বিহার: বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোটের আগে রাজনৈতিক হাওয়ায় নতুন আলোড়ন ফেললেন রাজ্যের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব (Tejashwi Yadav)। বুধবার রাঘোপুর বিধানসভা আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তিনি তাঁর সম্পত্তি সম্পর্কিত হলফনামা দাখিল করেন। ওই নথি অনুযায়ী, তেজস্বী যাদবের মোট সম্পত্তির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮.১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬.১২ কোটি টাকার চলমান সম্পত্তি এবং ১.৮৮ কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে তাঁর নামে।
হলফনামায় প্রকাশ, তেজস্বীর স্ত্রী রাজশ্রী ওরফে র্যাচেল আইরিস গডিনহোর নামেও রয়েছে প্রায় ১.৮৮ কোটি টাকার সম্পত্তি। রাজশ্রীর কাছে ৪৮০ গ্রাম সোনা এবং ২ কেজি রুপো রয়েছে বলে উল্লেখ আছে। অন্যদিকে, তেজস্বী যাদবের নিজের কাছে রয়েছে ২০০ গ্রাম সোনা এবং হাতে নগদ ১.৫ লক্ষ টাকা। তাঁর স্ত্রীর হাতে নগদ ১ লক্ষ টাকা রয়েছে বলে হলফনামায় বলা হয়েছে।
তেজস্বী যাদবের নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং প্রায় ৫৫.৫৫ লক্ষ টাকার দায়ও রয়েছে। এই দায়গুলির বেশিরভাগই যৌথ ঋণ, যা তিনি তাঁর বড় ভাই তেজ প্রতাপ যাদব ও মা রাবড়ি দেবীর সঙ্গে নিয়েছেন। সরকারি বকেয়া হিসেবেও প্রায় ১.৩৫ কোটি টাকার দেনা আছে বলে ওই নথিতে উল্লেখ।
অন্যদিকে, রাজশ্রীর নামে কোনো দায় বা বকেয়া নেই। তিনি একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মালিক, তবে কোনো ঋণ বা দায় তাঁর নেই।
তেজস্বী যাদব বর্তমানে রাঘোপুর আসনের বিধায়ক এবং ২০১৫ সালে প্রথমবার এই আসন থেকে জয়ী হন। ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয়বার জয়লাভ করেন। এবারে তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রার্থী, অর্থাৎ হ্যাটট্রিকের লক্ষ্যে ময়দানে নেমেছেন। রাঘোপুর আসনে প্রথম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৬ নভেম্বর।
তেজস্বীর দল আরজেডি (রাষ্ট্রীয় জনতা দল) ইন্ডিয়া (INDIA) জোটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যারা বিজেপি ও জেডিইউ নেতৃত্বাধীন এনডিএর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। নির্বাচনী প্রচারে ইতিমধ্যেই আরজেডি শিবিরে তেজস্বীর নেতৃত্বে উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তেজস্বী যাদবের হলফনামা প্রকাশের পর রাজনৈতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিরোধীরা তাঁর সম্পত্তি বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন তুলেছে। তবে আরজেডি পক্ষ দাবি করেছে, সমস্ত তথ্য স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করা হয়েছে এবং কিছুই গোপন নয়।
তেজস্বী নিজে বলেছেন, “আমি স্বচ্ছ রাজনীতিতে বিশ্বাসী। জনগণের কাছে নিজের সম্পত্তি ও আর্থিক অবস্থার বিবরণ দেওয়া আমার দায়িত্ব।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমার লক্ষ্য রাজ্যের উন্নয়ন ও নতুন প্রজন্মের ভবিষ্যৎ গঠন।”