‘কেন্দ্রীয় সরকার একতরফা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না’ বিবৃতি অভিষেকের

তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক এবং ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (abhishek) সোমবার স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ…

abhishek questions central

তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক এবং ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (abhishek) সোমবার স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকবে। তবে, কেন্দ্রীয় সরকার একতরফাভাবে কোনও দলের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে না।

অভিষেক কি বলেছেন (abhishek)

পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের বহুদলীয় কূটনৈতিক মিশন থেকে তৃণমূল কংগ্রেস বেরিয়ে এসেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি (abhishek)বলেন, “আমি জানি না আপনি এই তথ্য কোথা থেকে পেলেন। আমি স্পষ্ট বলছি, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে সিদ্ধান্তই নিক, তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রের পাশে থাকবে।”

   

অভিষেক (abhishek)আরও বলেন, প্রতিনিধি দল পাঠানোর বিষয়ে তাদের কোনও আপত্তি নেই, তবে কোন সাংসদ বা প্রতিনিধি দলে যাবেন, তা সংশ্লিষ্ট দলেরই সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। তিনি বলেন, “প্রতিনিধি দলে কে যাবেন, তা আমাদের দল ঠিক করবে। কেন্দ্রীয় সরকার একতরফাভাবে কোনও দলের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে না(abhishek)। তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি বা সমাজবাদী পার্টির কোন সদস্য প্রতিনিধি দলে যাবেন, তা ওই দলগুলোরই সিদ্ধান্ত।”

তৃণমূল কংগ্রেস অপারেশন সিঁদুর বয়কট করছে না বলেও জোর দিয়ে তিনি বলেন, (abhishek)“তৃণমূল কংগ্রেস অপারেশন সিঁদুর বয়কট করেনি এবং কখনও করবেও না। আমরা এই ইস্যুতে রাজনীতি করিনি। কিন্তু ক্ষমতাসীন দল এবং কিছু বিরোধী দল এই বিষয়টিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে, যা আমি নিন্দা করি। দেশের প্রশ্নে রাজনীতির কোনও স্থান নেই।”

তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী সাগরিকা ঘোষ বলেছেন 

তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী সাগরিকা ঘোষও এই অবস্থানের সমর্থন করে এক্স-এ পোস্ট করেন, “বৈদেশিক নীতি সম্পূর্ণভাবে সরকারের এখতিয়ার। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করছি পাকিস্তান-ভিত্তিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য। জাতি, পতাকা এবং আমাদের জাতীয় সংকল্প সমগ্র ভারতের এবং প্রতিটি গর্বিত নাগরিকের।”

তবে, তৃণমূল কংগ্রেসের সূত্রে জানা গেছে, দলের কোনও সাংসদ বা নেতা কেন্দ্রীয় সরকারের এই কূটনৈতিক উদ্যোগে অংশ নেবেন না। এর আগে জানা গিয়েছিল যে বহরমপুরের তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ পাঠান এই প্রতিনিধি দলে থাকতে পারেন।

অপারেশন সিঁদুর ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা

অপারেশন সিঁদুর ভারতের একটি সামরিক এবং কূটনৈতিক উদ্যোগ, যা ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ৭ মে শুরু হয়। এই হামলায় ২৬ জন নাগরিক, বেশিরভাগই পর্যটক, প্রাণ হারান। ভারত পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের সঙ্গে যুক্ত নয়টি জঙ্গি ঘাঁটিতে নির্ভুল হামলা চালায়। এই অভিযান বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের শূন্য সহনশীলতার নীতিকে তুলে ধরে।

