কর্নাটকের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফের উত্তেজনার সঞ্চার। ডিসেম্বর মাসে বেলাগাভিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীতকালীন অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া (Siddaramaiah government) নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে চলেছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার উদুপিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই ঘোষণা করেন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এবং প্রাক্তন মন্ত্রী ভি সুনীল কুমার।
তিনি জানান, “কংগ্রেস সরকার নিজেদের ভিতর থেকেই ধসে পড়ছে। আমরা সরকার গঠনের দাবি করব না। তারা নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভাঙবে।” তার অভিযোগ, গত দুই মাস ধরে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং উপমুখ্যমন্ত্রী ডি.কে. শিবকুমারের মধ্যে নেতৃত্ব পরিবর্তন নিয়ে তীব্র টানাপোড়েন চলছে। এই অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের জেরেই রাজ্যের প্রশাসন কার্যত থমকে গেছে।
বিজেপি নেতার দাবি, প্রায় ৯০ শতাংশ মন্ত্রী বিধান সৌধে উপস্থিতই থাকছেন না। সিদ্দারামাইয়া নাকি মাইসুরুতেই সীমাবদ্ধ, আর শিবকুমার বারবার দিল্লি সফরে ব্যস্ত। সুনীল কুমার কটাক্ষ করে বলেন, “এই সরকারের ভিতেই আস্থাহীনতার বাতাবরণ। মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভা ও বিধায়কদের মধ্যে কোনও সমন্বয় নেই।”
তিনি জানান, বেলাগাভি অধিবেশনে বিজেপি সরকারকে ঘিরে সব ব্যর্থতা তুলে ধরবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করবে। পাশাপাশি এনডিএ-র সহযোগী দলগুলোর সঙ্গেও এই বিষয়ে আলোচনা চলছে।
সম্প্রতি কংগ্রেস শিবিরে নেতৃত্ব পরিবর্তন নিয়ে যে জল্পনা ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে, তা নিয়েও কটাক্ষ করেন সুনীল কুমার। তাঁর বক্তব্য, “কংগ্রেস নিজেদেরই মানুষের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। খাড়া্গেকে পর্যন্ত উপেক্ষা করা হচ্ছে।”
তার দাবি, বিজেপি ক্ষমতা দখলের কোনো তাড়াহুড়ো করছে না। বরং তারা অপেক্ষা করছে কংগ্রেস সরকার নিজস্ব অস্থিরতায় ভেঙে পড়বে। তিনি বলেন, “এই সরকার নিজের ওজনেই ধসে পড়বে। আমরা কেবল সত্যিটা জনগণের সামনে আনব।”
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, কর্নাটকে কংগ্রেস সরকার শুরু থেকেই অভ্যন্তরীণ চাপে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রিত্ব রোটেশন ইস্যু নিয়ে সিদ্দারামাইয়া ও শিবকুমারের মধ্যে দ্বন্দ্ব বহুবার সামনে এসেছে। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্ব বলছে সরকার স্থিতিশীল, কোনো পরিবর্তনের পরিকল্পনা নেই।
এখন সবার নজর ডিসেম্বরের বেলাগাভি অধিবেশনের দিকে। বিজেপি যে কংগ্রেস সরকারকে কোণঠাসা করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে চলেছে, তা একপ্রকার নিশ্চিত। সরকার কতটা চাপের মুখে পড়ে, মুখ্যমন্ত্রী-উপমুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সবকিছুই নির্ভর করছে আসন্ন অধিবেশনের ওপর।
