ভারতীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইউএন এ অপ্রস্তুত বিলাওয়াল

নিউইয়র্কে সংযুক্ত রাষ্ট্রের (bilawal) (UN) সদর দপ্তরে একটি প্রেস কনফারেন্সে পাকিস্তানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (PPP) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ভারতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন…

bilawal puzzled

নিউইয়র্কে সংযুক্ত রাষ্ট্রের (bilawal) (UN) সদর দপ্তরে একটি প্রেস কনফারেন্সে পাকিস্তানের প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (PPP) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি ভারতের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও প্রমাণহীন অভিযোগ তুলে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন।

তিনি (bilawal)দাবি করেছিলেন যে ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়কে নিপীড়ন করা হচ্ছে এবং তাদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। কিন্তু একজন সাংবাদিক তাঁর এই দাবির তাৎক্ষণিক ফ্যাক্ট-চেক করে তাঁকে নীরব করে দেন।

   

সাংবাদিক বলেন, “স্যার, আমি উভয় পক্ষের ব্রিফিং দেখেছি, এবং যতদূর আমার মনে আছে, ভারতীয় মুসলিম সামরিক অফিসাররা প্রেস কনফারেন্স পরিচালনা করছিলেন…”। এই মন্তব্যে বিলাওয়াল এতটাই বিচলিত হয়ে পড়েন যে তিনি সাংবাদিককে প্রশ্ন শেষ করতে না দিয়ে মাঝপথে বাধা দেন।

প্রেস কনফারেন্সে বিলাওয়ালের দাবি (bilawal)

৪ জুন, ২০২৫-এ সংযুক্ত রাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত এই প্রেস কনফারেন্সে বিলাওয়াল ভুট্টো (bilawal)ভারতের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে বলেন যে, জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে গত ২২ এপ্রিল ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলা, যাতে ২৬ জন নিহত হয়েছিল, তাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনি (bilawal)দাবি করেন যে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এবং তাদের ‘শয়তান’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন যে, ভারত বিনা তদন্তে এবং প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে এই হামলার জন্য দায়ী করছে, যদিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই ঘটনার তদন্তে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

সাংবাদিকের ফ্যাক্ট-চেক

বিলাওয়ালের (bilawal)এই বক্তব্যের জবাবে একজন বিদেশি সাংবাদিক তাঁর দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ধরেন। সাংবাদিক বলেন, “আপনি বলেছেন যে পাহালগামে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলাকে ভারতে মুসলিমদের বদনাম করার জন্য রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

কিন্তু স্যার, আমি উভয় পক্ষের ব্রিফিং দেখেছি, এবং আমার মনে আছে যে ভারতীয় পক্ষের ব্রিফিংয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন মুসলিম সামরিক অফিসার।” এই মন্তব্যে বিলাওয়াল হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং কোনো প্রত্যুত্তর দিতে পারেননি। তিনি শুধু বলেন, “অপারেশনের বিষয়ে আপনি একেবারে ঠিক বলেছেন,” এবং সাংবাদিককে আরও প্রশ্ন করতে বাধা দেন।

ভারতীয় মুসলিম অফিসারদের ভূমিকা

সাংবাদিকের উল্লেখিত ব্রিফিংয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কোরের কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং ভারতীয় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার পাইলট উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী। ৭ মে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত এই প্রেস কনফারেন্সে তাঁরা পাহালগাম হামলার জবাবে ভারতের প্রতিশোধমূলক অভিযান

‘অপারেশন সিঁদুর ’-এর বিষয়ে তথ্য তুলে ধরেন, যাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে জইশ-এ-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈয়বার মতো জঙ্গি সংগঠনের নয়টি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়। এই ব্রিফিং ভারতীয় মুসলিম সামরিক অফিসারদের উচ্চপদে দায়িত্ব পালনের প্রমাণ বহন করে, যা বিলাওয়ালের ভারতে মুসলিম নিপীড়নের দাবিকে সম্পূর্ণ খণ্ডন করে।

