হায়দরাবাদ: শুক্রবার ভোরে অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্ণুল (Kurnool) জেলায় ভয়াবহ বাস-দুর্ঘটনা (kurnool Bus Tragedy) ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় বাস চালককে গ্রেফতার করল অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃত চালকের নাম এম লক্ষ্মণীয়া (৪৫)। দুর্ঘটনায় ২০ জন বাসযাত্রীর মৃত্যুর পর শুক্রবার চালক এম লক্ষ্মণীয়াকে হেফাজতে নিয়েছিল পুলিশ। রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার তাঁকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করানো হবে। উল্লেখ্য, শুক্রবার ভোট ৩ টে নাগাদ মদ্যপ অবস্থায় বাসটিতে ধাক্কা মারে বি শিব শঙ্কর নামক এক বাইক আরোহী। দুর্ঘটনার পর বাইকটিকে ৩০০ মিটার ঠেলে নিয়ে যায় কাভেরী কোম্পানির বাসচালক এম লক্ষ্মণীয়া। সেখানে আরও একটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে সেটির। এরপরেই ভয়াবহ বিস্ফোরণে বিধ্বংসী আগুন লাগে বাসটিতে।
এক বরিষ্ঠ পুলিশ (Police) আধিকারিক জানিয়েছেন, “দুর্ঘটনার সময় গাড়ির গরিবেগ ৮০-৯০ কিমি/ঘন্টা ছিল বলে জানিয়েছেন বাসচালক, যা স্বাভাবিক। তবে দুর্ঘটনায় দ্বিতীয় ড্রাইভার শিব নারায়নের (৩০) কোনও ভূমিকা ছিল না বলে, তাঁকে এখনও গ্রেফতারির কথা ভাবা হচ্ছে না বলে জানায় পুলিশ। পুলিশের তরফে বলা হয়, দ্বিতীয় ড্রাইভার শিব নারায়ণ উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে জানলার কাঁচ ভেঙে যাত্রীদের উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন।
লক্ষ্মণীয়ার বিরুদ্ধে জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছেন তদন্তকারীরা
তদন্তকারীরা জানতে পারেন, অভিযুক্ত ড্রাইভার লক্ষ্মণীয়া মাত্র পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু দশম শ্রেণীর জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে ভারী যানবাহন চালানোর লাইসেন্স জোগাড় করেছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
লাইসেন্সিং নিয়ম অনুসারে, পরিবহন যানবাহন চালানোর জন্য যে কোনও ব্যক্তির কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করা আবশ্যক। তবে, এই নিয়মগুলি প্রায়শই লঙ্ঘন করা হয় এবং লোকেরা তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে জাল শিক্ষাগত নথি ব্যবহার করে। তদন্তকারীরা বাসটির মালিকানাধীন ট্রাভেল কোম্পানির বিরুদ্ধেও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালাচ্ছে।
একাধিক উদ্বেগজনক ঘটনা মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে অবদান রেখেছে বলে জানা গিয়েছে। যেমন, অবৈধভাবে বাসটিকে স্লিপার কোচে রূপান্তর, নিরাপত্তা যাচাই এড়াতে সন্দেহজনক পুনঃনিবন্ধন কৌশল এবং দুর্ঘটনায় জীবিত ফেরা যাত্রীরা জানিয়েছেন, এসি বাসটিতে জানালা ভাঙার হাতুড়ির মতো জরুরি সরঞ্জাম ছিল না।