কেন্দ্রীয় সরকার এই অভিযানের পর বিশ্বব্যাপী ভারতের অবস্থান বোঝাতে ৩০টিরও বেশি দেশে সাতটি বহুদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই দলগুলোতে মোট ৫৯ জন সাংসদ এবং আটজন প্রাক্তন কূটনীতিক রয়েছেন, যারা ৩২টি দেশ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করবেন। প্রতিটি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন একজন সাংসদ, এবং এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে “এক মিশন, এক বার্তা, এক ভারত”।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু শনিবার এক্স-এ এই প্রতিনিধি দলের তালিকা প্রকাশ করে বলেন, “এক মিশন। এক বার্তা। এক ভারত। অপারেশন সিঁদুরের অধীনে সাতটি বহুদলীয় প্রতিনিধি দল শীঘ্রই গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেবে, যা আমাদের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ অবস্থানকে প্রতিফলিত করে।”

মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা! বিকাশ ভবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় সিদ্ধান্তের পথে রাজ্য সরকার

Advertisements

প্রতিনিধি দলের বিবরণ

গ্রুপ ১ বিজেপি সাংসদ বৈজয়ন্ত পান্ডার নেতৃত্বে সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাইন এবং আলজেরিয়ায় যাবে। এই দলে রয়েছেন বিজেপির নিশিকান্ত দুবে, ফাংনন কোনিয়াক, রেখা শর্মা, এআইএমআইএম-এর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, প্রাক্তন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবী আজাদ এবং প্রাক্তন কূটনীতিক হর্ষ শৃঙ্গলা।

গ্রুপ ২ বিজেপির রবি শঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং ডেনমার্কে যাবে। এই দলে রয়েছেন বিজেপির দগ্গুবতী পুরন্দেশ্বরী, শিবসেনা (ইউবিটি)-র প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, কংগ্রেসের আমার সিং এবং প্রাক্তন কূটনীতিক এমজে আকবর।

গ্রুপ ৩ জেডিইউ-এর সঞ্জয় কুমার ঝার নেতৃত্বে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান এবং সিঙ্গাপুরে যাবে। এই দলে তৃণমূল কংগ্রেসের ইউসুফ পাঠান, সিপিআই(এম)-এর জন ব্রিটাস, প্রাক্তন কূটনীতিক সালমান খুরশিদ এবং বিজেপির অপরাজিতা সারাঙ্গি রয়েছেন।

গ্রুপ ৪ শিবসেনার শ্রীকান্ত একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে সংযুক্ত আরব আমিরাত, লাইবেরিয়া, কঙ্গো এবং সিয়েরা লিওনে যাবে। এই দলে বিজেপির বাঁসুরি স্বরাজ, বিজেডি-র সস্মিত পাত্র এবং ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগের মোহাম্মদ বশীর রয়েছেন।

গ্রুপ ৫ কংগ্রেসের শশী থারুরের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পানামা, গায়ানা, ব্রাজিল এবং কলম্বিয়ায় যাবে। এই দলে বিজেপির তেজস্বী সূর্য, এলজেপি (রাম বিলাস)-এর শম্ভবী চৌধুরী এবং টিডিপি-র জিএম হরিশ বালাযোগী রয়েছেন।

গ্রুপ ৬ ডিএমকে-র কানিমোঝি করুণানিধির নেতৃত্বে স্পেন, গ্রিস, স্লোভেনিয়া, লাটভিয়া এবং রাশিয়ায় যাবে। এই দলে সমাজবাদী পার্টির রাজীব রায়, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মিয়াঁ আলতাফ আহমদ এবং আরজেডি-র প্রেম চন্দ্র গুপ্ত রয়েছেন।

গ্রুপ ৭ এনসিপি (এসসিপি)-র সুপ্রিয়া সুলের নেতৃত্বে মিশর, কাতার, ইথিওপিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় যাবে। এই দলে কংগ্রেসের মনীশ তিওয়ারি, বিজেপির অনুরাগ সিং ঠাকুর এবং টিডিপি-র লবু শ্রী কৃষ্ণ দেবরায়ালু রয়েছেন।

তৃণমূল কংগ্রেস (abhishek)সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকলেও, প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে স্বাধীনতার দাবি জানিয়েছে। অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে ভারত বিশ্বব্যাপী তার শূন্য সহনশীলতার নীতি তুলে ধরছে, এবং এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থানকে আরও জোরালো করবে।