বিরোধী দলের বিধায়কের বাড়িতে টাকার পাহাড়! বিদেশি নোট-গয়নাও উদ্ধার

কর্নাটকের কংগ্রেস বিধায়ক কে.সি. বীরেন্দ্র ওরফে ‘পপি’-কে গত শনিবার (Opposition MLA) গুয়াহাটি থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গ্রেফতার করেছে। অবৈধ অনলাইন ও অফলাইন সট্টেবাজির একটি মামলায়…

Opposition MLA caught

কর্নাটকের কংগ্রেস বিধায়ক কে.সি. বীরেন্দ্র ওরফে ‘পপি’-কে গত শনিবার (Opposition MLA) গুয়াহাটি থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গ্রেফতার করেছে। অবৈধ অনলাইন ও অফলাইন সট্টেবাজির একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইডি’র বেঙ্গালুরু জোনাল অফিস কর্তৃক পরিচালিত তদন্তে জানা গেছে, বীরেন্দ্র তার সহযোগীদের সঙ্গে মিলে সিকিমের গ্যাংটকে একটি ক্যাসিনোর জন্য জমি লিজ নেওয়ার ব্যবসায়িক সফরে গিয়েছিলেন।

   

এই অভিযানে কর্নাটক, মুম্বই, গোয়া এবং জোধপুরে ৩০টি স্থানে তল্লাশি চালিয়ে ইডি বিপুল পরিমাণ সম্পদ উদ্ধার করেছে, যার মধ্যে রয়েছে ১২ কোটি টাকার নগদ অর্থ, যার মধ্যে প্রায় ১ কোটি টাকার বিদেশি মুদ্রা, ৬ কোটি টাকার সোনার গয়না, ১০ কেজি রুপো এবং চারটি বিলাসবহুল গাড়ি।

এছাড়া, ১৭টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং দুটি ব্যাঙ্ক লকার জব্দ করা হয়েছে এবং বীরেন্দ্রের ভাই কে.সি. নাগরাজ এবং তার ছেলে প্রুথ্বী এন রাজের বাড়ি থেকে সম্পত্তি সংক্রান্ত বেশ কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে।

ইডি’র তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে যে, বীরেন্দ্র এবং তার সহযোগীরা ‘কিং৫৬৭’, ‘রাজা৫৬৭’, ‘পপিস০০৩’ এবং ‘রত্না গেমিং’-এর মতো একাধিক অবৈধ অনলাইন সট্টেবাজি ওয়েবসাইট পরিচালনা করছিলেন। এই তল্লাশি অভিযানে গোয়ার পাঁচটি বিখ্যাত ক্যাসিনো পপিস ক্যাসিনো গোল্ড, ওশান রিভার্স ক্যাসিনো, পপিস ক্যাসিনো প্রাইড, ওশান ৭ ক্যাসিনো এবং বিগ ড্যাডি ক্যাসিনো তদন্তের আওতায় এসেছে। তদন্তে আরও জানা গেছে, বীরেন্দ্রের আরেক ভাই কে.সি. থিপ্পেস্বামী দুবাই থেকে অনলাইন গেমিং কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

৫০ বছর বয়সী এই বিধায়ক চিত্রদুর্গ বিধানসভা আসন থেকে ২০২৩ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন। এর আগে তিনি জনতা দল (সেকুলার)-এর সদস্য ছিলেন। তিনি কর্নাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি.কে. শিবকুমারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।

বীরেন্দ্রের বিরুদ্ধে এর আগেও ২০১৬ সালে আয়কর বিভাগের তল্লাশিতে তার বাড়ির বাথরুমে গোপন কুঠুরিতে ৫.৭ কোটি টাকার নতুন নোট, ৩২ কেজি সোনার বিস্কুট ও গয়না এবং ৯০ লক্ষ টাকার পুরনো নোট উদ্ধার হয়েছিল।

Advertisements

সেই মামলায় সিবিআই তদন্তে প্রকাশ পায়, বীরেন্দ্র ব্যাঙ্ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ৫.৭৬ কোটি টাকার অবৈধ নোট নতুন ২,০০০ এবং ৫০০ টাকার নোটে বিনিময় করেছিলেন।

ইডি’র তল্লাশি অভিযান ২২ ও ২৩ আগস্ট দুই দিন ধরে চিত্রদুর্গ (৬টি স্থান), বেঙ্গালুরু (১০টি স্থান), জোধপুর (৩টি স্থান), হুবলি (১টি স্থান), মুম্বই (২টি স্থান) এবং গোয়ার (৮টি স্থান) ৩০টি স্থানে পরিচালিত হয়। বীরেন্দ্রকে গ্রেফতার পর শুক্রবার গ্যাংটকের একটি বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয় এবং বেঙ্গালুরুর এখতিয়ারযুক্ত আদালতে হাজির করার জন্য ট্রানজিট রিমান্ড পাওয়া যায়।

এই ঘটনায় বেঙ্গালুরুর রাজরাজেশ্বরীনগরের কংগ্রেস নেত্রী কুসুমা এইচ-এর ভাই অনিল গৌড়ার বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। ইডি’র তদন্তে প্রকাশ পেয়েছে, এই সট্টেবাজি নেটওয়ার্কে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের খেলোয়াড়রা জড়িত, যারা জটিলভাবে নগদ ও তহবিলের স্তরবিন্যাস করছিল।

এই গ্রেফতারী এবং তল্লাশি অভিযান কর্নাটকে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধী দলের একজন বিধায়কের বাড়ি থেকে এত বিপুল পরিমাণ সম্পদ উদ্ধার হওয়ায় কংগ্রেসের ভাবমূর্তির উপর প্রভাব পড়তে পারে। তবে, বীরেন্দ্র বা তার দলের পক্ষ থেকে এখনও এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

দুর্ঘটনা ও ক্যান্সার রোগীর জন্য কলকাতায় হাড় ব্যাঙ্ক

ইডি জানিয়েছে, তদন্ত এখনও চলছে এবং এই নেটওয়ার্কের অন্যান্য সদস্যদের চিহ্নিত করার জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এই ঘটনা অবৈধ সট্টেবাজি ও অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে ইডি’র কঠোর অবস্থানের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।