সামাজিক সুরক্ষায় চমক! বাড়ছে পেনশন! মাসে ১১০০ টাকা দেবে রাজ্য সরকার

বিহারের রাজনীতিতে নির্বাচনের আগে বড়সড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের। রাজ্যের সামাজিক সুরক্ষা পেনশন প্রকল্পে আনা হলো বিপুল পরিবর্তন। এতদিন যে পেনশন ভাতায় মানুষ মাসে মাত্র…

Bihar Pension Hike

বিহারের রাজনীতিতে নির্বাচনের আগে বড়সড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের। রাজ্যের সামাজিক সুরক্ষা পেনশন প্রকল্পে আনা হলো বিপুল পরিবর্তন। এতদিন যে পেনশন ভাতায় মানুষ মাসে মাত্র ৪০০ টাকা করে পেতেন, সেই পরিমাণ এক ধাক্কায় বাড়িয়ে ১১০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘোষণা অনুযায়ী, রাজ্যের প্রবীণ নাগরিক, বিধবা মহিলা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি—এই প্রকল্পের আওতায় থাকা সকল উপভোক্তা এখন থেকে জুলাই মাস থেকে প্রতি মাসে ১১০০ টাকা করে পেনশন পাবেন।

৪০০ টাকা থেকে বেড়ে ১১০০টাকা

শনিবার মুখ্যমন্ত্রী এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ এক বিবৃতিতে লেখেন, “আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, বিহারের সামাজিক সুরক্ষা পেনশন প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রবীণ নাগরিক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা এখন থেকে মাসে ১১০০ টাকা করে পেনশন পাবেন। আগের ৪০০ টাকার জায়গায় এই নতুন পরিমাণ আগামী জুলাই থেকে কার্যকর হবে। প্রতি মাসের ১০ তারিখে এই টাকা প্রত্যেক উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে।”

   

নীতীশ কুমার আরও জানান, এই পেনশন বৃদ্ধির ফলে উপকৃত হবেন মোট ১ কোটি ৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ২৫৫ জন উপভোক্তা। সরকারের তরফে নিশ্চিত করা হবে যাতে এই অর্থ সময়মতো সরাসরি উপভোক্তার হাতে পৌঁছে যায়।

‌রাজনৈতিক গুরুত্ব Bihar Pension Hike

এই ঘোষণা যে শুধুই সামাজিক কল্যাণের উদ্দেশ্যে, তা নয়; রাজনৈতিকভাবে এর বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। বিহারে ২০২৫ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেই প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই ভোটপূর্ব প্রস্তুতির অংশ বলেই দেখছেন। বিশেষ করে সমাজের প্রান্তিক ও প্রবীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিজেপি-জেডিইউ জোটের জনপ্রিয়তা বজায় রাখতেই এই আর্থিক সহায়তা কার্যকরী হবে বলে মত বিশ্লেষকদের।

‌সরকারি স্তরে তৎপরতা

পেনশন বৃদ্ধির ঘোষণার পর দ্রুত তৎপর হয়েছে প্রশাসনিক স্তর। ইতিমধ্যেই অর্থ দপ্তর এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য, যাতে জুলাই মাস থেকে কোনও উপভোক্তা নতুন হারে পেনশন পেতে বাদ না যায়।

Advertisements

‌উপমুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া

এই সিদ্ধান্তের পর বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী সম্রাট চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন,
“আজকের দিনটা ঐতিহাসিক। নীতীশজির এই পদক্ষেপ সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক মানুষদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। বিধবা, প্রবীণ ও বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের আর্থিক স্বস্তি দিতে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।”

এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রায় সব ব্লকে এই প্রকল্পের উপভোক্তারা রয়েছেন, যাঁরা প্রত্যক্ষভাবে এই নতুন হারের সুবিধা পাবেন।

বিহারে সামাজিক সুরক্ষা পেনশন বহুদিন ধরেই রাজ্য সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রকল্প। কিন্তু এতদিন এই প্রকল্পে পেনশনের পরিমাণ এতটাই সামান্য ছিল যে অনেক ক্ষেত্রেই তা প্রকৃত আর্থিক সহায়তার বদলে নামমাত্র আনুকূল্য হিসেবেই গণ্য হতো। নতুন এই ঘোষণা সেই পরিস্থিতিতে এক বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে। দেখার বিষয়, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার কতটা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারে।