীমান্তে ক্রমাগত পাক সেনার হামলা শুধু পরিস্থিতিকে আরও ঘনীভূত করে তুলছে।