ভোটের আগেই ৭৫ শতাংশ আসন জয় বিজেপির! নির্বাচন হবে শুধুই নিয়ম রক্ষার জন্য?

খেলা শুরুর আগেই যেন খেলা শেষ। অনেকটা এরকমই অবস্থা ত্রিপুরার (Tripura Panchayat Elections) রাজ্যস্তরের রাজনীতিতে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপি সহ বিরোধীদের মুখে একই…

BJP Wins 75 Percent of Seats in Tripura Panchayat Elections

খেলা শুরুর আগেই যেন খেলা শেষ। অনেকটা এরকমই অবস্থা ত্রিপুরার (Tripura Panchayat Elections) রাজ্যস্তরের রাজনীতিতে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বঙ্গ বিজেপি সহ বিরোধীদের মুখে একই অভিযোগ থাকে। পঞ্চায়েতে সন্ত্রাস, প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে না দেওয়ার অভিযোগ বিগত কয়েক বছর ধরে বঙ্গের রাজনীতির চেনা চিত্র। এবার সেই একই দৃশ্য ত্রিপুরাতেও। তবে মজার বিষয়, এক্ষেত্রে অভিযোগের তীর শাসক দল বিজেপির দিকে, যারা বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দল।

আগামী ৮ আগস্ট ত্রিপুরায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে চলেছে। কিন্তু তার আগেই গোটা ত্রিপুরায় যেন গেরুয়া আবিরের ঝড় বইছে। কারণ অধিকাংশ পঞ্চায়েতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে বিজেপির প্রার্থীরা। গত ১৯ তারিখে ত্রিপুরার পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন পেশের শেষ দিন ছিল। মনোনয়ন পেশের আগেই ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ এনেছে ত্রিপুরার এক সময়কার শাসক দল বামফ্রন্ট।

   

সূত্র মারফৎ খবর ত্রিপুরার গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭১ শতাংশ আসনে বিরোধীরা কোন প্রার্থীই দিতে পারেনি। স্বাভাবিকভাবেই সেই আসন গুলিতে শাসকদল বিজেপির প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। অপরদিকে পঞ্চায়েত সমিতির ৫৮ শতাংশ এবং জেলা পরিষদের ১৭ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে যা বিরল বলেই মনে করছেন অনেকে।

এর আগে ২০২১ সালে পৌরসভা নির্বাচনে অনেকটা একই রকম চিত্র দেখা দিয়েছিল। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের এই ছবি দেখা যায়নি। ১৩টি পৌরসভার ৩৩৪টি আসনের মধ্যে ৩২৯ টিই নিজেদের দখলে রেখেছিল বিজেপি। শাসক দল বিজেপি পেয়েছিল প্রায় ৫৯ শতাংশ ভোট। সেখানে ২৪ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের মুখপাত্র সেই সময় অভিযোগ করেছিলেন প্রায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে তাদের প্রার্থী দিতে দেওয়া হয়নি। যদিও পরবর্তীকালে বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল হয়নি তৃণমূলের।

এবার পঞ্চায়েত ভোটের আগেও এক সুরে, একই অভিযোগ সিপিআইএম এবং তৃণমূল কংগ্রেস দুই বিরোধী দলেরই। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা গোটা বিষয়টিকে বিরোধী দলগুলি সাংগঠনিক দুর্বলতা বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে বারংবার পঞ্চায়েতে ভোট না হওয়া বা প্রহসনের অভিযোগ এনেছে বিজেপি। এবার বিজেপি শাসিত আরেক বাঙালি রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে সেই একই অভিযোগ। যা পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের হাতে একটা বড় অস্ত্র তুলে দিল বিজেপির বিরুদ্ধে, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। আগামী দিনে তৃণমূল বঙ্গের নির্বাচনে সন্ত্রাস ইস্যুতে ত্রিপুরার উদাহরণ টানলে, বিজেপি নেতারা কি জবাব দেন সেটাই দেখার বিষয়।