গোপন ক্যামেরায় ভিডিও তুলে যৌন শোষণ, মামলা স্বামীর বিরুদ্ধে

বেঙ্গালুরু: সম্পর্কের নামে প্রতারণা ও নারীর প্রতি চরম নির্যাতনের এক ভয়ঙ্কর ঘটনা প্রকাশ্যে এল বেঙ্গালুরু থেকে। এক বিবাহিত মহিলার দায়ের করা অভিযোগে উঠে এসেছে শিহরণ…

Hidden-Camera

বেঙ্গালুরু: সম্পর্কের নামে প্রতারণা ও নারীর প্রতি চরম নির্যাতনের এক ভয়ঙ্কর ঘটনা প্রকাশ্যে এল বেঙ্গালুরু থেকে। এক বিবাহিত মহিলার দায়ের করা অভিযোগে উঠে এসেছে শিহরণ জাগানো তথ্য। অভিযোগ অনুযায়ী, স্বামী গোপনে শোবার ঘরে ক্যামেরা বসিয়ে (Hidden camera scandal) তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্ত ভিডিও করে ব্ল্যাকমেল করত এবং সেই ভিডিওর জেরে স্ত্রীকে বিদেশে থাকা নিজের ক্লায়েন্টদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করত।

Advertisements

পুট্টেনাহল্লি থানায় দায়ের হওয়া এই অভিযোগপত্রে মহিলা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত স্বামী সইদ ইনামুল হক তাঁর অজান্তে ঘরে গোপন ক্যামেরা বসিয়ে রেখেছিল। মহিলার অভিযোগ, “আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের ছবি ও ভিডিও সে আমার অনুমতি ছাড়াই রেকর্ড করত এবং তার বন্ধু ও ব্যবসায়িক সহকর্মীদের কাছে পাঠাত।”

   

শুধু তাই নয়, সেই ভিডিও ফাঁসের হুমকি দিয়ে তাঁকে চাপ দিত এমন কিছু করতে, যা তিনি করতে চাননি। অভিযোগে বলা হয়েছে, “সে আমাকে বলেছিল বিদেশে থাকা তার ক্লায়েন্টদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে। যদি আমি না মানি, তবে সমস্ত ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিত।”

মহিলা আরও অভিযোগ করেন যে, সইদ তাঁকে বিয়ে করার সময় জানায়নি যে সে আগেই বিবাহিত। প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করার পাশাপাশি সে নিয়মিত শারীরিক নির্যাতন ও মারধরও করত। মানসিক ও শারীরিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ে অবশেষে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন।

এই ভয়ঙ্কর অভিযোগের ভিত্তিতে পুট্টেনাহল্লি থানার পুলিশ অভিযুক্ত সইদ ইনামুল হক ও আরও তিনজনকে ষড়যন্ত্র, প্রতারণা, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগে এফআইআর করেছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, “আমরা বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। ডিজিটাল প্রমাণ ও ভিডিও সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের কোনও ভাবেই ছাড়া হবে না।”

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর সমাজে প্রবল প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কেবল গার্হস্থ্য নির্যাতন নয়, বরং এটি তথ্যপ্রযুক্তি আইন, যৌন অপরাধ প্রতিরোধ আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় গুরুতর অপরাধ। নারীর গোপনীয়তা লঙ্ঘন এবং ব্ল্যাকমেল করে যৌন শোষণের মতো ঘটনা সমাজে নারীর নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে।

বর্তমানে ভুক্তভোগী মহিলা নিরাপদ স্থানে রয়েছেন এবং পুলিশ তাঁকে প্রয়োজনীয় আইনি সহায়তা ও মানসিক সহায়তা প্রদান করেছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তল্লাশি চলছে এবং খুব শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করল প্রযুক্তির অপব্যবহার ও বিশ্বাসভঙ্গের ফলে নারীরা কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন। সম্পর্কের নামে প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেল আজকের সমাজে এক নতুন অপরাধের রূপ নিচ্ছে, যার বিরুদ্ধে আইনি সচেতনতা ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া সময়ের দাবি।