ভারতীয় উপমহাদেশে প্রতি বছরই মৌসুমি ঝড় ও সাইক্লোনের (Cyclone Fengal)কারণে বিভিন্ন রাজ্য বিপদজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়। সম্প্রতি, সাইক্লোন ফেংগাল,(Cyclone Fengal) যা ভারত মহাসাগর থেকে উত্থিত হয়েছে, দক্ষিণ ভারত ও উপকূলবর্তী এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টি ও প্রবল বাতাসের সৃষ্টি করেছে।
এর প্রভাব পড়েছে কর্ণাটক রাজ্যের কিছু জেলা, বিশেষত মান্দ্যা, মাইসুরু, কোদল, চামরাজনগর এবং চিক্কাবল্লাপুর জেলায়। আবহাওয়া অধিদপ্তর (IMD) সাইক্লোনটির (Cyclone Fengal)পূর্বাভাস দিয়ে এসব এলাকার জন্য হলুদ এবং কমলা সতর্কতা জারি করেছে।
দীর্ঘকাল ধরে চলা অবিরাম বৃষ্টির কারণে (Cyclone Fengal) রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে প্লাবন এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আবহাওয়ার সতর্কতা এবং ভারী বৃষ্টির কারণে, কর্ণাটকের মান্দ্যা জেলা প্রশাসন গত ২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে স্কুল এবং কলেজগুলোর জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে।
এদিনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক, মান্দ্যা (DC Mandya) জানিয়েছেন, “মান্দ্যা জেলার মধ্যে অবিরাম বৃষ্টির কারণে এবং IMD এর পূর্বাভাস অনুসারে আজ (২ ডিসেম্বর) ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা থাকায়, সকল স্কুল ও কলেজ (PU পর্যন্ত) বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তিনি আরও জানান, “ছুটির দিনটি পূর্ণ করতে আগামী শনিবার পুরো দিন ক্লাস চলবে।”
এছাড়া, কোলার, চামরাজনগর, মাইসুরু, চিক্কাবল্লাপুর এবং মান্দ্যা জেলার স্কুলগুলোর জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মূল কারণ ছিল শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কারণ প্রবল বৃষ্টির কারণে তাদের চলাফেরা এবং বিদ্যালয়ে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর বিভিন্ন জেলা ও অঞ্চলে সতর্কতা জারি করেছে। বেঙ্গালুরু শহরসহ বেঙ্গালুরু শহরাঞ্চল, কোলার, চিক্কাবল্লাপুর, রামনগর, দক্ষিণ কন্নড় এবং উদুপি জেলা গুলির জন্য হলুদ সতর্কতা (Yellow Alert) জারি করা হয়েছে। এর মানে হল যে, সেখানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং সাধারণ নাগরিকদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। একই সময়ে, কদগু, মাইসুরু, চামরাজনগর, মান্দ্যা, হাসান, চিক্কামগালুরু এবং শিবমোগা জেলার জন্য কমলা সতর্কতা (Orange Alert) জারি করা হয়েছে, যা নির্দেশ করে যে সেখানে আরো বেশি তীব্র বৃষ্টিপাত হতে পারে এবং বাসিন্দাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে।
বেঙ্গালুরু শহরের স্কুলগুলোর বিষয়েও খবর পাওয়া গেছে যে, আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে কিছু স্কুলে ক্লাসগুলি বিলম্বিত হতে পারে বা দিনের শেষে সমাপ্তি হতে পারে। তবে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে তারা ছাত্রদের সুবিধার্থে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং ছুটি দেওয়া হলে ক্লাসের সময় বৃদ্ধি করে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। বেঙ্গালুরুর স্কুলগুলোর বেশিরভাগই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সচেতন করে দিয়েছে যাতে তারা স্কুলে না আসার ক্ষেত্রে ফোন বা ই-মেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখেন।
এদিকে, জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের (NCR) স্কুলগুলোর জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুযায়ী, সেখানকার স্কুলগুলো হাইব্রিড মোডে চলবে। এর অর্থ হলো, স্কুলগুলো শারীরিকভাবে এবং অনলাইনে দুটো মাধ্যমেই পাঠদান করবে, যেন বায়ু দূষণের কারণে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে কোনো অসুবিধা না হয়। এই সিদ্ধান্তটি বেশ কিছুদিন ধরে চলমান ছিল, এবং ভারী বৃষ্টি বা সাইক্লোনের সময় এই ধরনের ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ হতে পারে।