রায়বরেলী, উত্তর প্রদেশ, ১০ সেপ্টেম্বর : কংগ্রেস সাংসদ এবং লোকসভায় বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধীর(Rahul Gandhi) দুদিনের রায়বরেলী সফরের প্রথম দিনে তাঁর কনভয়কে আটকানোর চেষ্টা করেছে বিজেপি কর্মীরা।
উত্তর প্রদেশ সরকারের রাজ্যমন্ত্রী দিনেশ প্রতাপ সিং এর নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা রায়বরেলীতে রাহুল গান্ধীর কনভয়ের পথে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন এবং ‘রাহুল গান্ধী ফিরে যাও’ স্লোগান দেন। এই ঘটনা রায়বরেলী লোকসভা কেন্দ্রে, যেখানে রাহুল গান্ধী সাংসদ, তীব্র রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
VIDEO | Raebareli, Uttar Pradesh: BJP workers led by state minister Dinesh Pratap Singh try to block Congress MP Rahul Gandhi’s convoy. Rahul Gandhi is on a two-day visit to his Lok Sabha constituency Raebareli.
Dinesh Pratap Singh (@RBLDineshSingh) says, “Rahul Gandhi should… pic.twitter.com/Ddg1obSuoC
— Press Trust of India (@PTI_News) September 10, 2025
বিক্ষোভের কারণ হিসেবে দিনেশ প্রতাপ সিং অভিযোগ করেছেন, সম্প্রতি বিহারে মহাগঠবন্ধনের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রয়াত মায়ের বিরুদ্ধে কটূক্তি করা হয়েছিল। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধীর উচিত ছিল এই ধরনের অপমানজনক মন্তব্যের নিন্দা করা এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।
তাঁর উচিত ছিল এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রাহুল গান্ধী এই ধরনের লোকদের সমর্থন করছেন। বিজেপি কর্মীরা দাবি করছে, রাহুল গান্ধী দেশের মায়েদের কাছে ক্ষমা চাইবেন।”ঘটনাটি ঘটে যখন রাহুল গান্ধীর কনভয় রায়বরেলী শহর থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ছিল।
বিজেপি কর্মীরা দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করেন এবং প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন, যেখানে লেখা ছিল ‘রাহুল গান্ধী ফিরে যাও’। এই বিক্ষোভের কারণে কনভয়টি প্রায় এক ঘণ্টা আটকে থাকে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং কনভয়ের পথ পরিষ্কার করে।
এরপর রাহুল গান্ধী বছরাওয়ান কসবায় পৌঁছান, যেখানে কংগ্রেস কর্মীরা তাঁকে উষ্ণ স্বাগত জানান। তিনি পরে হরচন্দপুর বিধানসভা এলাকায় বটোহি রিসর্টে বুথ স্তরের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন।
রাহুল গান্ধী বুধবার সকালে দিল্লি থেকে লখনঊ হয়ে সড়কপথে রায়বরেলী পৌঁছান। লখনঊতে তাঁকে স্বাগত জানান উত্তর প্রদেশ কংগ্রেস প্রধান অজয় রাই, বিধায়ক দলের নেত্রী আরাধনা মিশ্র এবং অন্যান্য শীর্ষ নেতারা। রায়বরেলীতে তাঁর এই সফর দুদিনের, যেখানে তিনি দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক এবং স্থানীয় বিষয় নিয়ে আলোচনায় অংশ নেবেন।
এই ঘটনার পটভূমিতে রায়বরেলীতে রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বেড়েছে। সম্প্রতি রাহুল গান্ধীর সফরের আগে শহরে কিছু বিতর্কিত পোস্টার প্রদর্শিত হয়, যেখানে রাহুল গান্ধী, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এবং সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবকে ‘দেবতার মর্যাদা’ দেওয়া হয়েছিল। এই পোস্টারগুলো নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
দিনেশ প্রতাপ সিং, যিনি ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে রায়বরেলী থেকে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন, রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ৪ লক্ষেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। তিনি অতীতে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ২০১০ ও ২০১৬ সালে কংগ্রেসের টিকিটে উত্তর প্রদেশ বিধান পরিষদে নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন এবং ২০১৯ সালে সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে রায়বরেলী থেকে নির্বাচনে লড়েন, যেখানে তিনি ১.৬৭ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
বিজেপি নেতা দিনেশ প্রতাপ সিং দাবি করেছেন, রাহুল গান্ধী এবং তাঁর দল মহাগঠবন্ধনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মায়ের বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্যের সমর্থন করছেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের মন্তব্য দেশের মায়েদের অপমান।
রাহুল গান্ধীকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে।” বিপরীতে, কংগ্রেস নেতারা এই বিক্ষোভকে বিজেপির রাজনৈতিক কৌশল বলে অভিহিত করেছেন। তারা দাবি করেছেন, এই ধরনের প্রতিবাদ কংগ্রেসের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার প্রতি বিজেপির ভয়ের প্রকাশ।
১৫ সেপ্টেম্বরের তারিখ আর বাড়ানো হবে না, স্পষ্ট করল অর্থ মন্ত্রক
এই ঘটনা রায়বরেলীতে কংগ্রেস এবং বিজেপির মধ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে আরও তীব্র করেছে। রায়বরেলী গান্ধী পরিবারের ঐতিহ্যবাহী গড় হিসেবে পরিচিত, যেখানে ফিরোজ গান্ধী, ইন্দিরা গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধী দীর্ঘদিন সাংসদ ছিলেন। রাহুল গান্ধীর এই সফর এবং বিক্ষোভের ঘটনা আগামী দিনে রাজনৈতিক আলোচনাকে আরও উত্তপ্ত করতে পারে।