Bhupesh Baghel: ইডির তল্লাশি অভিযানে ‘প্রাক্তন’ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে টাকার পাহাড়!

ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের বাড়িতে সম্প্রতি চালানো ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) এর তল্লাশি অভিযান চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে। গত সোমবার ইডি এর তদন্তকারী দল ছত্তিশগড়ের…

From Tollywood to Politics — Actress Summoned by ED

ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলের বাড়িতে সম্প্রতি চালানো ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) এর তল্লাশি অভিযান চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে। গত সোমবার ইডি এর তদন্তকারী দল ছত্তিশগড়ের দুর্গ জেলার ১৪টি জায়গায় অভিযান চালায়, যার মধ্যে ছিল ভূপেশ বাঘেল এবং তাঁর ছেলে চৈতন্য বাঘেলের বাড়িও। তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা নগদ এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

Advertisements

এই তল্লাশি অভিযান আবগারি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আর্থিক তছরুপ মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়েছিল। ইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ছত্তিশগড়ে আবগারি ক্ষেত্রে ২১০০ কোটি টাকারও বেশি অর্থের তছরুপ হয়েছে। সেই টাকা যারা আবগারি চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তারা নিজেদের পকেটে ভরেছেন। এই দুর্নীতির পেছনে রাজ্যের একাধিক রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী জড়িত আছেন, যার মধ্যে ভূপেশ বাঘেল ও তাঁর ছেলে চৈতন্যও রয়েছেন বলে সন্দেহ করছে ইডি।

বিজ্ঞাপন

ভূপেশ বাঘেলের বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চলার পর ইডি আধিকারিকরা সেখানে প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করেন। নগদ টাকার পাশাপাশি, তারা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং কাগজপত্রও উদ্ধার করেছেন, যা এই দুর্নীতির পেছনের চেহারা উন্মোচন করতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ছত্তিশগড়ের বেশ কিছু ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তা এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছে, এবং ইডি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই দুর্নীতির মূল অঙ্কের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, আবগারি চক্রের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও নেতারা অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। দুর্নীতির এই বিস্তারটি ২০১৯ সাল থেকে ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর মধ্যে বহু সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতার নাম জড়িত। ভূপেশ বাঘেলও এই দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন, যা তদন্তের পর আরো স্পষ্ট হবে।

ইডি বিশেষজ্ঞরা জানান, এই ধরনের তছরুপ থেকে রাজ্যের অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পরিষেবা ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জন্য বরাদ্দ অর্থ থেকে প্রায় ২১০০ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের স্বার্থের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

ছত্তিশগড়ের রাজনীতিতে এই তল্লাশি অভিযান ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যদিও ভূপেশ বাঘেল এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি, তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের মতে, এই অভিযানে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে। একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, বাঘেল সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হচ্ছে। তারা বলেন, বিরোধী পক্ষ এই মামলাকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে, যাতে সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ফায়দা তোলা যায়।

অন্যদিকে, বিজেপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলের নেতারা এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুতর হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং দাবি করেছেন যে ভূপেশ বাঘেল এই দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত থাকলে তাঁকে শাস্তি দেওয়া উচিত।

ভূপেশ বাঘেল ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ইডি অভিযান আরও কিছুদিন রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। এই দুর্নীতির তদন্তের ফলে আরও কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। রাজ্যের জনগণ এবং রাজনৈতিক মহল এখন অপেক্ষা করছে, তদন্তের ফলাফল কীভাবে পরিবর্তিত হবে এবং এই ব্যাপারে সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে।