মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের নোটিশে চাপে ১৫ দল

বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (Chief Electoral Officer) ১৫টি নিবন্ধিত কিন্তু অ-স্বীকৃত রাজনৈতিক দলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন, যারা ২০১৯ সাল থেকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ…

Chief Electoral Officer

বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (Chief Electoral Officer) ১৫টি নিবন্ধিত কিন্তু অ-স্বীকৃত রাজনৈতিক দলকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন, যারা ২০১৯ সাল থেকে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। এই দলগুলিকে ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এর মধ্যে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিহার সিইও-এর অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের ৫৬/২০২৫/পিপিএস-তৃতীয় নম্বর নির্দেশিকা, ১১ আগস্ট, ২০২৫ অনুযায়ী, নিবন্ধিত অ-স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ভারতীয় আওয়াম অ্যাক্টিভিস্ট পার্টি, ভারতীয় জাগরণ পার্টি, ভারতীয় যুব জনশক্তি পার্টি, একতা বিকাশ মহাসভা পার্টি, গরিব জনতা দল (সেকুলার), জয় জনতা পার্টি, জনতা দল হিন্দুস্তানি, লোকতান্ত্রিক জনতা পার্টি।

   

এছাড়াও রয়েছে  মিথিলাঞ্চল বিকাশ মোর্চা, রাষ্ট্রবাদী যুব পার্টি, রাষ্ট্রীয় সদ্ভাবনা পার্টি, রাষ্ট্রীয় সদাবহার পার্টি, বসুধৈব কুটুম্বকম পার্টি, বসুন্ধরা জন বিকাশ দল এবং ইয়ং ইন্ডিয়া পার্টি।নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এই দলগুলি গত ছয় বছর ধরে কোনো নির্বাচনে অংশ নেয়নি এবং তাদের নিবন্ধিত ঠিকানাও সঠিক পাওয়া যায়নি।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫১-এর ধারা ২৯এ অনুযায়ী, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধনের পর পাঁচ বছরের মধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে হয়। যদি কোনো দল টানা ছয় বছর কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়, তবে তাদের নিবন্ধন বাতিল করা যেতে পারে।

এর আগে, নির্বাচন কমিশন বিহারের ১৭টি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করেছে, কারণ তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি এবং তাদের ঠিকানা যাচাইয়ে ব্যর্থ হয়েছিল। এই নতুন নোটিশের মাধ্যমে আরও ১৫টি দলের উপর শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে।

সিইও অফিসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই দলগুলিকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য শেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যদি তারা সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের নিবন্ধন বাতিল করা হতে পারে।”

এই দলগুলিকে তাদের সভাপতি বা মহাসচিবের শপথপত্র এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া, তাদের নিজেদের পক্ষে উপস্থিত হয়ে ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নেওয়ার সুযোগও দেওয়া হয়েছে।

Advertisements

এই পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের সেই প্রচেষ্টার অংশ, যার মাধ্যমে কেবলমাত্র কাগজে-কলমে বিদ্যমান এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশ না নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এর আগে, নির্বাচন কমিশন জাতীয়ভাবে ৩৩৪টি অ-স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করেছে, যার মধ্যে বিহারের ১৭টি দলও ছিল। এই দলগুলির নির্বাচনী কার্যকলাপ এবং ঠিকানা যাচাইয়ে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

এই নোটিশ জারির পটভূমিতে বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি তীব্রতর হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বর্তমানে বিহারে বিশেষ গভীর পুনরীক্ষণ (এসআইআর) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

যার মধ্যে ২২ লক্ষ মৃত, ৩৬ লক্ষ স্থানান্তরিত বা যোগাযোগের বাইরে এবং ৭ লক্ষের নাম একাধিক কেন্দ্রে পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে বিবাদ চলছে, এবং কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে যে কোনো যোগ্য ভোটারের নাম বিনা নোটিশে বা শুনানি ছাড়া বাদ দেওয়া যাবে না।

বিহারের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে এই নোটিশ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু বিরোধী নেতা এই পদক্ষেপকে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার প্রমাণ হিসেবে দেখছেন, অন্যরা মনে করছেন যে এটি ছোট দলগুলির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এক্স-এ এই বিষয়ে আলোচনা চলছে, যেখানে কেউ কেউ এই পদক্ষেপকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।

খানিক স্বস্তিতে ‘যোগ্য’রা! রাজ্য চাইলে পিছোতে পারে এসএসসি, জানাল সুপ্রিম কোর্ট

তবে, এই দলগুলির ভবিষ্যৎ এখন তাদের জবাব এবং নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।এই নোটিশের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায়। যদি এই দলগুলি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হয়, তবে তাদের নিবন্ধন বাতিল হতে পারে, যা বিহারের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।