পঞ্জাবে অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি উদ্বোধন ভগবন্ত কেজরির

পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান (Bhagwant Mann)এবং আম আদমি পার্টির (এএপি) জাতীয় সমন্বয়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল শুক্রবার তরনতারন জেলা থেকে একটি অত্যাধুনিক অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি উদ্বোধন করেছেন। এই…

Bhagwant Mann inauguration

পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান (Bhagwant Mann)এবং আম আদমি পার্টির (এএপি) জাতীয় সমন্বয়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল শুক্রবার তরনতারন জেলা থেকে একটি অত্যাধুনিক অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি উদ্বোধন করেছেন। এই প্রযুক্তি সীমান্তের মাধ্যমে মাদক ও অস্ত্র পাচারের বিরুদ্ধে ‘দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা রেখা’ হিসেবে কাজ করবে।

৫১.৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম পঞ্জাব পুলিশকে আরও শক্তিশালী করবে এবং সীমান্ত পেরিয়ে আসা অবৈধ কার্যকলাপের উপর কড়া নজরদারি নিশ্চিত করবে। এই উদ্যোগকে পঞ্জাবের ‘যুদ্ধ নশে বিরুদ্ধ’ প্রচারণার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

   

অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য

এই অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেমে তিনটি হাই-টেক যানবাহনে মাউন্ট করা ড্রোন প্রতিরোধ ইউনিট রয়েছে, যার প্রতিটির কার্যকরী পরিসীমা ৮ কিলোমিটার। পঞ্জাব সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভবিষ্যতে এই ধরনের আরও ৯টি ইউনিট স্থাপন করা হবে। এই প্রযুক্তি ড্রোনের মাধ্যমে সীমান্ত পেরিয়ে আসা মাদকদ্রব্য, অস্ত্র এবং অন্যান্য অবৈধ সামগ্রী পাচার রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।

অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, “পঞ্জাব সরকার আজ থেকে অ্যান্টি-ড্রোন গান ব্যবহার শুরু করছে। এটি সীমান্ত পেরিয়ে আসা অস্ত্র ও মাদক পাচারের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে।”

মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান জানিয়েছেন, “আমরা পঞ্জাব পুলিশকে আরও শক্তিশালী করছি। এই অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি সীমান্ত সুরক্ষায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।” তিনি আরও বলেন, এই সিস্টেম পঞ্জাবকে মাদক ও অপরাধমুক্ত করার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তরনতারন থেকে এই প্রযুক্তি উদ্বোধনের সময় তিনি জানান, এটি পঞ্জাবের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা তৈরি করবে।

পঞ্জাবে মাদক ও অস্ত্র পাচারের সমস্যা

পঞ্জাব একটি সীমান্তবর্তী রাজ্য হওয়ায় পাকিস্তান সীমান্ত দিয়ে মাদক ও অস্ত্র পাচার একটি গুরুতর সমস্যা। ড্রোনের মাধ্যমে এই অবৈধ কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় পঞ্জাব পুলিশের উপর চাপ বেড়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, সীমান্ত পেরিয়ে ড্রোনের মাধ্যমে মাদক ও অস্ত্র পাচারের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি এই সমস্যার বিরুদ্ধে একটি কার্যকর সমাধান হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এএপি পঞ্জাব তাদের অফিসিয়াল এক্স পোস্টে জানিয়েছে, এই সিস্টেমটি ৫১.৫ কোটি টাকার বিনিয়োগে তৈরি করা হয়েছে এবং এটি সীমান্ত পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।

রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক তাৎপর্য

এই উদ্যোগ পঞ্জাবে এএপি সরকারের মাদকবিরোধী অভিযানের একটি অংশ। ভগবন্ত মানের নেতৃত্বে পঞ্জাব সরকার মাদক ও অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল এই উদ্বোধনের সময় বলেন, “পঞ্জাবের মানুষের জন্য আমরা একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ রাজ্য গড়তে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

Advertisements

এই প্রযুক্তি সীমান্ত পাচারের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হবে।” তিনি পাঞ্জাব পুলিশের প্রশংসা করে বলেন, এই নতুন প্রযুক্তি তাদের কাজকে আরও দক্ষ করে তুলবে।এই অভিযানে পঞ্জাব সরকারের ‘যুদ্ধ নশে বিরুদ্ধ’ প্রচারণার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মান বলেন, “আমরা পাঞ্জাবকে মাদকমুক্ত করতে বদ্ধপরিকর।

এই অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম আমাদের এই লড়াইয়ে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।” তিনি আরও জানান, এই প্রযুক্তি শুধুমাত্র সীমান্ত এলাকায় নয়, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করবে।

পুলিশ লাঠিচার্জে উত্তাল পার্ক স্ট্রিট, রাস্তায় বসলেন শুভেন্দু

জনগণের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা

এই অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির উদ্বোধনকে পাঞ্জাবের জনগণ সাধুবাদ জানিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা রণজিৎ সিং বলেন, “এই প্রযুক্তি আমাদের রাজ্যের নিরাপত্তা বাড়াবে। মাদক পাচারের কারণে আমাদের যুব সমাজ ধ্বংস হচ্ছিল। এই পদক্ষেপ আমাদের জন্য আশার আলো।” তবে, কিছু বিরোধী দলের নেতারা এই উদ্যোগকে ‘প্রচারমূলক’ বলে সমালোচনা করেছেন। তারা দাবি করেছেন, সরকারের উচিত পাচারের মূল কারণগুলি নির্মূল করা।

পঞ্জাবে অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির উদ্বোধন সীমান্ত নিরাপত্তা ও মাদকবিরোধী অভিযানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভগবন্ত মান ও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নেতৃত্বে এএপি সরকার এই উদ্যোগের মাধ্যমে পাঞ্জাবের নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই প্রযুক্তি সীমান্ত পাচার রোধে কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলবে। তবে, এটি পাঞ্জাব পুলিশ ও রাজ্য সরকারের প্রচেষ্টার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।