চলতি মাসেই রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করবে বিজেপি

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের (Delhi Assembly Elections) প্রস্তুতি এখন পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী প্রচারের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। বিজেপি, যা গতবার দিল্লির…

BJP to Launch Campaign for Delhi Assembly Elections with Yatras, Jan Sabhas, and Ground Activities

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের (Delhi Assembly Elections) প্রস্তুতি এখন পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী প্রচারের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। বিজেপি, যা গতবার দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে বড় ধরনের পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছিল, এবারে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুত। দলের শীর্ষ সূত্রের দাবি, “আমরা আমাদের মাটির স্তরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি এবং এখন একযোগে কাজ শুরু করার জন্য প্রস্তুত। আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা, মাইক্রো লেভেল পর্যন্ত, সম্পন্ন হয়েছে। মাসের শেষে আমরা আমাদের প্রচার কার্যক্রম শুরু করব, এবং আমরা একটিও পদক্ষেপ ছাড়ব না।”

এ বিষয়ে একটি উঁচু বিজেপি সূত্র আরও জানিয়েছে, “আজ সকালেই দিল্লির সাতটি সাংসদের সাথে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দিল্লি বিজেপি সভাপতি বিরেন্দর সাচদেবা এবং দিল্লি নির্বাচনী ইনচার্জ বাইজয়ন্ত পাণ্ডার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে আগামী নির্বাচনের জন্য বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সামনে আরও একাধিক কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য স্তরের বৈঠক হবে।”

   

এবারের নির্বাচনী প্রচারে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি চালানোর পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। এগুলোর মধ্যে থাকবে যাত্রা, ঘরে ঘরে প্রচার, চৌপাল বৈঠক, র‌্যালি, রোড শো এবং নানা গ্রাউন্ড অ্যাক্টিভিটি। দলের শীর্ষ নেতারা মাঠে নামবেন এবং তারা যতটা সম্ভব জনসংযোগ বাড়াতে চান। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা দলীয় কর্মীদের একত্রিত করার পাশাপাশি, দিল্লির ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিতে চায়।

এদিকে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপি দলের মুখপাত্র এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে দলের প্রধান মুখ কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, নির্বাচনের আগে একজন মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করা যেতে পারে, তবে এখন পর্যন্ত তার নাম ঘোষণার জন্য কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। একাধিক শীর্ষ নেতাকে মাঠে নামানো হতে পারে, যাতে তারা দিল্লি নাগরিকদের কাছে দলের বার্তা পৌঁছে দিতে পারেন।

বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, ২০২৫ সালের শুরুর দিকে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই বিজেপি দল পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের প্রচার কার্যক্রম শুরু করতে চায়। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বিজেপি ২০১৫ সালের নির্বাচনে ৭০টি আসনের মধ্যে মাত্র ৩টি আসন জিতেছিল, কিন্তু ২০২০ সালের নির্বাচনে তারা আরও ভালো ফলাফল করার জন্য চেষ্টা করছে।

দিল্লি বিজেপি সভাপতি বিরেন্দ্র সাচদেবা এবং দলীয় নির্বাচনী ইনচার্জ বাইজয়ন্ত পাণ্ডা জানিয়েছেন, এবার তারা তৃণমূল স্তরে পৌঁছানোর জন্য আরও বেশি প্রচেষ্টা চালাবেন। “আমাদের উদ্দেশ্য শুধু দিল্লির নাগরিকদের কাছে পৌঁছানো নয়, আমরা তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে চাই। সেই জন্য আমরা নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছি,” জানান সাচদেবা।

বিজেপি দল সদস্যরা জানিয়েছেন, এবার তারা মানুষের কাছাকাছি পৌঁছানোর জন্য একাধিক সমাবেশ ও প্রচারমূলক কার্যক্রম আয়োজন করবে, যাতে ভোটাররা নিজেদের সমস্যাগুলো সরাসরি দলের কাছে তুলে ধরতে পারেন। সেইসঙ্গে তারা নির্বাচনী প্রচারের জন্য নিজেদের কর্মীদের একত্রিত করতে চান। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে থাকবে ‘চৌপাল বৈঠক’, ‘গল্প শোনা’, ‘রোড শো’, ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা জনসাধারণকে আকৃষ্ট করবে।
এছাড়াও, বিজেপি দল অতীতে যে সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজ করেছে, তা তুলে ধরতে প্রচার চালাবে। তবে, দলের পক্ষ থেকে একাধিক সাংসদ ও নেতারা নিজ নিজ নির্বাচনী অঞ্চলে ঘুরে জনগণের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করছেন।

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বিজেপির পরিকল্পনা এখন পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে। দলের নেতাদের বিশ্বাস, তারা এবার ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য অনেক বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠবে। তাদের প্রচারে এই নির্বাচনের ফলাফল অনেকটাই পরিবর্তন করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লির আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি দল কিভাবে ভোটারদের মন জয় করতে পারবে তা অনেকটাই নির্ভর করবে দলটির নির্বাচনী প্রচারের শক্তি এবং কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরের নেতৃত্বের দক্ষতার উপর। দিল্লির নাগরিকরা এখন অনেক বেশি সচেতন এবং তারা উন্নয়নমূলক কাজের ওপরই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

এদিকে, দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে দলীয় কর্মীদের যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রয়োজনীয় সকল সমর্থন ও সহায়তা প্রদান করতে পারেন। বিজেপি দলের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ তাদের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী বা নেতৃত্বের বিষয়ে এখনও কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।