রামের অযোধ্যার পর বিষ্ণুর বদ্রীনাথেও চরম ব্যর্থ! এবার আরএসএসের শাসন শুরু বিজেপিতে?

সদ্যসমাপ্ত লোকসভায় রাম রাজ্যেই হার (BJP By Election Result)। আর এবার লোকসভার পরপরই বিধানসভার উপনির্বাচনে বিষ্ণুর সাম্রাজ্যও মুখ ফেরালো বিজেপির থেকে (BJP By Election Result)।…

Image of a news headline showing the results of a bypoll election, with the Bharatiya Janata Party (BJP) faces a massive failure. The image shows a graphic with election data and a photo of a victorious leader in tensed mode.

সদ্যসমাপ্ত লোকসভায় রাম রাজ্যেই হার (BJP By Election Result)। আর এবার লোকসভার পরপরই বিধানসভার উপনির্বাচনে বিষ্ণুর সাম্রাজ্যও মুখ ফেরালো বিজেপির থেকে (BJP By Election Result)। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, বিজেপির হিন্দুত্ববাদী জয়রথের চাকা কী ক্রমশই ধ্বসে যেতে বসেছে (BJP By Election Result)?

একটু ভালোমতো লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ২০১৯ এর নির্বাচনের আগে বিজেপির অস্ত্র ছিল কট্টর দেশ ভক্তি। উরি, পুলওয়াম্‌ বালাকোট আর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকে বিজেপির স্ট্রাইক রেট অনায়াসে ৩০০ পার করে দিয়েছিল। ২০২৪ এর নির্বাচনে আর সেই দেশ ভক্তির আবেগ নয়, এবার বিজেপির অস্ত্র ছিল রামভক্তি। রাম মন্দির উদ্বোধনকে রীতিমতো ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’- এর পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপির কার্যকর্তারা। কিন্তু বাংলয় একটা প্রবাদ আছে, ‘প্রদীপের নিচেই অন্ধকার’। ২৪-এর লোকসভাতে রাম রাজ্য অযোধ্যাতেও হারতে হয়েছে বিজেপির প্রার্থীকে। সেই সময়ই প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি কি তাহলে কাজে লাগছে না কোনওভাবেই?

   

Thakurnagar: ছোটো বোনের জয়েই কী নিজের ‘সর্বনাশ’ দেখছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু?

এই প্রশ্নের ঠিকঠাক মতো উত্তর পাওয়ার আগেই, বিজেপির থিঙ্ক-ট্যাংকের গালে যেন সপাটে চড় মারল উত্তরাখন্ডের বদ্রীনাথ। যদিও উত্তরাখণ্ডের বিধানসভা এই মুহূর্তে বিজেপির হাতে। কিন্তু তবুও উপনির্বাচনের ট্রেন্ড ভেঙে কংগ্রেস জয়ী হয়েছে বদ্রীনাথ আসনটিতে (BJP By Election Result)। আরও মজার বিষয়, কংগ্রেসের জেতা এই আসনে প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়কই এবার বিজেপির হয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি।

কিন্তু এই হারের পর, আরএসএস কী আরও সক্রিয় হবে বিজেপির লাগাম টানবার ক্ষেত্রে? এমনিতেই যা শোনা যাচ্ছে যে ২০২৪-এ কাঙ্খিত সাফল্য না পাওয়াতে আরএসএস ক্ষুব্ধ। এমনকী বিজেপির উগ্র হিন্দুত্ববাদ এর অ্যাজেন্ডা নিয়েও তাঁরা নাকি নাখুশ! সেই সাথে বিরোধীদের সাথে শাসকের সম্পর্কের অবনতিতেও আরএসএস কর্তৃপক্ষ বেশ ভাল রকমেরই ক্ষুব্ধ। এই অবস্থাতে দেশে হিন্দুত্ববাদের রাজনীতির আমদানিকারী আরএসএস কী বিজেপির এই নয়া হিন্দুত্বের সংজ্ঞা মুছে ফেলারই চেষ্টা করবে?

শোনা যাচ্ছে বাংলার ক্ষেত্রেও আরএসএস এবার নাক গলানো শুরু করছে। বাংলায় দুর্নীতি, মুসলিম তোষণের মতো একাধিক ইস্যুতে উর্বর জমি থাকা সত্ত্বেও কেন কোন কিছুই করা যাচ্ছে না তা নিয়ে চিন্তিত তাঁরা। তার উপরে আবার উপনির্বাচনে বিজেপির হাতে থাকা তিন তিনটি আসনও হাতছাড়া হয়েছে। উপনির্বাচনে রাম বিষ্ণুর পর দুর্গার সাম্রাজ্যেও বিজেপির অবস্থা একেবারে শোচনীয়।

ফলে এবার রাজনীতিতে হিন্দুত্বের বদলে কী অন্য কোনও পন্থা কি খুঁজতে হবে বিজেপিকে? উগ্র হিন্দুত্বের বদলে কংগ্রেসের নরম হিন্দুত্বের মনোভাবকে কী পছন্দ করছেন দেশের আমজনতা? দুটো প্রশ্নেরই ঠিকঠাক উত্তর পেতে আরও বেশ কিছুটা সময় লাগবে। তবে এই মুহূর্তের ট্রেন্ড থেকে এটুকু স্পষ্ট করে বলাই যায় ধর্মের রাজনীতিতে যে সাফল্য চেয়েছে বিজেপি, তা বোধ হয় তাঁদের ছোঁয়া হবে না। সে ক্ষেত্রে দ্রুত স্ট্র্যাটেজি চেঞ্জ না করলে আগামী দিনে পদ্ম বনে আরও বড়সড় সাইক্লোন আসতে পারে।

কোনওক্রমে মানরক্ষা, হারতে হারতে অল্প মার্জিনে ফুটল পদ্ম

এমনিতেই টানা তিন বছরের পর চার বছর কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকার নজির কোনো রাজনৈতিক দলের নেই। সে ক্ষেত্রে আগামী দিনে সরকার বিরোধী হাওয়া যে প্রবল হতে চলেছে তা এখনই বোঝা যাচ্ছে। নতুন নজির সৃষ্টি করতে হলে জনগণের নজর ঘোরানোর মত কোনও কাজ করতে হবে। মোদী শাহরা সেই কাজ কী করতে পারবেন? নাকি এতকাল ধরে তাঁরা আরএসএসকে সরিয়ে নিজেদের যে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করেছেন বলে অভিযোগ। সেই আধিপত্য এবার তাঁদের হাত থেকে কেড়ে নিয়ে বকলমে নাগপুরের নির্দেশেই তাঁদেরকে চলতে হবে?

সম্ভাবনা প্রচুর রয়েছে। বলা হয় রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প। আর রাজনীতির এই সম্ভাবনাময় ময়দানে বিজেপির বাউন্স ব্যাক এর সম্ভাবনা কতটা, সেটা আগামী দিনে বিজেপির রাজনীতির স্ট্র্যাটেজিই বুঝিয়ে দেবে।