সম্প্রতি ভারত-কানাডা সম্পর্কের অস্থিরতার মধ্যে কানাডা প্রশাসন নতুন একটি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা ভারতের অভিবাসীদের জন্য নতুন সমস্যা সৃষ্টি করতে চলেছে। খলিস্তানি ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে কানাডার সম্পর্কের অবনতি এবং জাস্টিন ট্রুডোর ক্ষমতাচ্যুতি, এ সবকিছুই কানাডায় ভারতীয়দের জন্য নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। ভারতীয় অভিবাসীদের জন্য কানাডার নতুন নীতি তাদেরকে আরও বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে চলেছে। ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ থেকে কানাডার অভিবাসন নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার ফলে একাধিক ভারতীয় কর্মী এবং ছাত্রদের জন্য বিপদ বাড়বে।
গত কয়েক বছরে কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ক্রমশ জটিল হয়ে উঠেছে। কানাডার রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ভারতের সঙ্গে অনেক বিষয়ে বিবাদ সৃষ্টি হয়েছে, বিশেষত খলিস্তানি ইস্যু নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে, আমেরিকা, ব্রিটেন এবং জার্মানির পর, কানাডাও তার অভিবাসন নীতিতে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। এর ফলে ভারতীয়দের ভিসা বাতিল হওয়ার প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে আমেরিকা ইতিমধ্যেই ৩০০-রও বেশি ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে। ব্রিটেনেও অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। এবং সম্প্রতি জার্মানিতে ক্ষমতায় এসেছেন কট্টরপন্থী নেতা ফ্রেডরিখ মার্জ, যিনি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ, শরণার্থী আইন এবং অভিবাসীদের সামাজিক সুবিধা নিয়ে কঠোর পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যে কানাডা অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে।
কানাডার প্রশাসন ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ থেকে “অস্থায়ী আবাসিক ভিসা” বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। এর ফলে সে দেশে কাজ করতে যাওয়া ভারতীয় কর্মী এবং কানাডার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ভারতীয় ছাত্রদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এই নীতির কারণে প্রায় ৪ লক্ষ ২৭ হাজার ভারতীয় ছাত্র এবং অনেক কর্মীকে সমস্যায় পড়তে হতে পারে।
এই কঠোর পদক্ষেপের ফলে কানাডায় থাকা ভারতীয় অভিবাসীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাদের কাজের সুযোগ কমতে পারে এবং পড়াশোনার জন্য ভিসা নবীকরণের ক্ষেত্রে অসুবিধা হতে পারে। বিশেষত, যারা ওয়ার্ক ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কানাডায় আছেন, তাদের জন্য এখন নতুন করে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে এবং এই প্রক্রিয়া সহজ হবে না।
তবে, এই নতুন নীতির প্রভাব শুধু ভারতীয় অভিবাসীদের ওপরই সীমাবদ্ধ থাকবে না। কানাডার অভিবাসন নীতি কঠোর হওয়ায়, দেশটিতে বিভিন্ন দেশের অভিবাসী কমিউনিটি সমস্যায় পড়বে। তবে ভারতীয়দের জন্য এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দেশটির সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্কিত সমস্যাগুলির কারণে এখন এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, ভারতীয় অভিবাসীরা কানাডায় থাকার জন্য নতুন নিয়ম-কানুন মেনে চলার বাধ্যবাধকতায় পড়তে যাচ্ছেন। অভিবাসন সংক্রান্ত খোঁজ-খবর এবং নীতির বিষয়ে প্রতিদিন নতুন তথ্য উঠে আসছে, যা অভিবাসীদের জন্য আরো একধাপ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।