নয়াদিল্লি, ১৬ সেপ্টেম্বর: ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমএইচএ) বড় অভিযান। দেশজুড়ে গ্রেফতার প্রায় ১৬,০০০ বিদেশী নাগরিক (Drug Traffickers)। অভিযোগ, তারা প্রত্যেকেই মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত। এবার তাদেরকেই দেশ থেকে তাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিভিন্ন রাজ্যে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই কর্মসূচি সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় মাদক নিয়ন্ত্রণ অভিযানগুলোর একটি।
নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি)-র জমা দেওয়া একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। সূত্রের খবরে জানা গিয়েছে এই অভিযানের লক্ষ্য শুধুমাত্র মাদক পাচারকারীদের দেশ থেকে সরিয়ে ফেলা নয়, বরং ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসার চেইনকে ভেঙে দেওয়া।
এই ১৬,০০০ বিদেশী নাগরিকের মধ্যে রয়েছে মাদক পাচার, পরিবহন এবং বিতরণের বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। তারা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য যেমন দিল্লি, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, পাঞ্জাব, গুজরাত এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে ছিলেন। অনেকের ক্ষেত্রে তারা ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও দেশে থাকছিলেন।
এর সংঙ্গে যুক্ত ছিল স্থানীয় নেটওয়ার্কও। এই স্থানীয় নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মাদকের অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছিলেন এই ব্যাক্তিরা। এনসিবি-র প্রতিবেদন অনুসারে, এই বিদেশীরা বিপুল পরিমানে হেরোইন, কোকেন, গাঁজা এবং সিন্থেটিক ড্রাগসের মতো বিপজ্জনক মাদক ভারতে এনেছেন। এই অভিযানের ফলে সরকার মাদক পাচারের আন্তর্জাতিক চক্রকে কঠোরভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে।
ভারতের মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের অধীনে, নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্ট (এনডিপিএস অ্যাক্ট), ১৯৮৫ এবং প্রিভেনশন অফ ইলিসিট ট্রাফিকিং ইন নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্ট, ১৯৮৮-এর মতো আইনগুলিতে এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি বিধান লেখা আছে।
এই আইনের অধীনে মাদক পাচারকারীদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কারাদণ্ড এবং জরিমানার বিধান রয়েছে। কিন্তু বিদেশীদের ক্ষেত্রে দেশ থেকে বহিস্কার করাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। এবং এমন ব্যবস্থা করা হয় যাতে তারা আর দেশে ফিরে না আসতে পারে।
গতকাল প্রকাশিত সরকারি সূত্র অনুসারে, এই বিতাড়ন প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হবে এবং এতে বিদেশী রেজিস্ট্রেশন অফিসার (এফআরআরও) এবং স্থানীয় পুলিশের সমন্বয়ে কাজ করা হবে। তেলেঙ্গানায় এমন একটি ডিটেনশন সেন্টার স্থাপিত হয়েছে ভিকারাবাদে, যা বিশেষ করে মাদক পাচারকারী বিদেশীদের বিতাড়নের জন্য ব্যবহার করা হবে।
জাতীয় অপরাধ রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র ২০২২ সালের তথ্য অনুসারে, ভারতে মাদক সংক্রান্ত অপরাধের সংখ্যা বাড়ছে এবং এর মধ্যে বিদেশীদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে, যেমন আসাম এবং মণিপুরে, মাদক পাচার একটি জাতীয় নিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Asia Cup 2025 : নিশ্চিত ভারত, শেষ ল্যাপে সুপার ফোরের দৌড়ে এই চার দেশ
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে গতকাল গুয়াহাটিতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন। যেখানে মাদক পাচার এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, মাদক পাচারকারী বিদেশীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স পলিসি অবলম্বন করা হবে।