বিলাওয়ালের বিব্রতকর পরিস্থিতি

সাংবাদিকের এই ফ্যাক্ট-চেক বিলাওয়ালকে স্পষ্টভাবে অস্বস্তিতে ফেলে দেয়। তিনি কোনো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দিতে পারেননি এবং তাঁর বক্তব্যের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়ে। সাংবাদিকের প্রশ্নে স্পষ্ট হয় যে ভারতীয় মুসলিমরা দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন, যা বিলাওয়ালের অভিযোগের বিপরীত চিত্র তুলে ধরে।

Advertisements

এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে অনেকে বিলাওয়ালের ‘মিথ্যা প্রচারণার’ সমালোচনা করেন। এক্স-এ একটি পোস্টে বলা হয়, “ইউএন-এ বিলাওয়াল ভুট্টোর ইসলামোফোবিয়া সম্পর্কিত ভারত-বিরোধী দাবি ব্যর্থ হয়েছে।”

পাকিস্তানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা

বিলাওয়াল ভুট্টোকে (bilawal)পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক মঞ্চে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার জন্য প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিল। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁকে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন, যাতে ড. মুসাদ্দিক মালিক, খুররম দস্তগীর খান, শেরি রেহমান এবং রাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারের মতো নেতারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এই প্রতিনিধিদলের লক্ষ্য ছিল ভারতের অপারেশন সিন্দুরের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের অবস্থান তুলে ধরা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় করা। তবে, বিলাওয়ালের এই বক্তব্য এবং সাংবাদিকের ফ্যাক্ট-চেক তাঁদের এই প্রচেষ্টায় বড় ধরনের ধাক্কা দেয়।

ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক উত্তেজনা

এই ঘটনা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ঘটেছে। পহেলগাঁও
হামলার পর ভারত ‘অপারেশন সিন্দুর’ পরিচালনা করে, যাতে পাকিস্তানের ছয়টি যুদ্ধবিমান, দুটি উচ্চমূল্যের নজরদারি বিমান, দশটির বেশি সশস্ত্র ড্রোন এবং একটি সি-১৩০ হারকিউলিস বিমান ধ্বংস হয়।

ভারতের এই প্রতিশোধমূলক হামলাকে পাকিস্তান ‘অন্যায় আগ্রাসন’ হিসেবে চিহ্নিত করে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতে চেষ্টা করে। বিলাওয়ালের ইউএন প্রেস কনফারেন্স ছিল এই প্রচেষ্টার একটি অংশ, কিন্তু তাঁর মিথ্যা দাবি এবং সাংবাদিকের তাৎক্ষণিক খণ্ডন পাকিস্তানের কূটনৈতিক প্রচারণাকে দুর্বল করে দেয়।

২০২৬ সালের মধ্যে ডেলিভারি, ভারতের বন্ধু রাশিয়া পাঠাবে এই বজ্র অস্ত্র

বিলাওয়ালের বিতর্কিত ইতিহাস

বিলাওয়াল ভুট্টো (bilawal)এর আগেও ভারতের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। ২০২২ সালে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘গুজরাটের কসাই’ বলে সম্বোধন করেছিলেন, যার জবাবে ভারত পাকিস্তানকে ‘সন্ত্রাসের বিশেষ অঞ্চল’ হিসেবে অভিহিত করে। ২০২৫ সালের এপ্রিলে তিনি সিন্ধু জল চুক্তি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বলেছিলেন, “হয় সিন্ধু নদীতে আমাদের জল প্রবাহিত হবে, নয়তো তাদের রক্ত প্রবাহিত হবে।” এই বক্তব্য ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে।

ইউএন-এ বিলাওয়াল ভুট্টোর (bilawal)ভারত-বিরোধী মিথ্যা দাবি এবং সাংবাদিকের ফ্যাক্ট-চেক পাকিস্তানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার দুর্বলতা উন্মোচন করেছে। ভারতীয় মুসলিম সামরিক অফিসারদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এবং অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য ভারতের সমন্বিত ও শক্তিশালী অবস্থান প্রকাশ করে। এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের চলমান উত্তেজনার একটি প্রতিফলন, যেখানে কূটনৈতিক মঞ্চে সত্য ও প্রমাণের গুরুত্ব অপরিসীম।