বিহারের (Bihar) আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে, শাসক জোট ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) এর মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে এক বড় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এই অচলাবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) নেতা চিরাগ পাসোয়ান। দুই নেতা একে অপরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চাপ তৈরি করেছেন, বিশেষ করে দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসন, সোনবরসা এবং রাজগীর নিয়ে।
এনডিএর মধ্যে এই দ্বন্দ্ব রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে, যা দলের নেতাদের মধ্যে একাধিক জরুরি বৈঠক এবং আলোচনা শুরু করতে বাধ্য করেছে। বিশেষ করে, সোনবরসা আসন নিয়ে তীব্র অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এই আসনটি বর্তমানে রত্নেশ সাদা দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হচ্ছে, যিনি নীতীশ কুমারের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর হিসেবে পরিচিত। কিন্তু চিরাগ পাসোয়ান দাবি করেছেন, সোনবরসা সহ বেশ কয়েকটি আসন, যা বর্তমানে জনতা দল ইউনাইটেড (JDU) এর দখলে, তা তার দলকে দেওয়া হোক। চিরাগ পাসোয়ানের এই দাবির ফলে এনডিএর মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্রতর হয়ে উঠেছে।রাজগীর আসনটি নীতীশ কুমারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নালন্দা জেলার একটি কেন্দ্রীয় আসন এবং নীতীশ কুমারের গৃহ জেলা। নীতীশ কুমার ও তার দল JDU দীর্ঘদিন ধরে নালন্দার এই আসনে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। রাজগীর আসনটি বর্তমানে JDU নেতা কৌশল কিশোর দ্বারা প্রতিনিধিত্ব করা হচ্ছে। এর ফলে, চিরাগ পাসোয়ানের রাজগীর আসনটিও দাবি করা এনডিএর মধ্যে নতুন রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজগীর এবং সোনবরসা আসনগুলোতে এত বেশি উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়া, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিহারের রাজনৈতিক মঞ্চে এক ধরনের সুনামির মতো প্রভাব ফেলবে। চিরাগ পাসোয়ান এবং নীতীশ কুমারের মধ্যে এই বিরোধ আরও বড় আকারে ছড়িয়ে পড়লে, এনডিএর নির্বাচনী মঞ্চের একতা ও শক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এনডিএ-র আসন বণ্টন নিয়ে একাধিক বৈঠক চলছে, তবে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। দলের মধ্যে এই অচলাবস্থা যত বাড়ছে, ততই উদ্বেগ বাড়ছে। একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে যে, নীতীশ কুমারের বাড়িতে আজ এক জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে, যাতে চিরাগ পাসোয়ানের দাবিগুলি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যায়। এই বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা নিয়ে সকলের নজর থাকবে।
চিরাগ পাসোয়ান, যিনি বিহারের নির্বাচনে বিহার ফার্স্ট, বিহার কায়েক্ত স্লোগান দিয়ে প্রবলভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন, তার দাবিতে এনডিএর নেতারা সম্মতি না জানালে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে। এমনকি, চিরাগ পাসোয়ান তার দলকে জোট থেকে আলাদা করার হুমকিও দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়লে, নির্বাচনী ফলাফলেও বিরাট পরিবর্তন আসতে পারে।