অফিস কক্ষে বিজেপি জনপ্রতিনিধির ঝুলন্ত দেহ, এলাকায় চাঞ্চল্য

তিরুবনন্তপুরমের থিরুমালা ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর কে. অনিল কুমার শনিবার সকালে তাঁর অফিস কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, সকাল প্রায় সাড়ে…

BJP councilor death

তিরুবনন্তপুরমের থিরুমালা ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর কে. অনিল কুমার শনিবার সকালে তাঁর অফিস কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, সকাল প্রায় সাড়ে আটটা থেকে নয়টার মধ্যে তাঁর দেহ প্রথমে নজরে আসে। তড়িঘড়ি করে স্থানীয়রা খবর দেন থানায় এবং পুলিশ এসে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। ঘটনাটিকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে সন্দেহ করা হলেও, সঠিক কারণ উদঘাটনের জন্য সম্পূর্ণ তদন্ত শুরু হয়েছে।

কে. অনিল কুমার শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধি ছিলেন না, তিনি ভলিয়াসালা ফার্ম সোসাইটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছিলেন। এই সোসাইটি প্রায় ছ’কোটি টাকারও বেশি ঋণ বিতরণ করেছিল। সাম্প্রতিককালে এই সংস্থার আর্থিক অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল এবং একাধিক বিনিয়োগকারী তাঁদের অর্থ ফেরতের দাবি তুলেছিলেন। এই আর্থিক বিতর্ককে কেন্দ্র করে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়েছিল। থাম্পানুর থানায় নথিভুক্ত মামলার ভিত্তিতে অনিল কুমারকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল বলে জানা গেছে।

   

আর্থিক চাপে মানসিক অস্থিরতা:

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে তিনি নিয়মিত অফিসে উপস্থিত ছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই অফিসকর্মীরা তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। অনুমান করা হচ্ছে, ফার্ম সোসাইটির আর্থিক জটিলতা ও তার জেরে বিভিন্ন মহলের চাপ তাঁকে মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছিল।

কিছু সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে, যেখানে বিজেপি নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে কটাক্ষ করা হয়েছে। তবে পুলিশ এই নোটের অস্তিত্বের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই নিশ্চিত করেনি। পুলিশের এক কর্তা সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, “প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে।”

বিজেপির প্রতিক্রিয়া: BJP councilor death

ত্রিবান্দ্রামের বিজেপি জেলা সভাপতি ভি.ভি. রাজেশ জানিয়েছেন, “ফার্ম সোসাইটির একাধিক ঋণগ্রহীতা ধার শোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর ফলেই আর্থিক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। অনিল কুমার সেই চাপ সহ্য করতে পারেননি। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক চাপে ছিলেন।” তবে সম্ভাব্য সুইসাইড নোটে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রসঙ্গে রাজেশ কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

Advertisements

রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য:

একজন সক্রিয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত অনিল কুমারের আকস্মিক মৃত্যু এলাকায় গভীর চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। রাজনৈতিক মহলেও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে—তিনি সত্যিই আত্মহত্যা করেছেন, নাকি অন্য কোনো জটিল কারণ রয়েছে এর পেছনে। পুলিশি তদন্তের পরই সেই উত্তর স্পষ্ট হবে।

অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ মনে করছেন, আর্থিক অনিয়মের চাপ এবং মামলার জটিলতা মিলেই তিনি চরম পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন। তবে অনেকে আবার জোর দিয়ে বলছেন, ঘটনার সম্পূর্ণ সত্য সামনে আনতে প্রশাসনের স্বচ্ছ তদন্ত প্রয়োজন।

বর্তমানে অনিল কুমারের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতি অনুযায়ী আগামী দিনে আরও তথ্য প্রকাশ্যে আসবে।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় বিজেপি শিবিরে নেমে এসেছে গভীর শোক। পরিবারের সদস্যরাও ভেঙে পড়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন ও দলীয় সহকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রয়াত কাউন্সিলরের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।