Bishnu Deo Sai Dismisses Conspiracy Allegations in Mahadev Betting App Scam as ‘Baseless
ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই (bishnu deo sai) শনিবার কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের অভিযোগকে “ভুল এবং ভিত্তিহীন” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। বাঘেল দাবি করেছিলেন, বিজেপি মহাদেব বেটিং অ্যাপ কেলেঙ্কারির নামে তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করছে।
বাঘেলের দাবি
সাই এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “বাঘেলের দাবি যে বিজেপি তাঁকে রাজনৈতিকভাবে হত্যা করতে চায় এবং মহাদেব অ্যাপের মামলা একটি ষড়যন্ত্র, তা সম্পূর্ণ ভুল। তদন্তে দেখা গেছে, কয়লা কেলেঙ্কারি, মদ কেলেঙ্কারি এবং মহাদেব অ্যাপ কেলেঙ্কারিতে তাঁর লোকজন জড়িত। তাঁরা জেলে রয়েছেন। যদি এসব মিথ্যা হয়, তবে তাঁদের জামিন কেন হচ্ছে না?”
সাই (bishnu deo sai) আরও বলেন
সাই (bishnu deo sai) আরও বলেন, “বাঘেলের শাসনকালে মদের দোকানে দুটি কাউন্টার ছিল। একটির হিসাব সরকারের কাছে যেত, আর অন্যটির হিসাব তাঁর মন্ত্রীদের কাছে।” মহাদেব বেটিং অ্যাপ কেলেঙ্কারিতে বাঘেলের বিরুদ্ধে ‘সুরক্ষার টাকা’ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (সিবিআই) ১ এপ্রিল এই মামলায় প্রথম তথ্য রিপোর্ট (এফআইআর) প্রকাশ করে, যেখানে বাঘেল-সহ ২১ জনের নাম অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।
মহাদেব অ্যাপ কেলেঙ্কারি: তদন্তের বিবরণ
সিবিআই-এর এফআইআর অনুযায়ী, মহাদেব অনলাইন বুক অবৈধভাবে বেটিং পরিষেবা চালাচ্ছিল। অভিযোগে বলা হয়েছে, এই প্ল্যাটফর্ম পোকার, কার্ড গেম, স্পোর্টস বেটিং-সহ বিভিন্ন ‘লাইভ গেম’-এ অবৈধ বাজি সুবিধা প্রদান করত।
২০১৯-২০ সালে কোভিড-১৯ লকডাউনের সময় এই অ্যাপ জনপ্রিয়তা লাভ করে। এফআইআর-এ রবি উপ্পল, শুভম সোনি, সৌরভ চন্দ্রকর, অনিল আগরওয়াল, হরিশঙ্কর তিব্রেওয়াল-সহ ২১ জনের নাম রয়েছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০(বি) (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৪২০ (প্রতারণা), ৪৬৭, ৪৬৮ ধারা এবং ছত্তিশগড় জুয়া নিষেধ আইনের বিভিন্ন ধারা।
গত ২৬ মার্চ সিবিআই বাঘেলের বাসভবনে ১৪ ঘণ্টার তল্লাশি চালায় এবং তিনটি ফোন জব্দ করে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, মহাদেব অ্যাপের প্রোমোটাররা অবৈধ বেটিং নেটওয়ার্ক চালানোর জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের ‘সুরক্ষার টাকা’ দিয়েছিল। এছাড়া, ‘স্কাইএক্সচেঞ্জ’ নামে আরেকটি ওয়েবসাইট মহাদেব অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইডি-র নজরে গান্ধী পরিবার! ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সম্পত্তি দখলের উদ্যোগ
বাঘেলের অভিযোগ ও প্রতিক্রিয়া
বাঘেল দাবি করেছেন, তাঁর সরকার ২০২২ সালের মার্চে মহাদেব অ্যাপের বিরুদ্ধে প্রথম এফআইআর দায়ের করেছিল। তিনি বলেন, তাঁর শাসনকালে ৭৪টি এফআইআর দায়ের, ২০০-র বেশি গ্রেপ্তার এবং ২০০০-এর বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকার এই অ্যাপের প্রধান অভিযুক্ত সৌরভ চন্দ্রকর এবং রবি উপ্পলকে সুরক্ষা দিচ্ছে, যারা বর্তমানে দুবাইয়ে রয়েছেন। বাঘেল বলেন, “যদি অ্যাপটি অবৈধ হয়, তবে এটি কেন এখনও চলছে? এর মানে মোদি, শাহ এবং সাই তাদের সুরক্ষা দিচ্ছেন।”
ধর্মান্তরণ ও সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিয়ে সাই
মুখ্যমন্ত্রী সাই (bishnu deo sai) ধর্মান্তরণকে ছত্তিশগড়ের জন্য ‘কলঙ্ক’ বলে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমার এলাকা জশপুরে মিশনারিরা দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে ধর্মান্তরণ ঘটাত। আমরা ক্ষমতায় এসে এটি নিয়ন্ত্রণ করেছি। কিন্তু এখন তারা ‘চঙ্গাই সভা’র নামে রোগমুক্তির দাবি করে ধর্মান্তরণের চেষ্টা করছে।” তিনি জানান, এই কার্যক্রম খ্রিস্টান মিশনারিদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে সাই বলেন, তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর সাংবাদিকদের উপর কোনও হামলা হয়নি। তিনি বিজাপুরে একটি সাংবাদিক হামলার ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, “রাজ্য সরকার তৎক্ষণে ব্যবস্থা নিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে।” বাঘেলের শাসনকালে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটলেও তাঁর সরকার এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
খনির সম্পদ ও মাফিয়া নিয়ন্ত্রণ
ছত্তিশগড়ের খনিজ সম্পদের প্রসঙ্গে সাই বলেন, রাজ্যে লৌহ আকরিক, কয়লা, টিন, সোনা এবং হীরার মতো সম্পদ প্রচুর। তিনি জানান, খনির মাফিয়াদের প্রভাব এখন অনেকটাই কমেছে এবং পরিস্থিতি উন্নত হয়েছে। তিনি বলেন, “এখন সবকিছু সুষ্ঠূভাবে চলছে।”
রাজনৈতিক তরজা
মহাদেব অ্যাপ কেলেঙ্কারি ছত্তিশগড়ের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বাঘেলের দাবি, তাঁকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে এবং তিনি এই মামলায় নিজেকে ‘হুইসলব্লোয়ার’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, তাঁর সরকারই প্রথম এই কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিল।
অন্যদিকে, সাই এবং বিজেপি দাবি করছে, বাঘেলের শাসনকালে দুর্নীতি বেড়েছিল, যার ফলে তাঁর সহযোগীরা জেলে রয়েছেন।
তদন্ত এখনও চলছে, এবং সিবিআই জানিয়েছে, তারা এই মামলায় জড়িত সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এই ঘটনা রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে, এবং আগামী দিনে এই মামলার ফলাফল ছত্তিশগড়ের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।