কর্নাটকে শাসক দল বিজেপির অন্দরে অশান্তি ক্রমশই বাড়ছে। দলের মধ্যেই শুরু হয়েছে প্রবল কোন্দল। মাত্রা একদিন আগেই ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষ চাওয়ার কারণে অভিযুক্ত হয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পা। এবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অরাগা জ্ঞানেন্দ্রর বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগ উঠল।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থতার কারণে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জ্ঞানেন্দ্রকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানালেন দলের প্রবীণ বিধায়ক বসনগৌড়া ইয়াতনাল।
রবিবার বসনগৌড়া সংবাদমাধ্যমকে বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জ্ঞানেন্দ্র রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন। রাজ্যে অপরাধ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। অপরাধীরা প্রকাশ্যেই বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অবিলম্বে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের উচিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এখনই সরিয়ে দেওয়া।
সম্প্রতি হিজাব বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে কর্নাটকের বিভিন্ন স্থানে লাগাতার সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে চলেছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নেমেছে।
রাজ্যের চলতি অশান্তি পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষও ক্ষুব্ধ। এরই মধ্যে প্রবীণ বিজেপি বিধায়ক বসনগৌড়া যেভাবে সংবাদম্যমের সামনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে সরানোর দাবি তুলেছেন তাতে বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে। যথারীতি বসনগৌড়ার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছ কংগ্রেস ও জেডিএস।
কংগ্রেসের দাবি, তারা আগেই জানিয়েছিল রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর দায়িত্ব সামলাতে পারছেন না। কিন্তু বিজেপি সেই কথা কানে তোলেনি। এবার বসনগৌড়ার মত বিজেপি বিধায়ক সেই একই কথা বললেন। এখন দেখা যাক মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্বাই কী পদক্ষেপ করেন।
এর আগে গত সপ্তাহে প্রবীণ বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পাও নিজের দলের সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন। রাজ্যে বসবাসকারী মুসলিম সম্প্রদায় যাতে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকারকে সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে আর্জি জানিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যে কংগ্রেস-জেডিএস সরকারকে সরিয়ে বিজেপিকে ক্ষমতায় ফেরানোর ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা ছিল বিএস ইয়েদুরাপ্পার। কিন্তু মাঝপথে ইয়েদুরাপ্পাকে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা মেনে নিতে পারছেন না এই প্রবীণ নেতা ও তাঁর অনুগামীরা। তাই বিধানসভা ভোটের আগে ফের দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তাঁরা সুর চড়াতে শুরু করেছেন ইয়েদুরাপ্পা। তবে শুধু ইয়েদুরাপ্পা একা নন, ভোট যত এগিয়ে আসবে ততই কর্নাটক বিজেপির মধ্যে আশান্তিও বাড়বে।