তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ হতে চলেছে, এবং এই বাজেট নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একাধিক প্রত্যাশা ও কৌতূহল তৈরি হয়েছে। বিশেষত মধ্যবিত্ত শ্রেণী, যাদের জীবনযাত্রা প্রতিনিয়ত কঠিন হয়ে উঠছে, তারা আশা করছে যে বাজেটে তাদের জন্য কিছু সহায়ক পদক্ষেপ থাকবে। কিন্তু বাজেট পেশের আগেই হাওড়া স্টেশনে একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উঠে এসেছে মানুষের নানা প্রতিক্রিয়া।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন অষ্টমবারের মতো বাজেট পেশ করতে চলেছেন। তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটি গভীর উদ্বেগ রয়েছে—তেল থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমবে তো? কবে চাকরি পরিস্থিতি উন্নত হবে? এসব প্রশ্ন নিয়ে তারা বাজেটের দিকে নজর রেখেছে। একদিকে কিছু মানুষ মনে করছেন যে, বাজেট থেকে কিছু ভালো খবর আসতে পারে, আবার অন্যদিকে অনেকেই হতাশা প্রকাশ করছেন যে বছরের পর বছর একই আশায় তারা কিছুই পাননি। একজন তো বলেই দিয়েছেন, “প্রত্যেক বছরই তো আশা থাকে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হয় না।”
মধ্যবিত্তের মধ্যে সবচেয়ে বড় দাবি ইনকাম ট্যাক্সে পরিবর্তন নিয়ে। অনেকেই মনে করছেন, আয়কর ব্যবস্থা পরিবর্তন করে কিছুটা ছাড় দেওয়া হলে তাদের জীবনে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসতে পারে। একজন বলছেন, “আমরা সবাই অপেক্ষা করছি, ইনকাম ট্যাক্সে কিছু ছাড়ের জন্য, যাতে কিছুটা টাকা হাতে আসে। যদি তা হয়, তবে জীবনটা একটু সহজ হতে পারে।” তবে অনেকের মধ্যে এই আশাও দৃঢ় বিশ্বাস তৈরি করতে পারছে না, কারণ অতীত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী তারা দেখেছে যে, নানা প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও কিছুই হয়নি।
তেলের দাম কমানোর বিষয়টি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, যা সাধারণ মানুষের মনেও বেশ গুঞ্জন তুলেছে। কেউ কেউ বলছেন, “যদি তেলের দাম কমে, তাহলে সবকিছুতেই তার প্রভাব পড়বে। সবকিছু একসাথে সস্তা হবে, এবং জীবনযাত্রার খরচও কিছুটা কমবে।” তবে অনেকেই মনে করেন যে, তেলের দাম কমলে তা সাময়িক হবে এবং তাতে স্থায়ী কোনও পরিবর্তন আসবে না।
মধ্যবিত্তরা যে খুব অসন্তুষ্ট, তা স্পষ্টভাবেই শোনা যাচ্ছে। এক ব্যক্তি বলেন, “সংসারের খরচ বাড়ানোর কারণে বিনিয়োগের কথা ভাবা তো দূরের কথা। একে তো মহামারির পর পরিস্থিতি অনেক কঠিন হয়ে গেছে, আর এর ওপর সরকার কিছুই করছে না। এই অবস্থায়, আমাদের পক্ষে সংসার চালানোই একরকম দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
এছাড়া, সাধারণ মানুষের উদ্বেগ রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়েও। একটি বিশাল অংশের মত হলো, “নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম মানুষের নাগালে রাখতে হবে। দাম না বাড়িয়ে কমালে ভালো হয়।” তাদের মতে, বাজারে দাম বাড়ানো হলে প্রতিদিনের খরচ বাড়বে এবং তাদের জীবন আরও কঠিন হবে।
এছাড়া, কিছু ব্যবসায়ী এবং দোকানদারও তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শহরের এক ওষুধ দোকানদার বলছেন, “সবকিছু যেমন দাম বাড়াচ্ছে, তাতে আমাদের কাছে যে পরিমাণ অর্থ জমে, সেটা দিয়ে পরিবার চালানোও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সুদের হার না বাড়ালে সাধারণ মানুষের পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”
বাজারে এমন উদ্বেগ এবং প্রত্যাশার মধ্যেই বাজেট পেশ হবে। এ বার দেখা যাক, মোদী সরকারের বাজেট কতটা সাধারণ মানুষের আশা পূরণ করতে সক্ষম হয়, বিশেষত মধ্যবিত্তদের জন্য কতটা সহায়ক হতে পারে।