নয়াদিল্লি, ৭ নভেম্বর: ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব এক নতুন স্তরে পৌঁছেছে। ভারতের Akash-NG (নতুন প্রজন্ম) ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার প্রতি ব্রাজিল গভীর আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, ব্রাজিল এখন এই উন্নত ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য সহ-উৎপাদন এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর (ToT) করতে আগ্রহী। সূত্রের মতে, আকাশ-এনজি সিস্টেমটি নিবিড়ভাবে অধ্যয়নের জন্য ব্রাজিল শীঘ্রই ভারতে একটি মূল্যায়ন দল পাঠাতে পারে।
১৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং ব্রাজিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ডো অ্যালকমিনের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতি ব্রাজিলের আগ্রহ দেখে ভারত আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার যৌথ উৎপাদনের প্রস্তাব করেছিল। তবে, ব্রাজিলের আগ্রহ এখন পূর্ববর্তী আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থেকে আকাশ-এনজি-র দিকে প্রসারিত হয়েছে, যা প্রযুক্তিগতভাবে আরও উন্নত এবং শক্তিশালী।
আকাশ-এনজি-এর বৈশিষ্ট্য
আকাশ-এনজি ক্ষেপণাস্ত্রের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। একজন সেনা আধিকারিকের মতে, নতুন ডুয়েল-পালস সলিড রকেট মোটরের জন্য ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা ৭,০৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি একটি অত্যাধুনিক AESA রাডার এবং সক্রিয় রাডার হোমিং সিকার দিয়ে সজ্জিত। এটি ছোট, দ্রুত এবং গোপন লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত করার ক্ষমতা রাখে।
২০২৫ সালের জুন মাসে চাঁদিপুরের ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জে আকাশ-এনজি সফলভাবে পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়, যেখানে এটি সরাসরি একটি বাঁশি টার্গেট ড্রোনের সাথে লড়াই করে। এই সিস্টেমটি এখন ভারতীয় বিমান বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর দ্বারা ব্যবহারকারীর পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত। ভারত এবং ব্রাজিলের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে, এটি উভয় দেশের জন্য কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
এই চুক্তি ভারত ও ব্রাজিলকে কীভাবে উপকৃত করবে?
এই অংশীদারিত্ব ব্রাজিলকে তার অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা শিল্প এবং স্বনির্ভরতা মিশনকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে, ভারত ল্যাটিন আমেরিকায় একটি প্রধান কৌশলগত ক্রেতা খুঁজে পাবে, যেখানে চিনের মতো দেশগুলি ইতিমধ্যেই ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি নিশ্চিত করেছে। ভারত ইতিমধ্যেই আর্মেনিয়ায় আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা রফতানি করেছে এবং ভিয়েতনাম এবং ফিলিপাইনের সাথে আলোচনা করছে। এখন যদি ব্রাজিল আকাশ-এনজির অংশীদার হয়, তাহলে এটি ভারতের প্রতিরক্ষা রফতানি ক্ষমতা এবং বিশ্বব্যাপী ভাবমূর্তি উভয়কেই নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।



