‘ছট শুধু বিহারের নয়, এখন বিশ্ব‑উৎসব’ ঘোষণা মোদির

Bihar Celebrates Global Ambitions as Modi Pushes Chhath for UNESCO

মুজফফরপুর, বিহার — ছট মহাপর্বের পর মুজফফরপুরে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র (মোদি PM MODI) এক বড় ঘোষণা করলেন। তিনি জানালেন যে, তাঁর সরকার বিহারের এই প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী উৎসবকে ইউনেস্কো ইন্ট্যাঙ্গিবল কালচারাল হেরিটেজ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তিনি আরও বলেন যে, এই স্বীকৃতি কেবল বিহারের জন্য নয়, বরং ভারতের সমগ্র সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য গর্বের বিষয় হবে।

Advertisements

প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন, “আমাদের সরকার ক্রমাগত চেষ্টা করছে যাতে আমাদের ছট মহাপর্বের নাম ইউনেস্কো তালিকায় নিবন্ধিত হয়। এটি আমাদের সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিকে আরও সুদৃঢ় করবে এবং দেশের গৌরব বৃদ্ধি করবে।”

   

তিনি আরও ঘোষণা করেন যে, দেশের যুব সমাজকে উৎসবের সাথে আরও নিবদ্ধ করার জন্য একটি জাতীয় স্তরের ছট ভক্তিমূলক গান প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যুবসমাজকে উৎসবের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে এবং দেশব্যাপী ছট মহাপর্বের প্রচার-প্রসার বাড়ানো হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই যে দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছট মহাপর্ব উদযাপিত হোক, আর এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সেই লক্ষ্য পূরণ হবে।”

এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিশেষ আকর্ষণ ছিল তার আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও প্রেরণা নিয়ে কথা বলা। তিনি জানিয়েছেন যে, ছট মহাপর্ব বর্তমানে শুধু ভারতের মধ্যে নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও উদযাপিত হচ্ছে। এমনকি বিদেশি নাগরিক এবং নাগাল্যান্ডের এক নারীও ভক্তিমূলক ছট গান খুব আবেগভরে গেয়েছেন, যা তাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, “দেখতে খুব আনন্দ হয় যে, ছট মহাপর্ব কেবল আমাদের দেশেই নয়, বিদেশেও এতটা ভালোভাবে গ্রহণযোগ্য। এটি আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বিশ্বজনীন প্রভাবকে প্রমাণ করে।”

যদিও মুজফফরপুরে জনসভা চলাকালীন বৃষ্টি হয়েছিল, তবুও হাজার হাজার মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে শুনতে উপস্থিত ছিলেন। এটি ছিল ছট মহাপর্ব শেষ হওয়ার পর তার প্রথম জনসভা। এই জনসভা প্রমাণ করলো যে, এই উৎসব শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতীক হিসেবে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে।

Advertisements

ছট মহাপর্ব মূলত সূর্য ভক্তির একটি উৎসব। বিহার, উত্তর প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন অংশে উদযাপিত এই উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে সূর্য দেবতাকে নেনমনে আরাধনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি তার ভাষণে বললেন, “ছট মহাপর্ব আমাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনের সাথে সম্পৃক্ত, এটি আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষিত রাখে। এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের সন্তানদের মধ্যে সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ প্রবাহিত করতে পারি।”

পরিশেষে, প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগ শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক ঘোষণা নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক বার্তা যে ছট মহাপর্ব ভারতের ঐতিহ্য ও বিশ্বসংস্কৃতির সঙ্গে সংযুক্ত।** ইউনেস্কোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলে ছট মহাপর্ব কেবল স্থানীয় উৎসব হিসেবে নয়, বরং বিশ্বজনীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে পরিগণিত হবে।