পটনা, ১৯ সেপ্টেম্বর: বিহারের (Bihar) রাজধানী পটনায় আজ হাজার হাজার বিপিএসসি (বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশন) প্রার্থী রাস্তায় নেমে এক বিশাল প্রতিবাদ করছে। তারা দাবি করেছে যে, ১.২ লক্ষ শিক্ষক পদের জন্য টিআরই-৪ (টিচার রিক্রুটমেন্ট এক্সামিনেশন)-এর বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে জারি করা হোক। যাতে বিধানসভা নির্বাচনের মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট (এমসিসি) কার্যকর হওয়ার আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
প্রতিবাদকারীরা পটনা কলেজের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিচ্ছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এই আন্দোলনের ফলে শহরে যানজট সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশকে ব্যাপক ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ছাত্র নেতা দিলীপ কুমারসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। তারা গান্ধী ময়দান থেকে মার্চ করে পাটনা কলেজে পৌঁছে ধরনা দিয়েছে।
প্রতিবাদকারীদের বক্তব্য, “বিহারে স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাব চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। সরকার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে টিআরই-৪-এ ১ লক্ষেরও বেশি পদের নিয়োগ হবে। কিন্তু এখন শিক্ষামন্ত্রী বলছেন মাত্র ২৬ হাজার পদ। এটা সরকারের তঞ্চকতা ছাড়া আর কিছু নয়।” মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার নিজে তার অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে টিআরই-৪-এ ১ লক্ষেরও বেশি পদের বিজ্ঞপ্তি আসবে।
কিন্তু এখনও কোনো অফিসিয়াল ঘোষণা নেই। প্রতিবাদকারীরা দাবি করছেন, নির্বাচনের এমসিসি কার্যকর হলে নিয়োগ প্রক্রিয়া থেমে যাবে, যা লক্ষ লক্ষ যোগ্য প্রার্থীর কর্মসংস্থানের স্বপ্নকে ধ্বংস করবে। বিহারে শিক্ষা ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে সংকটে রয়েছে। সরকারি স্কুলগুলিতে শিক্ষকের ঘাটতি প্রায় ৩ লক্ষেরও বেশি, যা লক্ষ লক্ষ শিশুর শিক্ষাকে প্রভাবিত করছে।
টিআরই-১ থেকে ৩ পর্যন্ত চলমান প্রক্রিয়ায় লক্ষ লক্ষ প্রার্থী অংশ নিয়েছে, কিন্তু টিআরই-৪-এর বিজ্ঞপ্তি বিলম্বিত হওয়ায় ছাত্ররা ক্ষুব্ধ। প্রতিবাদকারীরা বলছেন, “প্রাইমারি থেকে সেকেন্ডারি পর্যন্ত সব ক্লাসের জন্য ১.২ লক্ষ পদের নিয়োগ না হলে বিহারের শিক্ষা ব্যবস্থা আরও পিছিয়ে পড়বে। আমরা ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি চাই এবং সার্টিফিকেট ভেরিফিকেশন নির্বাচনের আগে সম্পন্ন করতে হবে।”
তারা আরও দাবি করেছেন যে, বিজ্ঞপ্তিতে প্রাইমারি টিচার (ক্লাস ১-৫), আপার প্রাইমারি (ক্লাস ৬-৮), সেকেন্ডারি (ক্লাস ৯-১০) এবং সিনিয়র সেকেন্ডারি (ক্লাস ১১-১২) পদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ভ্যাকেন্সি অন্তর্ভুক্ত করা হোক। প্রতিবাদের সময় পুলিশের সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। কিছু প্রতিবাদকারী পুলিশের লাঠি চার্জের শিকার হয়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে।
“কেউ আটকাতে পারে না!”, কংগ্রেস নেতার “থাপ্পড়” বয়ানে পাল্টা তোপ কঙ্গনার
প্রতিবাদকারীদের দাবি, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ণা দিচ্ছি, কিন্তু পুলিশ অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করছে। সরকার আমাদের দাবি শুনুক, না হলে আন্দোলন জোরদার করব।” পুলিশ জানিয়েছে, শান্তি বজায় রাখার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা এখনও কোনো অফিসিয়াল বক্তব্য দেননি, তবে সূত্র বলছে যে বিজ্ঞপ্তি সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে জারি হতে পারে। বিপিএসসি-এর ওয়েবসাইটে এখনও কোনো আপডেট নেই।