২০২৫ সালের আয়কর বিল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের

কেন্দ্র সরকার ২০২৫ সালের আয়কর বিল প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, (Income Tax) যা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে লোকসভায় পেশ করা হয়েছিল। ওই দিনই বিলটি…

Income Tax bill 2025

কেন্দ্র সরকার ২০২৫ সালের আয়কর বিল প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, (Income Tax) যা গত ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে লোকসভায় পেশ করা হয়েছিল। ওই দিনই বিলটি পরীক্ষার জন্য সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠানো হয়। সিলেক্ট কমিটি ২১ জুলাই, ২০২৫ তারিখে লোকসভায় তাদের প্রতিবেদন পেশ করে।

সরকার কমিটির প্রায় সব সুপারিশ গ্রহণ করেছে। এছাড়াও, বিলের আইনি অর্থ সঠিকভাবে প্রকাশ করতে আরও কিছু পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সিলেক্ট কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পেশ করা ২০২৫ সালের আয়কর বিল প্রত্যাহার করা হবে। সরকার শীঘ্রই একটি নতুন বিল লোকসভায় পেশ করবে, যা ১৯৬১ সালের আয়কর আইনের স্থলাভিষিক্ত হবে।

   

আয়কর বিল, ২০২৫-এর পটভূমি

২০২৫ সালের আয়কর বিলটি ছিল কেন্দ্র সরকারের একটি উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ, যার লক্ষ্য ছিল ১৯৬১ সালের আয়কর আইনকে সংশোধন ও আধুনিকীকরণ করা। এই বিলে কর ব্যবস্থাকে আরও সরলীকৃত, স্বচ্ছ এবং করদাতাদের জন্য সুবিধাজনক করার প্রস্তাব ছিল। বিলটি পেশের পর সিলেক্ট কমিটির কাছে পাঠানো হয়, যাতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং বিভিন্ন অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে এটি পরীক্ষা করা যায়।

কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বিলের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে এবং বেশ কিছু সংশোধনী প্রস্তাব করেছে। সরকার এই সুপারিশগুলির প্রায় সবই গ্রহণ করেছে। তবে, কিছু অতিরিক্ত পরামর্শ এসেছে, যা বিলের আইনি অর্থ সঠিকভাবে প্রকাশ করতে প্রয়োজনীয়। এই কারণে সরকার বিলটি প্রত্যাহার করে নতুনভাবে প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সিলেক্ট কমিটির প্রতিবেদন এবং অতিরিক্ত পরামর্শগুলি বিলের কিছু ত্রুটি এবং অস্পষ্টতা প্রকাশ করেছে, যা সংশোধন না করলে ভবিষ্যতে করদাতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারত। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা চাই নতুন আয়কর বিলটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং করদাতাদের জন্য সুবিধাজনক হোক।

সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ এবং অন্যান্য পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত করে আমরা একটি উন্নত বিল পেশ করব।” এই পদক্ষেপ সরকারের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা এবং সংসদীয় পরীক্ষার গুরুত্বকে প্রতিফলিত করে।

নতুন বিলের প্রত্যাশা

নতুন আয়কর বিলটি ১৯৬১ সালের আয়কর আইনের স্থলাভিষিক্ত হবে, যা ভারতের কর ব্যবস্থার মূল কাঠামো হিসেবে কাজ করে আসছে। নতুন বিলে আধুনিক অর্থনীতির চাহিদা এবং ডিজিটাল যুগের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিধান থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন বিলে কর ছাড়ের সীমা বাড়ানো, কর গণনার পদ্ধতি সরলীকরণ, এবং ডিজিটাল লেনদেনের উপর কর আরোপের নতুন নিয়ম অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

Advertisements

এছাড়া, ছোট ব্যবসায়ী এবং মধ্যবিত্ত করদাতাদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সরকারের লক্ষ্য হল এমন একটি কর ব্যবস্থা তৈরি করা, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে উৎসাহিত করবে এবং করদাতাদের উপর বোঝা কমাবে।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট

আয়কর বিল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলগুলি এটিকে সরকারের পরিকল্পনার ঘাটতি হিসেবে দেখলেও, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এটিকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, “সরকার বিলটি তাড়াহুড়ো করে পেশ করেছিল, যা সিলেক্ট কমিটির পরীক্ষায় ত্রুটিপূর্ণ প্রমাণিত হয়েছে।

এটি সরকারের অদূরদর্শিতার প্রমাণ।” অন্যদিকে, বিজেপি নেতা রবি শঙ্কর প্রসাদ বলেন, “আমরা সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ মেনে নিয়েছি এবং আরও উন্নত বিল আনছি। এটি আমাদের স্বচ্ছতার প্রতি প্রতিশ্রুতি দেখায়।”অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নতুন বিলটি ভারতের কর ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার আনতে পারে।

বিশেষ করে, ডিজিটাল অর্থনীতি এবং স্টার্টআপ খাতের জন্য নতুন বিধান গ্রহণ করা হলে, এটি বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে। তবে, করদাতাদের মধ্যে নতুন বিলের বিষয়ে কৌতূহল এবং উদ্বেগ দুটোই রয়েছে।

২০২৫ সালের আয়কর বিল প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ভারতের কর ব্যবস্থার সংস্কার প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। সরকারের এই সিদ্ধান্ত সিলেক্ট কমিটির সুপারিশ এবং জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।

কপিল-সলমনকে খুনের হুমকি, তারকাদের সুরক্ষায় অমিত শাহের দ্বারস্থ বলিউড

নতুন বিলটি যখন পেশ করা হবে, তখন তা করদাতাদের জন্য আরও সুবিধাজনক এবং অর্থনীতির জন্য উপযোগী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপ ভারতের কর ব্যবস্থাকে আধুনিক ও স্বচ্ছ করার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।