Monday, December 8, 2025
HomeBharat'মিয়াঁ' বা 'পাকিস্তানি' বলার পিছনে ধর্মীয় আঘাতের যুক্তি মানলো না সুপ্রিম কোর্ট!

‘মিয়াঁ’ বা ‘পাকিস্তানি’ বলার পিছনে ধর্মীয় আঘাতের যুক্তি মানলো না সুপ্রিম কোর্ট!

- Advertisement -

কাউকে ‘মিয়াঁ’ বা ‘পাকিস্তানি’ বলে অপমান করা আপত্তিকর হতে পারে, তবে তা কখনোই অপরাধ নয়, এমনই রায় দিল ভারতের শীর্ষ আদালত। একটি মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিল, এই ধরনের মন্তব্য ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার দাবি প্রমাণিত হয়নি এবং সংবিধানের ২৯৮ ধারার আওতায় তা অপরাধের মধ্যে পড়ে না।

মামলার সূত্রপাত রাজস্থানের এক সরকারি কর্মী শামসুদ্দিনের অভিযোগ থেকে। শামসুদ্দিন আরটিআই বিভাগের একজন উর্দু অনুবাদক। তার অভিযোগ, তিনি তার সহকর্মী হরিনন্দন সিং-এর কাছে একটি নথি দিয়েছিলেন, কিন্তু সিং ওই নথি নিতে অস্বীকার করেছিলেন। এরপর, কিছু সময় পর তিনি সেই নথি নিয়ে নেন, তবে তাকে ‘মিয়াঁ’ এবং ‘পাকিস্তানি’ বলে অপমানিত হতে হয়। এই মন্তব্যের ফলে শামসুদ্দিন অভিযোগ করেন, তাকে তার ধর্ম নিয়ে অসম্মান করা হয়েছে, এমনকি চাকরি হারানোর হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

   

এ ঘটনায় শামসুদ্দিন রাজস্থান হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন, যেখানে প্রথমে ৩৫৩, ২৯৮ এবং ৫০৪ ধারায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছিল। তবে প্রমাণের অভাবে কিছু ধারার অভিযোগ বাতিল হয়ে যায়। পরে এটি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়। শীর্ষ আদালত মামলাটি শুনানির পর মঙ্গলবার তাদের রায়ে জানায়, ‘মিয়াঁ’ বা ‘পাকিস্তানি’ বলাটা আপত্তিকর হতে পারে, কিন্তু তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।

বিচারপতি বিভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ জানিয়েছেন, এই ধরনের মন্তব্য শান্তি ভঙ্গের জন্য যথেষ্ট নয়। ৫০৪ ধারার অভিযোগও ভিত্তিহীন বলে খারিজ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, ২৯৮ ধারার অভিযোগে হরিকে দোষী বলে মনে করা হয়নি, কারণ এই মন্তব্যগুলি কোনো ধর্মীয় আঘাতের মধ্যে পড়েনি এবং অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা যায় না।

মামলার শুনানি শেষে আদালত এই রায় দিয়ে হরিনন্দন সিং-এর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ খারিজ করে দেন এবং তাকে বেকসুর খালাস করেন। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়টি সমাজে ধর্মীয় ভাবাবেগ ও আক্রমণ সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছে। আদালত জানিয়েছে, শুধু কথায় কোনও ধরনের আক্রমণ বা অপমান হতে পারে, কিন্তু তা অপরাধ নয়, যতক্ষণ না তা শান্তি ভঙ্গ বা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে।

এদিনের রায়টি আরও একবার প্রমাণ করেছে যে, আইনি প্রক্রিয়ায় যেকোনো অভিযোগের ভিত্তি এবং প্রমাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু কথার দ্বারা কাউকে অসম্মানিত করা হতে পারে, কিন্তু যদি তা অপরাধের শিকার না হয়, তবে আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে তা গ্রহণযোগ্য নয়।

এছাড়া, এই রায়ের মাধ্যমে আদালত আরো একবার পরিষ্কার করেছে যে, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের দাবি করা যদি যথেষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে না হয়, তাহলে তাকে আইনি দৃষ্টিতে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে না।

- Advertisement -
এই সংক্রান্ত আরও খবর
- Advertisment -

Most Popular