মহিলা বিশ্বকাপে জয়ের পর মমতার পোস্টে বিজেপির কটাক্ষ, ‘রাত ১২টা পর্যন্ত খেলল তারা!’

bjp-slams-mamata-government-calling-west-bengal-paradise-for-rapists-bengal-politics

ভারতের মহিলা ক্রিকেট দলের ঐতিহাসিক জয় ঘিরে দেশজুড়ে উচ্ছ্বাস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৫২ রানে জয় ছিনিয়ে নিয়ে প্রথমবার আইসিসি মহিলা বিশ্বকাপের ট্রফি ঘরে তুলেছে ‘উইমেন ইন ব্লু’। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা এবং বিশিষ্টজনেরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হরমনপ্রীত কাউরদের। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee controversy)।

Advertisements

ম্যাচ শেষ হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স (X)-এ লিখেছিলেন, “সমগ্র দেশ আজ গর্বিত। মহিলা ক্রিকেট দলের অসাধারণ পারফরম্যান্স আমাদের সবার অনুপ্রেরণা। তোমরা প্রমাণ করেছো, ভারতীয় মেয়েরা বিশ্বজয়ের ক্ষমতা রাখে।”

   

তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই পোস্ট ঘিরেই তৈরি হয় নতুন রাজনৈতিক বিতর্ক। বিজেপি পশ্চিমবঙ্গ শাখা মমতার টুইট উদ্ধৃত করে তির্যক ভঙ্গিতে লিখেছে, “ওএমজি, তারা তো রাত ১২টা পর্যন্ত খেলছিল! কিন্তু আপনি তো বলেছিলেন, রাত ৮টার মধ্যে বাড়ি ফিরে যেতে!”

এই মন্তব্য সরাসরি ইঙ্গিত দেয় দুর্গাপুরের গণধর্ষণ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের দিকে। গত অক্টোবর মাসে এক বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মমতা বলেছিলেন, “ছাত্রীটি বেসরকারি কলেজে পড়ত। তারা কেন রাত ১২.৩০টার সময় বাইরে গেল? ওই কলেজগুলির নিজেদের দায়িত্ব আছে ছাত্রছাত্রীদের দেখাশোনার। ওই এলাকা জঙ্গলের মতো। সাবধান থাকতে হয়।”

এই মন্তব্যের পর বিজেপি থেকে শুরু করে মহিলা সংগঠন পর্যন্ত ক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া বলেন, “যে মুখ্যমন্ত্রী মেয়েদের রাতের পর বাইরে যেতে নিষেধ করেন, তাঁর নৈতিক অধিকার নেই মুখ্যমন্ত্রী থাকার।”

Advertisements

আরেক বিজেপি মুখপাত্র শহজাদ পুনাওয়ালা বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীকে দায়ী করেন, অপরাধীদের নয়। পার্ক স্ট্রিট থেকে সন্দেশখালি— প্রতিবার একই ধারা।”

দুর্গাপুর গণধর্ষণ কাণ্ডে ইতিমধ্যে পুলিশ ছয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে, যার মধ্যে রয়েছে মূল অভিযুক্ত ফিরদৌস শেখ ও ভুক্তভোগীর সহপাঠী বন্ধু। তদন্তে উঠে এসেছে, ওই রাতে ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে নির্জন এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপি এখন মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক অভিনন্দন বার্তাকে তাঁর “দ্বিচারিতা”র প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরছে। একদিকে মমতা মেয়েদের কৃতিত্বে গর্ব প্রকাশ করছেন, অন্যদিকে রাতের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন— এই বিপরীত অবস্থান নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক তরজা।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহিলাদের এই ঐতিহাসিক জয়ে বলেন, “এই জয় ভারতের প্রতিটি তরুণীকে আত্মবিশ্বাস জোগাবে। আমাদের মেয়েরা ইতিহাস লিখেছে।”